প্রেমিকের অন্যত্র বিয়ে ঠিক হওয়ায় ভাড়াটে খুনি দিয়ে তাঁকে খুন করার অভিযোগ উঠেছে প্রেমিকার নামে। জলপাইগুড়ির রাজগঞ্জ থানার মুরগিভিটা গ্রামে ঘটনাটি ঘটে ১৩ জুলাই। সেখানে একটি ঝোরার ধারে হাবিব মুস্তাফার (২৭) দেহ মেলে পরদিন। তদন্তে নেমে হতের মোবাইলের সূত্রে ধরে ১৮ দিনের মাথায় খুনের কিনারা হয়েছে বলে পুলিশের দাবি। পুলিশ জানান, হাবিবের প্রেমিকা পার্বতী দাস এবং নিমাই হাজরা ও সহদেব হাজরাকে গ্রেফতার করা হয়েছে। নিমাই ও সহদেব ২০ হাজার টাকার বিনিময়ে খুন করেছে বলে পুলিশের সন্দেহ। যে ছুরি দুটি দিয়ে হাবিবকে খুন করা হয় সেগুলিও একটি কুয়ো থেকে উদ্ধার করেছে। জলপাইগুড়ির পুলিশ সুপার সুগত সেন বলেন, “ধৃতদের জেরা করে কিছু তথ্য পেয়েছি। তদন্ত চলছে।” ১৪ জুলাই সকালে শিকারপুর ১ নম্বর লাইনে রাস্তার পাশের একটি ঝোরার কাছ থেকে হাবিবের দেহ উদ্ধার করে পুলিশ। পাশে তাঁর মোটরবাইক পড়ে ছিল। হাবিবের মানিব্যাগ ও মোবাইল নিয়ে যায় দুষ্কৃতীরা। তদন্তে নেমে পুলিশ জানতে পারে, মুরগিভিটার বাসিন্দা পার্বতীর সঙ্গে হাবিবের সম্পর্ক ছিল। মোবাইল কল রেকর্ড থেকে জানা যায়, দেহ উদ্ধারের আগের দিন পার্বতী নিজের মোবাইল থেকে হাবিবকে ২৫ বার ফোন করেন। ওই দিনই তিনি রিকশাচালক নিমাইকে ১৫ বার ফোন করে। পার্বতীকে গ্রেফতার করে জিজ্ঞাসাবাদ শুরু করে পুলিশ। হাবিবের মোবাইলের সূত্রে সহদেবকে ধরার পর কাছে গোটা ঘটনা পরিষ্কার হয়। পুলিশ জানায়, পার্বতী যখন কিশোরী সে সময় থেকে তাঁর সঙ্গে হাবিবের সম্পর্ক ছিল। পার্বতীর বিয়ের পরও সে সম্পর্ক অটুট ছিল। তা জানতে পেরে পার্বতীর সঙ্গে তাঁর স্বামীর সম্পর্ক ভেঙে যায়। মুরগিভিটা গ্রামে একটি মুদির দোকান চালিয়ে সংসার শুরু করেন তিনি। সেখানে রোজ হাবিবের যাতায়াত ছিল। সম্প্রতি হাবিবের বিয়ে ঠিক হয়। এর পরেই তাঁকে খুনের ছক কষা হয় বলে পুলিশের সন্দেহ। পুলিশ তদন্তে জেনেছে, ১৩ জুলাই শুক্রবার নিমাই ও সহদেবকে দুটি ছুরি দিয়ে নিজের বড়িতে লুকিয়ে রাখেন পার্বতী। রাতে হাবিবকে তিনি ডেকে পাঠান। সাড়ে ১০টা নাগাদ বাইকে হাবিব ওই বাড়িতে যায়। প্রায় আধ ঘণ্টা তিনি সেখানে ছিলেন। রাত ১১টা নাগাদ ঘর থেকে বেরিয়ে বাইকে বসার সময় তার গলায়-পেটে ছুরি বসিয়ে দেয় ধৃতরা। মৃতদেহ বাইকে বসিয়ে মুরগিভিটা থেকে এক কিমি দূরে নির্জন জায়গায় ঝোরার কাছে নিয়ে গিয়ে ফেলে দেয় তারা। সহদেব হাবিবের মোবাইল ফোন, মানিব্যাগ নেয়। সিম কার্ড বদল করে ওই ফোন ব্যবহার করছিল অভিযুক্ত। সে সূত্রে সহদেবকে গ্রেফতার করে পুলিশ। |