ডিজি-র রিপোর্ট তলব
১০ বছর ধরে দেহ ব্যবসা
লজে, কী করছিল পুলিশ
লকাতা পুলিশের ‘অকর্মণ্যতা’ নিয়ে আগেই ক্ষোভ প্রকাশ করেছিল কলকাতা হাইকোর্ট। এ বার জেলা তথা রাজ্য পুলিশের ‘নিষ্ক্রিয়তা’র বিরুদ্ধেও সরব হল উচ্চ আদালত। কাটোয়া শহরের লাইসেন্সহীন একটি লজের মামলায় মালিকের আবেদন খারিজ করে দিলেও হাইকোর্ট জানিয়ে দিয়েছে, পুলিশের নাকের ডগায় লজটি বিনা লাইসেন্সে কী ভাবে ১০ বছর চালু ছিল, সেই বিষয়ে মামলা চলবে।
‘পূজা লজ অ্যান্ড হোটেল’ নামে কাটোয়ার ওই লজের মালিক সুরজ মণ্ডল পুলিশের বিরুদ্ধে হাইকোর্টের দ্বারস্থ হয়েছিলেন। তাঁর আর্জি নাকচ হয়ে গেলেও আদালতের নির্দেশে নতুন ভাবে মামলাটি চলবে পুলিশের বিরুদ্ধেই। পুলিশ একতরফা ভাবে তাঁর লজ বন্ধ করে দিয়েছে বলে হাইকোর্টে অভিযোগ করেন সুরজবাবু। কিন্তু তিনি যে ১০ বছর ধরে ‘সরাই লাইসেন্স’ ছাড়াই লজ চালাচ্ছিলেন, তা জানার পরে বিচারপতি দীপঙ্কর দত্ত তাঁর আবেদন খারিজ করে দেন। মামলা জেতার আনন্দে পুলিশ ও সরকার পক্ষের আইনজীবীদের মুখ উজ্জ্বল হয়ে ওঠে।
কিন্তু তার পরেই বিচারপতি জানিয়ে দেন, মামলা চলবে। রাজ্য পুলিশের ডিরেক্টর জেনারেলকে তদন্ত করে জানাতে হবে, এই ১০ বছর পুলিশ কী করছিল? কাটোয়ার মতো শহরে প্রধান রাস্তার উপরে বিনা লাইসেন্সে একটি লজ ১০ বছর বিনা লাইসেন্সে চলছে অথচ পুলিশ তা জানতে পারেনি, এটা বিশ্বাসযোগ্য নয়। ১১ অগস্ট ডিজি-কে হাইকোর্টে তদন্ত রিপোর্ট জমা দিতে হবে।
লজটি বন্ধ করা হল কেন? মঙ্গলবার জেলা পুলিশের পক্ষে থেকে হাইকোর্টে একটি রিপোর্ট জমা দেওয়া হয়। তাতে পুলিশ জানিয়েছে, ১০ বছর ধরে ওই লজে দেহ ব্যবসা চলছিল বলে প্রমাণ পাওয়া গিয়েছে। পুলিশের পক্ষে সরকারি আইনজীবী জয়ন্ত বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, কাটোয়ায় বর্ধমান-কাটোয়া রোডের উপরে এই পূজা লজ। সেখানে দেহ ব্যবসা চালানো হত। ২৮ মে পুলিশ একটি ফোন পেয়ে ওই লজে অভিযান চালায়। তখনই তারা জানতে পারে, সেখানে দেহ ব্যবসা চালানো হচ্ছিল।
বিচারপতি সরকারি আইনজীবীর কাছে জানতে চান, ওই লজে যে দেহ ব্যবসা চলে, গত ১০ বছরে পুলিশ তা জানতে পারেনি কেন? লজের তো লাইসেন্সই নেই। বিচারপতির প্রশ্ন, পুলিশের যোগসাজশ ছাড়া এটা কি সম্ভব? পুলিশের হঠাৎ ঘুম ভাঙলই বা কী ভাবে? পুলিশের ভূমিকা নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেন বিচারপতি।
তার পরেই আদালত জানিয়ে দেয়, এই ঘটনায় পুলিশের ভূমিকা খতিয়ে দেখতে হবে। পুলিশের নাকের ডগায় দেহ ব্যবসা চলছে আর পুলিশ সেটা জানে না, এটা বিশ্বাসযোগ্য নয়। ডিজি-কে তদন্ত করতে হবে। পুলিশ আগে বিষয়টি কেন জানতে পারেনি, জানাতে হবে। বিভিন্ন সময়ে বিভিন্ন আইসি এসেছেন, অন্য অফিসারেরা ওই এলাকার দায়িত্বে এসেছেন। লজ কিন্তু চলেছে পুরোদমে। লজের যে লাইসেন্স নেই এবং সেখানে যে দেহ ব্যবসা চলে, পুলিশ নাকি আগে তা জানতেই পারেনি! কী ভাবে এটা সম্ভব হল, তা তদন্ত করে সবিস্তার রিপোর্ট পেশ করতে হবে ডিজি-কে। পুলিশি সূত্রের খবর, ওই লজে মধুচক্র প্রথম ধরা পড়ে মাসখানেক আগে। তখন লজের দু’টি ঘর সিল করে দেওয়া হয়। কিন্তু তার পরেও মধুচক্র চালানো হচ্ছে জানতে পেরে পুরো হোটেলটি ‘সিল’ করে দেওয়া হয়। মহকুমা প্রশাসন সূত্রে জানা যায়, কাটোয়া শহরের কোনও হোটেলরই ‘সরাই লাইসেন্স’ নেই। সব হোটেল-মালিককে দ্রুত ওই লাইসেন্স নিয়ে নেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। এ দিন হাইকোর্টের নির্দেশের পরে যোগাযোগ করা হলে কাটোয়ার এসডিপিও ধ্রুব দাস বলেন, “যখনই ওই লজে মধুচক্র চলছে বলে খবর পেয়েছি, তখনই অভিযান চালিয়েছি। হাতেনাতে ধরার পরেই আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে।”



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.