নগদের জোগান বাড়াতে বিকল্প ব্যবস্থা
মূল্যবৃদ্ধির চাপে সুদ একই রাখল শীর্ষ ব্যাঙ্ক
জিনিসপত্রের দাম কমছে না। তাই বহাল থাকছে সুদের হার।
ভারতীয় রিজার্ভ ব্যাঙ্ক মঙ্গলবার তার ঋণনীতির পর্যালোচনায় চড়া মূল্যবৃদ্ধিকে সবচেয়ে বেশি গুরুত্ব দিয়েই সুদ কমানোর পথে হাঁটেনি। কারণ মূল্যবৃদ্ধির এই প্রবণতা তাঁকে যথেষ্ট ‘বিব্রত’ করছে বলে মন্তব্য করেছেন শীর্ষ ব্যাঙ্কের গভর্নর ডি সুব্বারাও। তবে তাঁর আশা, ২০১২-র মধ্যে সুদ ছাঁটাইয়ের সুযোগ আসবে। যদিও তিনি
ডি সুব্বারাও
বলেন, “এই পরিস্থিতিতে সুদ কমালে তা শুধু মূল্যবৃদ্ধিতেই আরও বেশি ইন্ধন জোগাত। আর্থিক বৃদ্ধির হারকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার ব্যাপারে কোনও সুবিধা হত না।” প্রসঙ্গত, ২০১২-’১৩ অর্থবর্ষের জন্য মূল্যবৃদ্ধির পূর্বাভাস আগেকার ৬.৫% থেকে বাড়িয়ে ৭% করেছে রিজার্ভ ব্যাঙ্ক। আর্থিক বৃদ্ধির পূর্বাভাস ৭.৩% থেকে কমিয়েছে ৬.৫ শতাংশে।
অবশ্য বিকল্প পথে নগদের জোগান বাড়াতে স্ট্যাটিউটরি লিক্যুইডিটি রেশিও (এসএলআর) অর্থাৎ বাধ্যতামূলক ভাবে সরকারি ঋণপত্রে বাণিজ্যিক ব্যাঙ্কের লগ্নির হার এ দিন ২৪% থেকে কমিয়ে ২৩% করেছে রিজার্ভ ব্যাঙ্ক। ফলে ব্যাঙ্কগুলিকে এখন বাধ্যতামূলক ভাবে আগের থেকে কম পরিমাণ টাকা সরকারি ঋণপত্রে বিনিয়োগ করতে হবে। আর বাড়তি টাকা ঋণ দেওয়ার জন্য ব্যবহার করা যাবে। ব্যাঙ্কিং শিল্প এই সিদ্ধান্তে খুশি। অখুশি নয় শেয়ার বাজারও। তাই ঋণনীতি ঘোষণার পর প্রাথমিক প্রতিক্রিয়ায় সেনসেক্স পড়লেও পরে তা কিছুটা ঘুরে দাঁড়ায়। দিনের শেষে সেনসেক্স বাড়ে ৯২ পয়েন্ট। আসলে চমক সৃষ্টি করতে চাইলে তবেই রিজার্ভ ব্যাঙ্কের পক্ষে সুদ কমানো সম্ভব হত। সেই কারণেই তেমন ভাবে প্রতিক্রিয়া জানায়নি শেয়ার বাজার বা ব্যাঙ্কিং মহল। তবে সাধারণ ভাবে হতাশ শিল্পমহল।
একনজরে পরিস্থিতি যা দাঁড়াল, তা হল:
• রেপো রেট (যে হারে বাণিজ্যিক ব্যাঙ্ক রিজার্ভ ব্যাঙ্কের ঋণ নেয়) ৮ শতাংশে অপরিবর্তিত।
• রিভার্স রোপো (যে হারে রিজার্ভ ব্যাঙ্ক বাণিজ্যিক ব্যাঙ্কের ঋণ নেয়) ৭ শতাংশে অপরিবর্তিত।
• নগদ জমার অনুপাত (সিআরআর) ৪.৭৫।
ব্যাঙ্কিং মহল জানিয়েছে, ইতিমধ্যেই দুর্বল হয়ে পড়া অর্থনীতির ভারসাম্য ফেরাতে এই সিদ্ধান্তই দরকার ছিল। কারণ এর জেরে ঋণের জোগান বাড়লে ঘুরপথে তা সুদ কমানোর সম্ভাবনাও তৈরি করবে। পাশাপাশি, গত তিন বছর ধরে মূল্যবৃদ্ধিকে বাগে আনতে রিজার্ভ ব্যাঙ্ক যে লড়াই চালাচ্ছে, ছেদ পড়বে না তাতেও। স্টেট ব্যাঙ্ক অফ ইন্ডিয়া মঙ্গলবারই ঋণে সুদ কমানোর ইঙ্গিত দিয়েছে। চেয়ারম্যান প্রতীপ চৌধুরী বলেন, “এসএলআর কমায় বাড়তি ১০ হাজার কোটি টাকা আসবে। এসএলআর অনুযায়ী সরকারি ঋণপত্রে টাকা খাটিয়ে গড়ে ৭.৫% সুদ ঘরে আসে ব্যাঙ্কের। এখন তা ১০.৫% সুদে ঋণ দেওয়া যাবে।”
তবে উল্টো সুরে বণিকসভা সিআইআই-এর ডিরেক্টর জেনারেল চন্দ্রজিৎ বন্দ্যোপাধ্যায় জানিয়েছেন, তাঁরা হতাশ। ইতিমধ্যেই মন্দার কবলে পড়া শিল্প এর ফলে আরও পিছিয়ে পড়বে বলে তাঁদের আশঙ্কা। অ্যাসোচ্যাম মনে করছে, বৃদ্ধির হারও এর ফলে আরও ঝিমিয়ে পড়বে। এসএলআর কমার কোনও প্রভাবই অর্থনীতির ওপর পড়বে না বলে মন্তব্য করেছে কলকাতার এমসিসি চেম্বার অফ কমার্স। ফিকি প্রেসিডেন্ট আর ভি কানোরিয়া অবশ্য বলেছেন, শীর্ষ ব্যাঙ্ক ও কেন্দ্র যৌথ ভাবে নিশ্চয়ই অর্থনীতির হাল ফেরানোর সমাধানসূত্র বার করবে।
এ দিকে, ডলারে টাকার দাম আগের তুলনায় কিছুটা বাড়ায় এখন থেকে বিভিন্ন সংস্থা ও রফতানিকারীরা তাদের বৈদেশিক মুদ্রা আয়ের সবটাই ওই মুদ্রায় সীমিত সময়ের জন্য ধরে রখতে পারবে। এর আগে টাকাকে টেনে তুলতে ৫০% বাধ্যতামূলক ভাবে টাকায় রূপান্তরের নির্দেশ দেয় শীর্ষ ব্যাঙ্ক।



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.