একপেশে সিএবি নির্বাচন জিতে ওঠার অনেক আগেই জগমোহন ডালমিয়া ফোনে ধরলেন কপিল দেব-কে! ভারতীয় বোর্ডের সঙ্গে মিটমাট হয়ে যিনি ফের ক্রিকেটের মূলস্রোতে ফেরার অপেক্ষায়। শনিবার সকালে ডালমিয়া ফোনে কপিলকে বললেন, “শোনো তোমাকে কলকাতায় আসতে হবে। বাংলার ক্রিকেটকে সাহায্য করতে হবে।” তখনই কি তিনি নিশ্চিত ছিলেন যে, নির্বাচন জিতছেন?
ডালমিয়া বনাম সমর পাল সিএবি প্রেসিডেন্ট পদের নির্বাচনী ফলাফল প্রকাশিত হল অনেক পরে, সন্ধেবেলায়। আর সেই নির্বাচনে ডালমিয়া উড়িয়ে দিলেন সমর পালকে ১০৪-১৪ ভোটে। মাঝখানে সারা দিন ধরে নানা জল্পনা চলল। কিন্তু ফলাফলে কোনও চমক নেই। সিএবি-র মোট ভোটার ১২১। ভোটদানে বিরত থাকল গ্রিয়ার এবং তালতলা একতা। বালক সংঘের সঙ্গে মামলা চলছে বলে তাদের ভোটদানের অধিকার ছিল না। এর মধ্যে গ্রিয়ারের প্রতিনিধি হচ্ছেন কেন্দ্রীয় রেলমন্ত্রী মুকুল রায়। যিনি এখন মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে সফর করছেন বলে এ দিন আসেননি।
শাসকগোষ্ঠীর অনেকেও এত বড় ব্যবধান আশা করেননি। বিশেষ করে যখন শোনা যাচ্ছিল তৃণমূল কংগ্রেসের একটা মহল এবং একদা প্রভাবশালী এক প্রাক্তন সিএবি প্রেসিডেন্ট ডালমিয়ার বিরুদ্ধে জোটবদ্ধ হয়েছেন। শাসকগোষ্ঠীর এক কর্তা ব্যাখ্যা দিচ্ছিলেন, “জেলায় আমরা সুইপ করেছি। ইউনিভার্সিটি ভোট আমরা পেয়েছি। ক্লাবের ভোটব্যাঙ্ক ভাঙতে পারেনি। ওরা হিসেবটা ভুল করেছে।”
কপিলকে ঠিক কী ভূমিকায় আনা হবে এখনও পরিষ্কার নয়। তবে যা ইঙ্গিত তাতে ছোট মেয়াদের পেস বোলিং ক্যাম্পের জন্য আনার চেষ্টা হচ্ছে। সম্ভবত দিন পনেরো করে বছরে দু’তিন বার তিনি এলেন। সেখানে বাংলার উদীয়মান, তরুণ পেসারদের প্রশিক্ষণ দেওয়ার পাশাপাশি দিন্দা, সামিদেরও তিনি দেখিয়ে দিয়ে গেলেন। বেদীকে আনার চেষ্টা হলেও জম্মু-কাশ্মীরের সঙ্গে যুক্ত থাকায় তাঁর আসা নিয়ে কিছুটা জটলা তৈরি হয়েছে। কপিল কি আসবেন? এক প্রভাবশালী সিএবি কর্তা বললেন, “আসার সম্ভাবনা খুবই উজ্জ্বল।” আর এক প্রাক্তন ভারতীয় অলরাউন্ডারের সঙ্গেও ডালমিয়া এ দিন কথা বলেছেন বলে খবর।
অন্যান্য পদে কোনও নির্বাচন হয়নি। বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় জিতে গেলেন শাসকগোষ্ঠীর সব প্রার্থী। যুগ্ম-সচিব পদে থেকে গেলেন সুজন মুখোপাধ্যায়। নতুন যুগ্ম-সচিব হলেন সুবীর (বাবলু) গঙ্গোপাধ্যায়। যুগ্ম-সচিবের চেয়ার ছেড়ে কোষাধ্যক্ষ হলেন বিশ্বরূপ দে। চার ভাইস প্রেসিডেন্ট থেকে গেলেন অলোক নন্দী, মলয় ঘোষ, শম্ভুনাথ পোদ্দার এবং সুভাষ কুণ্ডুু। শোনা যাচ্ছে, ক্রিকেটের ওপর জোর দিতে ক্রিকেট কমিটিতে সদস্য বাড়ানো হতে পারে।
ক্রিকেট কমিটির চেয়ারম্যানও কি জানতেন সিএবি নির্বাচনের ভবিতব্য? বাবা চণ্ডী গঙ্গোপাধ্যায় অসুস্থ বলে বার্ষিক সাধারণ সভা শুরু হয়ে যাওয়ার পরে সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায় ঢুকলেন। মিনিট কুড়ি মতো থেকে তার মধ্যেই ভোট দিয়ে বেরিয়ে গেলেন। আর তার মধ্যেই মনোজ তিওয়ারিকে দীর্ঘ উপেক্ষা নিয়ে প্রশ্ন করা হলে সৌরভ বললেন, “মনোজ খেলবে, ঠিকই খেলবে।” একটু পরে নির্বাচন জিতে উঠে গলায় মালা পরা ডালমিয়া যোগ করলেন, “মনোজ কেন সেঞ্চুরি করেও বাইরে বসে থাকছে, সেটা নিয়ে অবশ্যই খোঁজ নেব। আমরা যুদ্ধ করতে চাই না কিন্তু একই সঙ্গে বলতে চাই, বাংলার কোনও তরুণের কেরিয়ার ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে সেটাও চুপচাপ বসে দেখব না!” |