রাজ্যের ঋণের উপরে মোরাটোরিয়ামের দাবিতে ‘দিল্লি চলো’র ডাক দিয়েছিলেন তৃণমূলনেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। এ বার তৃণমূলের হাতে-থাকা রেল মন্ত্রকের বিরুদ্ধে মুর্শিদাবাদকে ‘বঞ্চনা’র প্রতিবাদ জানাতে বহরমপুরের কংগ্রেস সাংসদ অধীর চৌধুরী ও তাঁর অনুগামীরা দিল্লি যাওয়ার পাল্টা ‘হুঁশিয়ারি’ দিলেন। নশিপুরে রেল ব্রিজ, পলাশি থেকে লালগোলা ডবল লাইন, বহরমপুর, বেলডাঙায় রেলের উড়ালপুল প্রকল্পের কাজ অবিলম্বে শেষ করার দাবিতে সোমবার শিয়ালদহ স্টেশনে আয়োজিত বিক্ষোভ-সমাবেশে অধীর বলেছেন, “দাবি পূরণে আমরা লাগাতার আন্দোলন করব। প্রয়োজনে দিল্লি যাব।” মমতা-সরকারের মন্ত্রিত্বে ইস্তফা দেওয়া বহরমপুরের বিধায়ক মনোজ চক্রবর্তী বলেন, “মুর্শিদাবাদে রেল প্রকল্পের কাজ শেষ করতে রাজ্যের যে সহযোগিতা করা উচিত, তা করা হচ্ছে না। প্রয়োজনে দিল্লি গিয়ে দাবি আদায় করব।”
|
তৃণমূল নেতৃত্ব এতে ‘গুরুত্ব’ দেননি। মন্ত্রী সুব্রত মুখোপাধ্যায় বলেন, “ওঁরা দিল্লি যেতেই পারেন। অধীর সংসদেও বিষয়টি তুলতে পারেন। প্রধানমন্ত্রীর বাড়ির সামনে ধর্নাও দিতে পারেন। নিজেদের জায়গায় পায়ের তলার মাটি হারাচ্ছে বলেই ওঁরা কলকাতায় এসে সমাবেশ করছেন!”
কংগ্রেস যে পঞ্চায়েত ভোটের আগে মুর্শিদাবাদে রেলের ‘অসম্পূর্ণ কাজ’কে তৃণমূলের বিরুদ্ধে হাতিয়ার করবে, এ দিনের সমাবেশে তা স্পষ্ট। প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি প্রদীপ ভট্টাচার্যের কথায়, “বাংলার প্রতিটি কংগ্রেস কর্মী মুর্শিদাবাদের পাশে আছেন।” কংগ্রেসের ‘শক্ত ঘাঁটি’ বলে মুর্শিদাবাদের প্রকল্পের কাজ নিয়ে রেল মন্ত্রক টালবাহানা করছে বলে অভিযোগ করেন প্রদীপবাবু, কংগ্রেস পরিষদীয় দলনেতা মহম্মদ সোহরাব, কান্দির বিধায়ক অপূর্ব সরকার, প্রদেশ নেতা আব্দুল মান্নানেরা। মান্নানের অভিযোগ, “মুর্শিদাবাদে অধীরের প্রভাব বাড়ছে বলে হিংসাপরায়ণ হয়ে কাজ বন্ধ রাখা হচ্ছে।” রাষ্ট্রপতি ভোটে প্রণবকে মমতা সমর্থন করার পরে কংগ্রেস-তৃণমূলের টানাপোড়েন সাময়িক কমেছিল। ২১ জুলাই সমাবেশে মোরাটোরিয়ামের প্রশ্নে মমতা কেন্দ্রের বিরুদ্ধে জেহাদ ঘোষণার পরে শরিকি কাজিয়া ফের শুরু। যার প্রতিফলন এ দিনের সমাবেশেও চোখে পড়েছে। কলকাতার রাস্তায় ত্রিফলা আলো থেকে শুরু করে শহরকে নীল-সাদায় রাঙানো নিয়ে মুখ্যমন্ত্রীর সমালোচনা করেন অধীর। ত্রিফলা আলো নিয়ে শ্বেতপত্র প্রকাশের দাবি তোলেন। তবে অধীরের সমালোচনাকে ‘পাগলের প্রলাপ’ বলে কটাক্ষ করে সুব্রতবাবুর মন্তব্য, “মুখ্যমন্ত্রীর জনপ্রিয়তায় ওরা ভয় পেয়েছে। |