|
|
|
|
জমি-লিজ বিতর্ক |
হাইকোর্টে আগাম জামিনের আর্জি তমালিকা পণ্ডাশেঠের |
নিজস্ব সংবাদদাতা • কলকাতা ও হলদিয়া |
লক্ষ্মণ শেঠের পরে এ বার হাইকোর্টের শরণাপণ্ণ লক্ষ্মণ-জায়া তমালিকা পণ্ডাশেঠ।
নন্দীগ্রাম নিখোঁজ-কাণ্ডের মামলায় হাইকোর্ট গত ১৩ জুলাই জামিন মঞ্জুর করে লক্ষ্মণবাবুর। তার কয়েক দিনের মধ্যেই হলদিয়া উন্নয়ন পর্ষদ (এইচডিএ) বেআইনি ভাবে জমি লিজ দেওয়া সংক্রান্ত অভিযোগে হলদিয়ার পুরপ্রধান তমালিকাদেবীর নামে ফৌজদারি মামলা রুজু করে। মামলা রুজুর দিন, সেই ২৩ জুলাই থেকেই তিনি ‘আত্মগোপন’ করেছেন। অবশেষে আগাম জামিনের জন্য হাইকোর্টেরই দ্বারস্থ হলেন লক্ষ্মণ-জায়া। চলতি সপ্তাহেই তাঁর আবেদনটির শুনানি হওয়ার কথা।
এ দিনই আবার পুরপ্রধান কেন পুরসভায় আসছেন না, সে প্রশ্ন তুলে হলদিয়া পুরভবনের সামনে দলের পতাকা ছাড়াই বিক্ষোভ দেখান এলাকায় পরিচিত তৃণমূল কর্মী-সমর্থকেরা। বিক্ষোভের জেরে পুরভবনে ঢুকতে পারেননি সিপিআইয়ের উপ-পুরপ্রধান নারায়ণ প্রামাণিকও। নারায়ণবাবুর বক্তব্য, “আমাকে পুরসভায় ঢুকতে বাধা দেওয়া হল। এ ভাবে উন্নয়নেই বাধা তৈরি করা হচ্ছে। আমরা পুরসভা সচল রাখার সব রকম চেষ্টা করছি।”
এইচডিএ-র (যার চেয়ারম্যান তৃণমূল সাংসদ শুভেন্দু অধিকারী) অভিযোগ, দেভোগে সুভাষ সরোবর সংলগ্ন ৯.৬৮ একর জমি (জে এল নম্বর ১৪৯) ২০১০-এ একটি বেসরকারি সংস্থাকে বছরে ২ লাখ ২৫ হাজার টাকায় ৩০ বছরের লিজ-চুক্তিতে দেয় পুরসভা। কিন্তু সে সময়ে ওই জমির উপরে কোনও অধিকারই পুরসভার ছিল না। ওই সময়েও পুরপ্রধান ছিলেন তমালিকাদেবীই। এইচডিএ-র সিইও উলগানাথনের বক্তব্য, “পুরসভা অবৈধ ভাবে জমি লিজে দিয়েছিল। তাই পুরসভার বিরুদ্ধে পুলিশে
অভিযোগ করেছি।”
জেলা প্রশাসন সূত্রের খবর, ১৯৯৪ সালে ১০ বছরের চুক্তিতে ওই জমি পেয়েছিল হলদিয়া পুরসভা (তখন অবশ্য ‘নোটিফায়েড অথরিটি’)। পূর্ব মেদিনীপুরের অতিরিক্ত জেলাশাসক সুমন হাওলাদারের বক্তব্য, “যতটুকু জানি, পুরসভার সঙ্গে ২০০৪-এর পর ফের আর চুক্তি হয়নি এইচডিএ’র। তাই জমিটি এইচডিএ-র।” তবে উপ-পুরপ্রধান নারায়ণ প্রামাণিকের বক্তব্য, “আমি যতটুকু জানি, ওই জমি এইচডিএ পুরসভাকে চুক্তিতে দিয়েছিল। মাঝে দীর্ঘমেয়াদি লিজের জন্যও চুক্তি হয়েছিল বলেই জানি। তাই আমরাও একটি সংস্থাকে লিজে দিয়েছিলাম।”
আর নন্দীগ্রাম-মামলায় সোমবার হলদিয়া আদালতে হাজিরা দিতে এসে লক্ষ্মণবাবুর মন্তব্য, “পুরসভায় তো আজও ভাঙচুর হচ্ছে শুনলাম। আপনারাই দেখুন। কী
বলার আছে!”
অন্য দিকে, এইচডিএ-র চেয়ারম্যান শুভেন্দুবাবুর বক্তব্য, “আইন অনুযায়ীই পদক্ষেপ করেছি। পুরপ্রধান যদি অন্যায় না করে থাকেন, তবে পুরসভায় আসছেন না কেন?” শুভেন্দুবাবু এ দিন লক্ষ্মণবাবুর বিরুদ্ধেও ফের আইনি পদক্ষেপের
ইঙ্গিত দিয়েছেন।
এইচডিএ-র বর্তমান চেয়ারম্যানের অভিযোগ, “শিল্প-সংক্রান্ত গবেষণার স্বার্থে ‘রিসার্চ অ্যান্ড ডেভলপমেন্ট সেন্টার’ ও ‘টুল-রুম’ গড়ার জন্য ২০০৮ সালে কেন্দ্রীয় শিল্প ও বাণিজ্য মন্ত্রকের কাছ থেকে প্রায় ৮ কোটি টাকা পেয়েছিল এইচডিএ। তদানীন্তন চেয়ারম্যান লক্ষ্মণ শেঠ ওই দুই কেন্দ্র নির্মাণে নিজের স্বেচ্ছাসেবী সংস্থা আইকেয়ার-কেই বরাত পাইয়ে দেন। ওই দুই কেন্দ্র ব্যবহারের ক্ষেত্রেও অন্যায় ভাবে শুধু আইকেয়ার-ই সুযোগ পায়। এই নিয়ে সিআইডি বা সিবিআই তদন্ত চেয়ে রাজ্য নগরোন্নয়ন দফতরে চিঠি পাঠাচ্ছি আমরা (এইচডিএ নগরোন্নয়ন দফতরেরই অধীন)।”
আইকেয়ার-এর সম্পাদক আশিস লাহিড়ির অবশ্য দাবি, “ওই দুই কেন্দ্রে আমাদেরও ৩২ শতাংশ শেয়ার রয়েছে। শিল্প-সংস্থাগুলির ব্যবহারের ক্ষেত্রেও কিন্তু কোনও বাধা নেই।” |
|
|
|
|
|