এলাকার প্রায় ১৭টি জায়গায় ট্রান্সফর্মার বিকল হওয়ায় বিপাকে পড়েছেন পূর্বস্থলী ১ ব্লকের কয়েক হাজার মানুষ। তাঁদের অভিযোগ, দিনের পর দিন বিদ্যুৎ সংযোগ না থাকায় যেমন অসুবিধা হচ্ছে পড়ুয়াদের, তেমনই ব্যাহত হচ্ছে চাষের কাজ। দ্রুত ট্রান্সফর্মার ঠিক করা না হলে মার খাবে সেচের কাজও।
বিদ্যুৎ দফতর সূত্রে খবর, পূর্বস্থলী ১ ব্লকের সমুদ্রগড় এলাকায় তাদের ক্রেতা সুরক্ষা কেন্দ্রের অধীন ১৭টি জায়গায় ট্রান্সফর্মার মাস তিনেক ধরে বিকল। সেগুলির মধ্যে রয়েছে একটি ১০০ কেভি, পাঁচটি ৬৩ কেভি, পাঁচটি ২৫ কেভি ও ছ’টি ১০ কেভি ক্ষমতাসম্পন্ন ট্রান্সফর্মার। রবিবার শ্রীরামপুর এলাকার পাবনাপাড়ায় নষ্ট হয়ে গিয়েছে একটি ১০০ কেভি-র ট্রান্সফর্মার। ফলে বহু বাড়িতে যেমন বিদ্যুৎ নেই, তেমনই আমনের মরসুমে অকেজো হয়ে পড়েছে একটি নদী সেচ প্রকল্প ও একটি গভীর নলকূপ। উৎপাদন বন্ধ রয়েছে একটি কাগজ কলেও। |
স্থানীয় সূত্রে খবর, বিকল ট্রান্সফর্মারের কারণে সব থেকে বেশি দুর্ভোগে পড়েছেন পারদুপসা গ্রামের বাসিন্দারা। বিদ্যুৎ পরিষেবা ব্যাহত হওয়ায় রমজান মাসে বিপাকে পড়েছেন বহু বাসিন্দা। গ্রামবাসীদের দাবি, বারবার বিদ্যুৎ দফতরে অভিযোগ জানিয়েও কোনও লাভ হয়নি। এ ছাড়া অর্জুনপুকুর, মোদাফপর গ্রাম, কালীনগর গ্রাম ও পাশে নদিয়ার মাঝেরচড়া গ্রামেও ৬৩ কেভি ক্ষমতাসম্পন্ন ট্রান্সফর্মার বিকল। অর্জুনপুরে নদী সেচ প্রকল্পের কাজ ব্যাহত হচ্ছে। সমস্যায় পড়েছে কালীনগরের কাগজকলও। সেচ প্রকল্পের কাজ ব্যাহত হওয়ায় ফসল বাঁচাতে বিপাকে চাষিরা। সিরাজ শেখ নামে এর সব্জি চাষির বক্তব্য, “এই সময়ে সব্জি ও ধানের খেতে প্রচুর জল লাগে। এ বার বৃষ্টি কম। ট্রান্সফর্মারটি তাড়াতাড়ি ঠিক না হলে চাষ মার খাবে।”
মড়ুইডাঙা, জাবারগ্রাম, জিউলগড়িয়া, জালুইডাঙার পাশাপাশি অর্জুনপুকুর গ্রামে নষ্ট হয়েছে পাঁচটি ২৫ কেভি ক্ষমতাসম্পন্ন ট্রান্সফর্মার। দশটি ২৫ কেভি-র ট্রান্সফর্মার নষ্ট হয়েছে হাটসিমলা ধূলার রাস্তা, নিউরা, সিংহজুলি পূর্বপাড়া, পশ্চিমপাড়া, হেমায়েতপুর মুসলিমপাড়া ও সমুদ্রগড় সার্ভিস কো-অপারেটিভে। গ্রামবাসীদের দাবি, বিদ্যুৎ সংযোগ না থাকায় অসুবিধা হচ্ছে পড়ুয়াদের। বেশ কিছু তাঁত কারখানাতেও বিদ্যুতের অভাবে উৎপাদন বন্ধ। গত শুক্রবার নদিয়ার মাঝেরচড়া এলাকার দুই যুবক বিদ্যুৎ কার্যালয়ে ভাঙচুর চালান বলেও অভিযোগ। বিদ্যুৎ বণ্টন সংস্থার কালনা শাখার ডিভিশনাল ইঞ্জিনিয়ার চঞ্চল বিশ্বাস বলেন, “বেশ কিছু জায়গায় সমস্যা রয়েছে। সমুদ্রগড় এলাকায় নষ্ট হওয়া ট্রান্সফর্মারগুলি ঠিক করার জন্য দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে। আশা করি, শীঘ্র সমস্যার সমাধান হবে।” সংস্থার সমুদ্রগড় ক্রেতা সুরক্ষা কেন্দ্রের তরফে জানানো হয়েছে, এলাকার বেশ কিছু গ্রামে জনসংখ্যা বাড়ায় ট্রান্সফর্মারের ক্ষমতাবৃদ্ধির প্রয়োজন হয়ে পড়েছে। সম্প্রতি ৬টি ট্রান্সফর্মারের ক্ষমতাবৃদ্ধির জন্য ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে আবেদন জানানো হয়েছে। এর মধ্যে সমুদ্রগড়ের কলাবাগান-সহ তিনটি জায়গায় তার অনুমোদন মিলেছে। |