ক্ষোভ তৃণমূলের অন্দরেই
বামুনিয়া থেকে সরছে ট্রমা সেন্টার: শুভেন্দু
তৃণমূলের নেতৃত্বে আন্দোলনের জেরে নন্দীগ্রামে কেমিক্যাল হাব তৈরির পরিকল্পনা ত্যাগ করতে হয়েছিল পূর্বতন বাম-সরকারকে। সেই আন্দোলনের নেতা শুভেন্দু অধিকারী এখন সাংসদ। রাজ্যেও এখন তৃণমূলের সরকার। নন্দীগ্রামের জেলাতেই এ বার সেই শুভেন্দুবাবুর নিয়ন্ত্রণাধীন হলদিয়া উন্নয়ন পর্ষদ (এইচডিএ) জমি-জটে পিছু হটল। মহিষাদলের কাপাসএড়্যার বামুনিয়া মৌজায় এইচডিএ একটি ট্রমা সেন্টার গড়ার পরিকল্পনা করেছিল। গত ১২ জুন অধিগৃহীত ২ একর জায়গায় মাটি ভরাটের কাজ শুরু হতেই বাধা আসে জমিদাতাদের তরফে। অধিগ্রহণের সময়ে উপযুক্ত ক্ষতিপূরণ মেলেনি অভিযোগে তাঁরা মাটি ভরাটে বাধা দেন। স্থানীয় পঞ্চায়েতের তৃণমূল প্রধান জমিদাতাদের সঙ্গে আলোচনায় সমাধানসূত্র খোঁজার চেষ্টা করলেও এইচডিএ প্রকল্পটি বামুনিয়ায় না করারই সিদ্ধান্ত নিল।
সোমবার এইচডিএ-র বৈঠক শেষে চেয়ারম্যান শুভেন্দুবাবু বলেন, “আমরা ওই ট্রমা সেন্টার তৈরি করবই। তবে বামুনিয়ায় ওই প্রকল্প হবে না।” কোথায় হবে, সে নিয়ে স্পষ্ট কিছু বলেননি এইচডিএ’র চেয়ারম্যান। তবে, হলদিয়ার ভাবনীপুরে এ জন্য ‘বিকল্প’ জায়গা দেখা হচ্ছে বলে শোনা যাচ্ছে। আবার, আদৌ আর প্রকল্পটি হবে কি না, সে নিয়েও সংশয় দেখা দিয়েছে কোনও কোনও মহলে।
শুভেন্দুবাবুর এ দিনের বক্তব্যের পরে ‘হতাশা’ গোপন করেননি বামুনিয়ার সংশ্লিষ্ট ইটামগরা-২ পঞ্চায়েতের তৃণমূল প্রধান রামকৃষ্ণ দাস। তাঁর বক্তব্য, “শুভেন্দুবাবুর নির্দেশেই আমি জমিদাতাদের সঙ্গে আলোচনা করেছিলাম। কিন্তু শুভেন্দুবাবুই জানালেন, বামুনিয়ায় আর ট্রমা সেন্টার হবে না। উনি নিজে জমিদাতাদের সঙ্গে কথা বলবেন বলেছিলেন। এখন খারাপ লাগছে।” প্রসঙ্গত, মাত্র ক’দিন আগেও শুভেন্দুবাবু কাপাসএড়্যায় বৃক্ষরোপণের কর্মসূচিতে এলে রামকৃষ্ণবাবু ফের তাঁর কাছে বামুনিয়াতেই ট্রমা সেন্টার গড়ার আবেদন জানিয়েছিলেন।
জমিদাতা জগন্নাথ সাউ, দীপেন্দ্রনাথ মণ্ডলদের কথায়, “আমরা প্রত্যেকেই তৃণমূল করি। আমরা ভেবেছিলাম ন্যায্য ক্ষতিপূরণ দিয়ে এখানেই ট্রমা সেন্টার করবে এইচডিএ। শুভেন্দুবাবুর সঙ্গে আলোচনাও চেয়েছিলাম। কিন্তু উনি আমাদের এড়িয়ে গেলেন।” জমিদাতাদের বক্তব্য, “পঞ্চায়েত প্রধানের সঙ্গে গত ১৪ জুনের বৈঠকেই আমরা মাটি-ভরাটে বাধা দেব না জানিয়েছিলাম। শর্ত ছিল, শুভেন্দুবাবুকে আলোচনায় বসতে হবে। আশ্বাসও মিলেছিল।” কিন্তু জমিদাতাদের কাছে ‘নতি-স্বীকার না-করা’র কৌশলেই শুভেন্দুবাবু আলোচনায় বসেননি বলে তাঁর ঘনিষ্ঠদের বক্তব্য।
হলদিয়া-মেচেদা ৪১ নম্বর জাতীয় সড়কের কাছে বামুনিয়া মৌজায় ২০০৪-’০৬ সালে, লক্ষ্মণবাবু চেয়ারম্যান থাকাকালীনই ভূমি-দফতরের মাধ্যমে ডেসিমেল-পিছু ৪২০০ টাকা ক্ষতিপূরণ দিয়ে ৪৭.৬২ একর জমি অধিগ্রহণ করেছিল এইচডিএ। জমিদাতা কৃষজীবীদের অভিযোগ, তাঁরা ন্যায্য ক্ষতিপূরণ পাননি। এ কারণে ২০০৮-এ লক্ষ্মণবাবুর আমলে এইচডিএ ওই জমিতে শিল্প গড়ায় উদ্যোগী হলে বাধাও দেন তাঁরা। সে সময়ে শুভেন্দুবাবু-সহ তৃণমূল নেতারাই ‘ক্ষুব্ধ’ জমিদাতাদের পাশে দাঁড়িয়েছিলেন। সেই জমি-আন্দোলনে নেতৃত্ব দেওয়া রামকৃষ্ণ দাসই এখন ইটামগরা-২ গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রধান। ওই জমিরই উত্তর দিকের ২ একরে ‘ট্রমা সেন্টার’ গড়ায় উদ্যোগী হয়েছিল এইচডিএ। জমিদাতাদের দাবি ছিল, ওই জমির কিছু দূরে একটি বেসরকারি শিল্পগোষ্ঠী ১২ হাজার টাকা ডেসিমেল দরে জমি কিনেছে। তাই, তাঁদেরও ডেসিমেল-পিছু অন্তত ১৫ হাজার টাকা দেওয়া হোক। আগে দেওয়া ৪২০০ টাকার অতিরিক্ত ১০-১১ হাজার টাকা বাড়তি দাবি করেছিলেন তাঁরা। কিন্তু এইচডিএ প্রকল্পটিই আর বামুনিয়ায় করবে না ঠিক করায় জমিদাতারাও জমির দখল না ছেড়ে চাষাবাদ চালানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছেন।


First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.