জমি মোট ২৮৮ একর। তার মধ্যে ১৫ একর জবরদখল হয়ে গিয়েছে। আর ওই বেদখল ১৫ একর জমি বাদ দিয়েই মুর্শিদাবাদে আলিগড় মুসলিম বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রস্তাবিত ক্যাম্পাস তৈরি কাজ শুরু করে দেওয়ার জন্য কেন্দ্রের কাছে আর্জি জানাচ্ছে রাজ্য সরকার। সোমবার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এ কথা জানান।
ক্ষমতায় এসেই মমতা জানিয়ে দিয়েছিলেন, রাজ্য সরকার কোনও প্রকল্পের জন্যই জোর করে জমির দখল নেবে না। প্রশাসনের বক্তব্য, সরকারের এই নীতির কথা মাথায় রেখেই মুর্শিদাবাদে ওই প্রকল্পের জন্য চিহ্নিত জমি থেকে দখলদারদের উচ্ছেদ না-করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
মুখ্যমন্ত্রী এ দিন বলেন, “২৮৮ একর জমিতে ওই ক্যাম্পাস তৈরির জন্য বাম আমলে শিলান্যাস হয়েছিল। কিন্তু ওঁরা সমস্যার সমাধান করে যাননি।” মুখ্যমন্ত্রী জানান, প্রকল্প এলাকায় কয়েকটি দরিদ্র পরিবার যেমন রয়েছে, তেমনই থাকবে। তার জন্য ১৫ একর জমি ছেড়ে দিতে হবে। তাঁর কথায়, “২৭৩ একর জমিও কম নয়। ওই জমিতেই ক্যাম্পাস তৈরির প্রস্তাব দেওয়া হচ্ছে।” উচ্চশিক্ষা সচিব সতীশ তিওয়ারি এই বিষয়ে কেন্দ্রকে চিঠি দেবেন।
১৯৬৩-’৬৪ সালে রাজ্য সরকার ফরাক্কা বাঁধ প্রকল্পের জন্য আহিরন এলাকায় ৩৫৫ একর জমি অধিগ্রহণ করেছিল। সেই সময় ওই এলাকার অনেক বাসিন্দাকে পুনর্বাসন দেওয়া হলেও জলঙ্গাপাড়া, রসুনপুর ও বাঙাবাড়ি নামের তিনটি গ্রামের প্রায় ৭০০ পরিবার এখনও সেই জমিতে রয়ে গিয়েছে। প্রায় ২৪ একর জমিতে ঘরবাড়ি বানিয়ে তারা বসবাসও করছে। ২০১০ সালে আলিগড় মুসলিম বিশ্ববিদ্যালয় তৈরির কাজে লাগবে বলে ওই ৩৫৫ একর জমি থেকে ২৮৮ একর রাজ্য সরকারকে দিয়ে দেন ফরাক্কা বাঁধ-কর্তৃপক্ষ। তার মধ্যে অবশ্য ওই তিনটি গ্রামের বাসিন্দাদের বসবাসের ২৪ একর পড়ছে না। কিন্তু তার মধ্যে পড়ছে ওই তিনটি গ্রামের বাসিন্দাদের ১৫ একর চাষের জমি। স্থানীয় গ্রামবাসীদের দাবি, ওই ১৫ একর জমিতে তাঁদের চাষ করতে দিতে হবে।
শেষ পর্যন্ত তাঁদের জমির দখল না-নেওয়ার সিদ্ধান্তই নিল রাজ্য সরকার। মুখ্যমন্ত্রী এ দিন বলেন, “আলিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের নতুন ভবন তৈরির কাজ চলছে। কোচবিহারে একটি নয়া বিশ্ববিদ্যালয় ভবন তৈরির জন্য দরপত্র চাওয়া হচ্ছে। এ ছাড়া আগামী ২২ শ্রাবণ টেকনো ইন্ডিয়া সংস্থার সঙ্গে বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় গড়ার চুক্তি স্বাক্ষরিত হবে।” |