নতুন প্রযুক্তির নয়া মেট্রো চালু থাকবে ১৮ ঘণ্টা
মদম থেকে গড়িয়া পর্যন্ত সাবেক মেট্রো রেল এখনও ‘সাতটা থেকে দশটা’ সময়ের নির্ঘণ্ট ছেড়ে বেরোতে পারেনি। শুধুমাত্র এক বারই মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় প্রথম দফায় রেলমন্ত্রী হয়ে রাতের শেষ মেট্রোর সময় বাড়িয়েছিলেন কিছুটা। কিন্তু মহানগর কলকাতা ও দূরের যাত্রীদের কথা মাথায় রেখে ইস্ট-ওয়েস্ট মেট্রো চলবে ভোর পাঁচটা থেকে রাত এগারোটা পর্যন্ত। অর্থাৎ, ১৮ ঘণ্টা। শিয়ালদহ ও হাওড়ার মতো দু’টি ব্যস্ততম স্টেশন ছাড়াও এই মেট্রো ছুঁয়ে যাবে রাজারহাটের তথ্যপ্রযুক্তি তালুককেও। ফলে, যাতায়াত সমস্যা নিয়ে বহু দিন ধরে ভুগতে থাকা এই সেক্টরের কর্মীদেরও রাতে ফেরার সমস্যার অনেকটাই সুরাহা হবে বলে আশা কর্তৃপক্ষের। প্রযুক্তিগত দিক থেকেও উন্নত হবে ইস্ট-ওয়েস্ট মেট্রোর ট্রেনগুলি। ব্রেক কষে প্ল্যাটফর্মে দাঁড়ানোর সময়ে যে বিদ্যুৎ তাপশক্তিতে পরিণত হয়ে নষ্ট হয়, এ ক্ষেত্রে তা হবে না। সেই তাপশক্তিকে ফের বিদ্যুতে রূপান্তরিত করে পাঠানো হবে বৈদ্যুতিক গ্রিডে।
মেট্রো সূত্রের খবর, শারীরিক প্রতিবন্ধকতাও বাধা হবে না এই মেট্রোর যে কোনও স্টেশন থেকে ট্রেনে ওঠার ক্ষেত্রে। সল্টলেকের পাঁচ নম্বর সেক্টর থেকে হাওড়া ময়দান পর্যন্ত নির্মীয়মাণ ইস্ট-ওয়েস্ট মেট্রোর প্রতিটি স্টেশনেই শারীরিক প্রতিবন্ধীদের জন্য থাকবে বিশেষ ব্যবস্থা। হুইলচেয়ারে বসেই বাইরের রাস্তা থেকে যাত্রীরা লিফ্ট ধরে সোজা প্ল্যাটফর্মে পৌঁছবেন। তার পর সেই হুইলচেয়ারেই প্ল্যাটফর্ম থেকে ট্রেনে উঠতে ও নামতে পারবেন। কারণ ইস্ট-ওয়েস্ট মেট্রোর বগিগুলি প্ল্যাটফর্মের সঙ্গে সমান উচ্চতায় এসে স্টেশনে থামবে।
এর পাশাপাশি, চালকের কামরার দরজায় থাকবে উন্নত প্রযুক্তির নজর-ক্যামেরা, যার মাধ্যমে তিনি পুরো ট্রেনের দরজা খোলা ও বন্ধ হওয়া দেখতে পাবেন।
এই মেট্রো-প্রকল্প রূপায়ণের দায়িত্বপ্রাপ্ত কলকাতা মেট্রো রেল কর্পোরেশনের ম্যানেজিং ডিরেক্টর সুব্রত গুপ্ত মঙ্গলবার বলেন, “ইস্ট-ওয়েস্ট মেট্রোর মোট ১৪টি ট্রেন সরবরাহের জন্য ৫৯৪ কোটি টাকার বরাত দেওয়া হয়েছে স্পেনের ক্যাফ ও জাপানের মেলকোর মিলিত গোষ্ঠীকে। বরাত দেওয়ার সময়ে শারীরিক প্রতিবন্ধীদের অবাধ যাত্রার দিকটি নিশ্চিত করা হয়েছে। প্রতিটি ট্রেনে ছ’টি করে বগি থাকবে। বগিগুলির নকশা এমন হবে, যাতে হুইলচেয়ারে বসেও এক বগি থেকে অন্য বগিতে স্বচ্ছন্দে যাওয়া যায়।”
ইস্ট-ওয়েস্ট মেট্রোর ট্রেন সরবরাহের জন্য প্রথম দু’বার আন্তর্জাতিক স্তরে দরপত্র চেয়ে প্রত্যাশিত সাড়া না মেলায় রীতিমতো চিন্তায় ছিলেন মেট্রো কর্তৃপক্ষ। কিন্তু তৃতীয় বারে বিখ্যাত বিদেশি নির্মাতাদের তিনটি জোট পৃথক পৃথক ভাবে দরপত্র জমা দেয়। দরের দিক থেকে সর্বনিম্ন হওয়ায় শেষ পর্যন্ত বরাত পায় ক্যাফ-মেলকো জোট।
সুব্রতবাবু জানান, ১৪টি ট্রেনের মধ্যে প্রথমটি আসবে দু’বছর পরে। আর ২০১৪-র নভেম্বরের মধ্যে চলে আসবে ১৪টি ট্রেনই। প্রতিটি ট্রেনে ২৮৬ জন যাত্রীর বসার আসন থাকবে। দাঁড়িয়ে যেতে পারবেন ১৭৮২ জন যাত্রী। ২০১৫ সালের মার্চ নাগাদ ইস্ট-ওয়েস্ট মেট্রো চালু হয়ে যাবে বলে আশা করা হচ্ছে। এ বার ইস্ট-ওয়েস্ট মেট্রোর লাইন পাতার কাজের বরাত দেওয়ার তোড়জোড় চলছে।

এক নজরে
ইস্ট-ওয়েস্ট
• সেক্টর ফাইভ থেকে হাওড়া ময়দান পর্যন্ত ১২টি স্টেশন
• সময় লাগবে মোট ২৩ মিনিট
• সব চেয়ে কম দূরত্ব সল্টলেক স্টেডিয়াম
থেকে বেঙ্গল কেমিক্যাল, ১ মিঃ ২ সেঃ
• সব চেয়ে বেশি দূরত্ব শিয়ালদহ থেকে ফুলবাগান, ২ মিঃ ৫৬ সেঃ
• অফিসের সময়ে আড়াই মিনিট অন্তর ট্রেন
• অন্য সময়ে পাঁচ মিনিট অন্তর
 
 
 


First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.