পুরসভার সাফাইকর্মীদের বসতি লাগোয়া এলাকায় প্রায় ৫ বিঘা ফাঁকা জমিতে পাঁচিল দেওয়ার ঘটনা ঘিরে বিতর্ক দানা বাঁধছে। শিলিগুড়ি পুরসভার ৪৬ নম্বর ওয়ার্ডের উজানু মৌজায় সুকান্তপল্লির ঘটনা। সাফাইকর্মীদের অভিযোগ পেয়ে সোমবার দুপুরে প্রাক্তন পুরমন্ত্রী তথা সিপিএম নেতা অশোক ভট্টাচার্য, পুরসভার কাউন্সিলর জয় চক্রবর্তী ঘটনাস্থলে গেলে পরিস্থিতি কিছুটা উত্তপ্ত হয়ে ওঠে। প্রাক্তন পুরমন্ত্রীর সামনেই তাঁর দলের লোকজন, সাফাইকর্মীদের সঙ্গে স্থানীয় তৃণমূল কর্মীদের বচসা বাঁধে। স্থানীয় এক যুবক নিজেকে তৃণমূল নেতা হিসেবে দাবি করে চেঁচামেচি করতে থাকেন। শেষ পর্যন্ত অশোকবাবু, জয়বাবুদের হস্তক্ষেপে পরিস্থিতি কিছুটা শান্ত হয়। |
সাফাইকর্মীদের তরফে প্রাক্তন পুরমন্ত্রীকে জানানো হয়, তিনি এসজেডিএ-এর চেয়ারম্যান থাকাকালীন তাঁদের ওই এলাকায় বসবাসের ব্যবস্থা করে দেন। বসতি লাগোয়া জমিটি নিয়ে আদালতে মামলা বিচারাধীন থাকা সত্ত্বেও পাঁচিল দেওয়া হচ্ছে বলে সাফাইকর্মীদের অনেকেরই অভিযোগ। ওই সময়ে জমির মালিকদের পক্ষে বিজয় যাদব সেখানে যান। পাশাপাশি, এলাকার একাধিক যুবক নিজেদের তৃণমূল কংগ্রেসের কর্মী হিসেবে দাবি করে ‘কেন ওই এলাকায় আজও বিদ্যুৎ পৌঁছয়নি’ সেই প্রশ্নে চেঁচামেচি শুরু করেন। সাফাইকর্মীদের তরফে প্রতিবাদ হলে পরিস্থিতি তেতে ওঠে। তবে বড় মাপের ওই ফাঁকা জমির মালিকানা নিয়ে পূর্ণাঙ্গ তদন্তের দাবি জানিয়েছেন প্রাক্তন পুরমন্ত্রী। তিনি বলেন, “যতদূর জানি ওই জমি বিতর্কিত। তা নিয়ে আদালতে মামলা বিচারাধীন। তা হলে ওখানে নির্মাণ চলছে কেমন করে সেটাই জানা দরকার। আমি জমিটির ব্যাপারে পূর্ণাঙ্গ তদন্তের দাবি জানাব। সাফাইকর্মীদের যাতায়াতের রাস্তা সঙ্কুচিত করার অভিযোগও খতিয়ে দেখতে হবে প্রশাসনকে।” জমির মালিকদের পক্ষে বিজয় যাদব অবশ্য দাবি করেন, উচ্চ আদালতে জমি নিয়ে মামলা চললেও পাঁচিল দেওয়ার অনুমতি তাঁরা পেয়েছেন। তিনি বলেন, “পাঁচিল দিতে শুরু করলে প্রথমে বাধা আসে। পুলিশের কাছে অভিযোগ হয়। সে জন্য কাজ বন্ধ রাখা হয়েছিল। পরে পুলিশ-প্রশাসন তদন্ত করে অভিযোগের সারবত্তা না-পেয়ে পাঁচিল তোলার কাজে আর বাধা দেয়নি।”
এই ঘটনার খবর পৌঁছেছে তৃণমূল কংগ্রেসের নেতাদের কাছেও। তৃণমূল সূত্রের খবর, যে যুবকেরা তৃণমূল-কর্মী পরিচয় দিয়ে চেঁচামেচি করেছেন, তাঁদের চিহ্নিত করে জেলা নেতাদের তরফে গোটা ঘটনা জানার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। তৃণমূল কংগ্রেসের জেলা কমিটির এক নেতা জানান, জমি সংক্রান্ত কোনও বিতর্কে দলের কেউ যেন না-জড়িয়ে পড়েন, সেই ব্যাপারে দলমনেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের স্পষ্ট নির্দেশ রয়েছে। কেউ তা অমান্য করার চেষ্টা করছেন কি না তা খতিয়ে দেখার প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে তৃণমূল সূত্রের খবর। |