ধোনি আচমকা ছেলের হাতে বলটা তুলে দিতে রীতিমতো চমকে গিয়েছিলেন ওঁরা দু’জন।
ছেলে ভাল ব্যাট করে, জানেন। ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিরুদ্ধে শেষ ওয়ান ডে ম্যাচে সেঞ্চুরি আছে। আইপিএল ফাইনালে কেকেআরকে জিতিয়েছেন শেষ ওভারে কিন্তু সে সব প্রত্যাশিত। তা বলে বোলিং? বাংলার হয়েই নিয়মিত বল করেন না। আর আদরের ‘মন্নি’-কে কি না বল করতে হবে মাহেলা জয়বর্ধনে, অ্যাঞ্জেলো ম্যাথেউজদের? শ্যামশঙ্কর ও বীণা তিওয়ারির বুঝতে একটু সময় লেগেছিল ব্যাপারটা ঠিক কী হচ্ছে।
ভাগ্য ভাল তাঁদের, শহর জুড়ে যে বিদ্যুৎ বিপর্যয় চলছিল, তার শিকার হতে হয়নি। বোলার মনোজের অসাধারণ কৃতিত্ব তাই দেখতে পেলেন টিভি-তে। “আমার তো মনে হয়, মনোজের একটা পরীক্ষা নিচ্ছিল ধোনি। নতুন পরীক্ষা। আর আমার ছেলে তাতে লেটার পেয়েছে,” মঙ্গলবার সন্ধেয় বাড়ির ড্রইংরুমে বসে বলছিলেন বীণা। পরিচয় নতুন করে আর দেওয়ার নেই। ইনি, মনোজ তিওয়ারির মা। এবং বোলিংয়ে ছেলে ‘লেটার’ পেয়েছে, এ কথা তিনি বলতেই পারেন। |
টিভিতে চোখ মনোজের বাবা-মার। মঙ্গলবার। ছবি: শঙ্কর নাগ দাস |
লেগ স্পিনে ম্যাথেউজ সহ চার-চারটে উইকেট তো আর মুখের কথা নয়। মনোজ ব্যাটিংয়ে ব্যর্থ হলেও তাই বাবা শ্যামশঙ্করের মুখে প্রাপ্তির ছবি। ধরা গলায় বলে দেন, “কপাল ছাড়া আর কী বলব? এত দিন বসে রইল। অথচ ও কারও চেয়ে কম যায় না।”
তিওয়ারি পরিবারের কাছে আগাম কোনও খবর ছিল না মনোজ খেলবেন বলে। গত রাতে দাদা রাজকুমার তিওয়ারির সঙ্গে কথাবার্তায় এটুকু শুধু বলেছিলেন যে, সিরিজের একটা ম্যাচে অন্তত সুযোগ পাবেন। এবং ভাইয়ের বোলিং দেখে রাজকুমারের প্রশ্ন, “রাহুল শর্মার চেয়ে খুব খারাপ কিছু করল কি? রাহুল যে টার্নগুলো পায়, সেগুলো মনোজও পেয়েছে।”
কিন্তু ব্যাটে তো রান এল না। তিওয়ারি পরিবার মেনে নিচ্ছে, ব্যাটিংয়ে বড় রান করতেই হবে মনোজকে। কিন্তু একই সঙ্গে তাঁদের এটাও মনে হচ্ছে, এ বার যা হবে ভালই হবে। বীণা তো বলেই দিলেন, “এ বার আর আমার ছেলেকে আটকানো যাবে না। বুরা ওয়ক্ত গুজর গ্যয়া। খারাপ সময় কেটে গিয়েছে।” |