সাঁতারের পুলে একটা কীর্তি। আর তাতেই লন্ডন অলিম্পিকে তোলপাড় ফেলে দিয়েছেন চিনের ষোড়শী য়ি শিওয়েন!
না, ৪০০ মিটার ব্যক্তিগত মেডলিতে সোনা জিতেছেন বলে নয়। ওই ইভেন্টে স্টেফানি রাইসের পুরনো বিশ্বরেকর্ডের থেকে এক সেকেন্ড ছেঁটে ফেলে নতুন বিশ্বরেকর্ড গড়ার জন্যও নয়। চিনা টিনএজার বিতর্ক উস্কে দিয়েছেন মানুষের মৌলিক একটা বিশ্বাসের গোড়া ধরে নাড়িয়ে দিয়ে।
বিশ্বাসপ্রকৃতির নিয়মেই শারীরিক ক্ষমতায় নারী পুরুষের থেকে দুর্বল।
লন্ডনের রেকর্ড বলছে, ৪০০ মেডলির শেষ ৫০ মিটার ফ্রিস্টাইল শিওয়েন সাঁতরান ২৮.৯৩ সেকেন্ডে। যা লন্ডনেই পুরুষদের চারশো মেডলি জয়ী রায়ান লখটের থেকেও দ্রুত! লখটে শেষ ৫০ মিটার ফ্রিস্টাইল সাঁতরেছিলেন ২৯.১ সেকেন্ডে।
|
অবিশ্বাস্য নজির: চিনের য়ি শিওয়েন |
এমন চাঞ্চল্যকর উলট পুরাণ লিখে বসলে যা স্বাভাবিক, শিওয়েনের কীর্তি ঘিরে বিস্ময়ের থেকেও অবিশ্বাস তৈরি হয়েছে বেশি। চিনা সাঁতারুদের ডোপিংয়ের পূর্ব ইতিহাস টেনে এনে সংবাদমাধ্যম তুলেছে একগাদা অস্বস্তিকর প্রশ্ন। শিওয়েন তাতে এতটুকু দমেননি। বরং, সোমবার ২০০ মিটার মেডলির হিট সহজে জিতে উঠে বলেছেন, “চিন দলে ডোপ পরীক্ষার অসম্ভব কড়া নিয়মকানুন। এ সব নিয়ে ভাবছিই না।” চিন শিবির তাঁকে ‘বেজিং গেমসের পরে সেরা আবিষ্কার’ বলছে। বিশেষজ্ঞ মহলেরও আর্জি, শিওয়েনকে নিয়ে অবাঞ্ছিত প্রশ্ন না তুলে আমাদের উচিত চিনের সুপরিকল্পিত, নিখুঁত অলিম্পিক প্রস্তুতিকে কুর্নিশ জানানো।
শনিবার রাতে শিওয়েন মাত্র ৪ মিনিট ২৮.৩ সেকেন্ড নিজের রেস শেষ করার পরে সবার আগে বিতর্ক তৈরি করেন বিবিসি-র ধারাভাষ্যকার ক্লেয়ার ব্যাল্ডিং। কী করে এই ইভেন্টে নিজের সেরা সময়ের থেকে লন্ডনে পুরো পাঁচ সেকেন্ড কমে সাঁতরালেন শিওয়েন, তা নিয়ে স্টুডিওর বিশেষজ্ঞ, ব্রিটেনের প্রাক্তন সাঁতার তারকা মাইকেল ফস্টারকে প্রশ্ন করে। ফস্টার বলেন, “ওর বয়স মাত্র ষোলো। এই বয়সেই নিজের সেরা সময়গুলো আসে। মানছি, পাঁচ সেকেন্ড কমিয়ে ফেলা আর ও যে ভাবে শেষ করল, তাক লাগানো। তবে এটা করা সম্ভব।”
সংবাদমাধ্যম অবশ্য ছাড়েনি। একটি কাগজ লেখে, “য়ি-র ফ্রিস্টাইলের সময় বিশ্বাসযোগ্য নয়।” অন্য একটায় শিরোনাম, “জলে কচ্ছপের রক্তের গন্ধ।” মনে করানো হয়, চিনের আর এক ষোড়শী, লি ঝেসি ডোপের দায়ে অলিম্পিক দল থেকে বাদ পড়েছেন। শিওয়েন যাঁর রেকর্ড ভাঙলেন, সেই স্টেফানি রাইস বলেছেন, “মাত্র ৫৮ সেকেন্ডে ১০০ ফ্রিস্টাইল সাঁতরানো স্রেফ পাগলামি!” |