|
|
|
|
|
মেঘ দিন তাও ভিতর রঙিন
বছরের মধ্যিখান, আকাশেও যখন তখন সূর্য ভ্যানিশ। সেই দেখেই
মনটাও
কি মেঘলা হয়?
তাতে খুশির রোদ ছেটাতে উপায় কিন্তু নিজেকে ভালবাসা।
প্রচুর রং
আর সাজগোজ।
ব্যস, নিমেষে ঝলমলে চনমনে। জানালেন অনিরুদ্ধ চাকলাদার |
|
|
মন খারাপ লাগলে, প্রথমে চেষ্টা করতে হবে চার পাশের পরিবেশটা একটু বদলে নেওয়ার। কিন্তু বেশির ভাগ সময় সেটি সম্ভব হয় না। সেই কারণে দ্বিতীয় ধাপে নিজেকে একটু বেশি পরিমাণে যত্নআত্তি করতে হবে, ইংরেজিতে যাকে বলে ‘সেল্ফ প্যাম্পারিং’। হিসেবের বাইরে কিছু কেনাকাটা করা (অবশ্যই নিজের জন্য), ইচ্ছে মতো ঘুরে বেড়ানো ইত্যাদি। এ সবের মধ্য দিয়ে আপনার মেজাজের কিছুটা পরিবর্তন হবে। তখন আয়নার সামনে সাজতে ভাল লাগবে। এ ক্ষেত্রে রঙের একটি ভূমিকা আছে। আপনি যদি মুড অনুযায়ী উপযুক্ত রং বাছেন, তবে আপনি জাঁহাপনা খাঞ্জা খাঁ। কিন্তু ভুল রং বাছলে আপনার মেজাজ খুবই খারাপ থাকবে। উজ্জ্বল রং আপনার মনও ভাল রাখবে, আবার অনেক আত্মবিশ্বাসীও করে তুলবে। প্রথমে আপনার একঘেয়ে পুরনো চুলের স্টাইলটি বদলে ফেলুন। দেখবেন, একটু অন্য রকম লাগছে। |
|
অন্যরা প্রশংসা করলে আপনার ভাল লাগবে। এই ভাল লাগাই আপনার মুড অনেকটা পরিবর্তন করবে। স্পা, ফেশিয়ালের জন্য কিছুটা সময় দিন। আপাতদৃষ্টিতে এগুলিকে উপযুক্ত কারণ বলে মনে না হলেও সবগুলি মিলিয়ে মনে হবে, দিনটা এক্কেবারে আপনার, মানে সব হিসেব মতো হচ্ছে। আপনার যদি সালোঁতে যাওয়ার সময় না থাকে, বাড়িতেই অ্যারোমা বাথ নেওয়ার চেষ্টা করুন। বাজার থেকে আপনার পছন্দ মতো একটি অ্যারোমা অয়েল কিনে (জেসমিন, রোজ, ল্যাভেন্ডার, ইউক্যালিপটাস) জলে মিশিয়ে চান করুন। খুব ভাল লাগবে।
সামাজিক অনুষ্ঠানের জন্য উজ্জ্বল রং বাছুন, যেমন কমলা, উজ্জ্বল গোলাপি, লাল অথবা সবুজ। কালো, চারকোল, ছাই রং এগুলি বাদ দিন। উজ্জ্বল রঙের পোশাকের সঙ্গে মানানসই পিঙ্ক বা বেজ কালারের আইশ্যাডো লাগান। কোল পেনসিল এবং মাস্কারা অবশ্যই লাগাবেন। লিপস্টিক উজ্জ্বল রঙের বাছুন।
এই পরামর্শগুলি শুধুমাত্র যে মেয়েদের জন্যই, তা নয়। ছেলেরাও একই ভাবে চুলের স্টাইল পাল্টে নিজেকে অন্য রকম করে তুলুন, এবং যত্নের জন্য সময় দিন।
সব শেষে এবং সব থেকে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হল পারফিউম। এই সময় আপনার বেশি পছন্দের পারফিউম ব্যবহার করুন। সুন্দর একটি সুগন্ধি আপনার মন এবং ব্যক্তিত্বের সম্পূর্ণ পরিবর্তন করবে।
|
বৃষ্টি, রোদ ও মন খারাপ |
|
জয়রঞ্জন রাম
মনোচিকিৎসক |
মন খারাপ আর সাজগোজ, দু’টির মধ্যে ওল আর তেঁতুলের সম্পর্ক। মন খারাপ থাকলে কিছুতেই সাজগোজ করে বাইরে বেরোতে ইচ্ছা করে না। বিশেষত, সামাজিক অনুষ্ঠান, যেখানে সকলের সঙ্গে ন্যূনতম হাসিটুকু বজায় রেখে কুশল বিনিময় করতে হবে, ইচ্ছে না থাকলেও বলতে হবে তোমাকে কী সুন্দর লাগছে, কোন দোকান থেকে শাড়িটা কিনেছ? বিশেষত বর্ষাকালে নারী পুরুষ নির্বিশেষে একটা মন খারাপের ট্রেন্ড চলে। সূর্যের ঝলমলে রোদ্দুরের অভাব মন খারাপের একটি বড় কারণ। বর্ষাকালে প্রায়ই মেঘলা থাকে আর এই মেঘলা দিনের সঙ্গে কিচ্ছু-ভাল্লাগে-না’র সম্পর্ক খুব গভীর। এ ছাড়া বিশেষত ভারতে, বৃষ্টির সঙ্গে মন খারাপের যোগসূত্র কবি কালিদাসের সময় থেকে শুরু হয়েছে। আমাদের রক্তে এই সাহিত্য সংস্কৃতির প্রভাব এতটাই বেশি যে আমরা এগুলি থেকে বেরিয়ে আসতে পারি না। মন খারাপ ভুলে কাজে মন দিতে পারি না। ২০০৮ সালে ইউরোপে ১৮ মাস যাবৎ ১৪,৫০০ জনের মধ্যে একটি গবেষণা চালানো হয়, গবেষণার বিষয় ছিল ‘বৃষ্টি, রোদ এবং মন খারাপ’। বিশ্লেষণ করে দেখা গেছে বৃষ্টির সঙ্গে মন খারাপের কোনও সম্পর্ক নেই। রোদের সঙ্গে মন ভাল থাকার একটি সম্পর্ক আছে। ঝলমলে রোদ্দুরে মন যত খুশি থাকে মেঘলা দিনে ঠিক বিপরীত। এ ছাড়া এই সময়টি হল বছরের মাঝামাঝি, বর্ষশুরুতে অনেক পরিকল্পনা থাকে কিন্তু ছ’মাস পরে যখন দেখা যায় অনেক কিছুই হয়নি তখন একটু হতাশ লাগে। যদিও সারা বছর এই বিশ্লেষণটি চলে, কিন্তু এই সময় একটু বেশিই হয়। আর একটি বড় কারণ বর্ষা, চার পাশে সবুজের সমারোহ। অর্থাৎ নতুনের জন্ম হচ্ছে ঠিক, কিন্তু এর পাশাপাশি পুরনোকে আমরা হারাচ্ছি। এই হিসেবটি আমাদের অবচেতনে চলতে থাকে, তাই সরাসরি টের না পেলেও তার একটি প্রভাব পড়ে। |
|
মডেল: সুদর্শনা সেনগুপ্ত, ছবি: আশিস সাহা
সাক্ষাৎকার: কস্তুরী মুখোপাধ্যায় ভারভাদা |
|
|
|
|
|