উত্তর-পূর্বে নজরদারি
কলকাতায় অফিস খুলতে জমি চাইল এনআইএ
লকাতায় পুরোদস্তুর অফিস খুলতে চাইছে ন্যাশনাল ইনভেস্টিগেশন এজেন্সি (এনআইএ)। তার জন্য রাজারহাটে জমি চেয়ে রাজ্য স্বরাষ্ট্র দফতরের কাছে আর্জি জানিয়েছে ওই জাতীয় তদন্তকারী সংস্থা। ইতিমধ্যে এনআইএ-র আইজি সঞ্জীবকুমার সিংহ মহাকরণে স্বরাষ্ট্রসচিব বাসুদেব বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে দেখা করে  এনআইএ-র পরিকল্পনার খুঁটিনাটি জানিয়ে গিয়েছেন।
কেন্দ্রীয় স্তরে জাতীয় সন্ত্রাস দমন কেন্দ্র (এনসিটিসি) তৈরি নিয়ে আগেই আপত্তি জানিয়েছেন রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সেই কারণে বেশ সতর্ক হয়েই পা ফেলতে চাইছে এনআইএ। তাদের প্রস্তাব, কলকাতায় অফিস তৈরির অনুমতি পেলে অধিকাংশ অফিসারকে পশ্চিমবঙ্গ থেকেই ডেপুটেশনে নেওয়া হবে। কারণ হিসেবে এনআইএ বলেছে, কাজের ধরন অন্য রকম হলেও নিজের রাজ্যে থাকার সুবাদে অফিসারেরা আশানুরূপ সাফল্য পাবেন।
আপাতত পুলিশ সুপার পদমর্যাদার এক জন অফিসারকে মাথায় রেখে দু’জন ডিএসপি ও জনা দশেক সাব ইনস্পেক্টকে নিয়ে কাজ শুরুর পরিকল্পনা রয়েছে এনআইএ-র।
ইতিমধ্যে মুম্বই, কোচি ও লখনউতে অফিস খুলেছে এনআইএ। জঙ্গি হানা ও সংগঠিত অপরাধ সংক্রান্ত মামলার তদন্ত করাই ওই সংস্থার মূল উদ্দেশ্য। সেই সূত্র ধরে বিভিন্ন রাজ্যের পুলিশকে গুরুত্বপূর্ণ তথ্যও সরবরাহ করে এনআইএ। স্বরাষ্ট্র দফতর সূত্রের খবর, বছর দেড়েক আগে মণিপুরের জঙ্গি গোষ্ঠী কাংলেই ইয়াওল কুন্না লুপ-এর প্রধান নিং থাওজায়েন টোম্বা পুলিশের হাতে ধরা পড়ে জলপাইগুড়ির মাটিগাড়ায়। তাকে জেরা করে কার্শিয়াং থেকে গ্রেফতার করা হয় আরও তিন জনকে। ওই মামলার তদন্তভার প্রথমে সিআইডি, পরে তুলে দেওয়া হয় এনআইএ-র হাতে। এবং এ রাজ্যে সেটি-ই ছিল ওই তদন্ত সংস্থার হাতে যাওয়া প্রথম মামলা।
জাল টাকা ছড়ানোর তদন্তে নেমেও মালদহ ও মুর্শিদাবাদ থেকে একাধিক লোককে গ্রেফতার করেছে এনআইএ। পুলিশ বলছে, হায়দরাবাদ থেকে এমনই একটি সূত্র পেয়ে মাস চারেক আগে মালদহের কালিয়াচক থেকে মোরজেন হুসেন ও রাকিব শেখ নামে জাল টাকা ছড়ানোর দুই কারবারিকে গ্রেফতার করে তারা। ওই মামলায় দেশের বিভিন্ন প্রান্তে যে ১১ জন ধরা পড়ে, তার মধ্যে আট জনই পশ্চিমবঙ্গের। স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের একটি সূত্র জানাচ্ছে, পাকিস্তান, বাংলাদেশ ও নেপালে ছেপে প্রতিদিন ৪০ লক্ষ ভুয়ো নোট মালদহ ও মুর্শিদাবাদের সীমান্ত দিয়ে এ রাজ্যে ঢোকে। এই জাল নোটই আগামী দিনে দেশের সবচেয়ে বড় বিপদ বলে মনে করছেন পুলিশকর্তারা। এর পাশাপাশি সম্প্রতি মাওবাদীদের টেকনিক্যাল কমিটির সদস্য সদানালা রামকৃষ্ণ ও তাঁর তিন সঙ্গীর কলকাতায় গ্রেফতার হওয়ার পিছনে এনআইএ-র গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রয়েছে বলে জানাচ্ছে পুলিশ।
স্বরাষ্ট্র মন্ত্রক সূত্রের খবর, মূলত উত্তর-পূর্বে বিভিন্ন জঙ্গি-হানার তদন্ত ও তাদের কাজকর্মের উপরে নজর রাখতেই পশ্চিমবঙ্গে তদন্ত-কেন্দ্র খুলতে চাইছে এনআইএ। এক পুলিশকর্তা বলেন, “অরুণাচল ও মণিপুরের নানা জঙ্গি গোষ্ঠীর সঙ্গে মাওবাদীদের ঘনিষ্ঠ যোগাযোগ রয়েছে। সেই যোগসূত্র পশ্চিমবঙ্গ ছাড়িয়ে চলে গিয়েছে ছত্তীসগঢ়, মহারাষ্ট্র ও ঝাড়খণ্ডে। আবার নামনি অসমের ন্যাশনাল ডোমোক্রেটিক ফ্রন্ট অব বড়োল্যান্ড নামে একটি জঙ্গি গোষ্ঠীর সঙ্গে নতুন করে গাঁটছড়া বেঁধেছে কেএলও।” দিল্লিতে বসে এই আন্তঃরাজ্য জঙ্গি-বৃত্তের হদিস পাওয়া কষ্টকর বলে মনে করছে এনআইএ।
ওই পুলিশকর্তা বলেন, “সব রাজ্যেই এমন কিছু ঘটনা ঘটে, যার শিকড় থাকে অন্য রাজ্যে। এ সব ক্ষেত্রে দ্রুত তদন্ত শেষ করতে সংশ্লিষ্ট রাজ্যের পুলিশকে নানা সমস্যার সম্মুখীন হতে হয়। সমন্বয়ের অভাবে বহু ক্ষেত্রে মামলাগুলো থমকে থাকে। জাতীয় সংস্থা হওয়ার কারণে সহজেই ওই গণ্ডি পেরতে পারে এনআইএ।”



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.