প্রকাশ অডিট রিপোর্টে মেডিক্যালে পড়েই রয়েছে
অব্যবহৃত নানা দামি যন্ত্র

ব্যহৃত অবস্থায় হাসপাতালেই পড়ে রয়েছে বেশ কিছু মূল্যবান যন্ত্র। দীর্ঘ দিন ব্যবহার না হওয়ায় সেগুলিতে নানা সমস্যাও দেখা দিচ্ছে। বর্ধমান মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে এই পড়ে থাকা যন্ত্রপাতির মূল্য কোটি টাকারও বেশি। এমনই দাবি করা হয়েছে প্রিন্সিপ্যাল অ্যাকাউন্ট্যান্ট জেনারেলের দফতরের তরফে পেশ করা অডিট রিপোর্টে। এই রিপোর্টটি এ বছর ২৫ এপ্রিলের বলে উল্লেখিত। সেটি ফের বর্ধমান মেডিক্যালে নতুন করে পাঠানো হয়েছে চলতি জুনে। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ ২৭ জুন সেটি গ্রহণ করেছেন।
গত এপ্রিলে প্রিন্সিপ্যাল অ্যাকাউন্ট্যান্ট জেনারেলের দফতরের পেশ করা রিপোর্টে জানানো হয়েছে, বর্ধমান মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের ইনটেনসিভ ট্রিটমেন্ট ইউনিট (আইটিইউ) বিভাগে মূল্যবান কার্ডিওভাস্কুলার যন্ত্র পড়ে রয়েছে। ১৯৯৮-এর জুন থেকে ২০১০-এর মার্চের মধ্যে কেনা হয়েছে মোট ২৭টি এই ধরনের যন্ত্র। সেগুলির ‘ইনস্টলেশন সার্টিফিকেট’ দেন বিভাগীয় প্রধানেরা। তারই ভিত্তিতে যন্ত্রগুলির প্রস্তুতকারক বা সরবরাহকারীদের প্রাপ্য অর্থ দিয়ে দেওয়া হয়। এর পরে অডিট করতে এসে আধিকারিকেরা ২৪টি যন্ত্রের দামের কথা জানতে পারেন। যা ৬১.৬৭ লক্ষ টাকা। বাকি কার্ডিওভাস্কুলার যন্ত্রগুলির দাম হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ জানাতে পারেননি বলে অডিট রিপোর্টে উল্লেখ করা হয়েছে। কিন্তু ওই যন্ত্রগুলি আইটিইউ বিভাগেই পড়ে থাকতে দেখা গিয়েছে।
অডিট রিপোর্টে আরও জানানো হয়েছে, অ্যানেস্থেসিয়া, মেডিসিন প্রভৃতি বিভাগে লোক না থাকায় আইটিইউ ইউনিট কাজ শুরু করতে পারেনি। এ দিকে, দীর্ঘ দিন ব্যবহার না হওয়ায় যন্ত্রগুলিতে ত্রুটি দেখা দিচ্ছে। পড়ে থাকা ২০০৮ সালের মার্চে কয়েকটি যন্ত্র যেমন সুর ভেন্টিলেটর ও ল্যাপটপ ভেন্টিলেটরের মেরামত করাতে হয় ১১,৪৪৯ টাকা ব্যয়ে। কিন্তু তার পরেও সেগুলিকে কাজে লাগানো হয়নি। বর্তমানে ডেফিব্রিলেটর-সহ ইসিজি মনিটর ও সুর ভেন্টিলিটর যন্ত্রগুলি অবস্থা এতটাই খারাপ, যে সেগুলি সারানোও আর লাভজনক হবে না। এই পরিস্থতি থেকেই বোঝা যাচ্ছে, হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ আইটিইউ কেন্দ্র খুলতে উদ্যোগী হননি বা কর্মী-সমস্যা মেটানোর ব্যবস্থা করেননি। এমনই মন্তব্য করা হয়েছে রিপোর্টে।
ওই রিপোর্টে জানোনো হয়েছে, হাসাপাতলে পড়ে থাকা ৩৪ লক্ষ ৩৪ হাজার ১৩০ টাকা মূল্যের ৮০০ এমএ এক্সরে মেশিনও অব্যবহৃত অবস্থায় পড়ে রয়েছে। ২০০৬ সালে হাসপাতাল যন্ত্রটি হাতে পেয়েছিল। কিন্তু তার পর থেকেই টেকনিশিয়ানের অভাবে এই যন্ত্রটি পড়ে রয়েছে।
২০০২-এর মার্চ থেকে হাসপাতালে অব্যবহৃত অবস্থায় পড়ে রয়েছে এন্ডোস্কোপ ও ভিডিওস্কোপের একটি সেট। যার মূল্য ১৬ লক্ষ ৩৮ হাজার টাকা। যন্ত্রটি কেন কাজে লাগানো যায়নি, সে ব্যাপারে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ নির্দিষ্ট কোনও কারণ দেখাতে পারেনি বলে দাবি করা হয়েছে সরকারি প্রিন্সিপ্যাল অ্যাকাউন্ট্যান্টের পেশ করা অডিট রিপোর্টে। এই ঘটনা সম্পর্কে সরকারের দৃষ্টি আকর্ষণ করা হয়েছে বলেও রিপোর্টে জানানো হয়েছে।
সুপার তথা বর্ধমান মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের সহ-অধ্যক্ষ অসিতবরণ সামন্তের দাবি, “এক্স-রে মেশিন ও এন্ডোস্কোপ, ভিডিওস্কোপ যন্ত্রের ব্যবহার কেন শুরু হয়নি তা জানতে বিভাগীয় প্রধানদের চিঠি লিখেছি। তবে ২০০৬-এ পাঠানো ওই এক্স-রে মেশিনটিকে কাজে লাগাতে হলে মেরামত করতে হবে বলে শুনেছি। বছর দেড়েক আগে অনাময় সুপার স্পেশালিটি হাসপাতালটি চালু হওয়ার পরে কার্ডিওভাস্কুলার যন্ত্রগুলির বেশির ভাগই কাজে লাগানো গিয়েছে।” তাঁর কথায়, “জরুরি যন্ত্রগুলি এত দিন ধরে পড়ে থাকা উচিত হয়নি। দুই বিভাগীয় প্রধানের কাছ থেকে উত্তর মিললেই অডিট বিভাগকে তা জানিয়ে দেব।”



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.