রেশন ব্যবস্থাতেও পরিবর্তন আনতে উদ্যোগী হল রাজ্য সরকার। স্বনির্ভর গোষ্ঠী ও সমবায় সংস্থার হাতে নতুন রেশন দোকান তুলে দেওয়া হবে। যে সমস্ত এলাকায় স্বনির্ভর গোষ্ঠী ও সমবায় সংস্থা পাওয়া যাবে না শুধুমাত্র সেখানে ব্যক্তি মালিকানায় ওই পরিষেবার ব্যবস্থা থাকবে। শুক্রবার শিলিগুড়িতে উত্তরবঙ্গের ছয় জেলার খাদ্য সরবরাহ আধিকারিকদের সঙ্গে বৈঠকের পরে ওই সিদ্ধান্তের কথা জানান খাদ্য সরবরাহ মন্ত্রী জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক। তিনি বলেন, “এখন থেকে নতুন রেশন দোকান খোলার ক্ষেত্রে স্বনির্ভর গোষ্ঠী ও সমবায় সংস্থাকে অগ্রাধিকার দেওয়া হবে। সেটা যেখানে সম্ভব হবে না সেখানে ব্যক্তি মালিকানার কথা ভাবা হবে।” খাদ্য সরবরাহ দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, ইতিমধ্যে জঙ্গল মহলে ৬৯টি মডেল রেশন দোকান তৈরি হয়েছে। সেগুলি স্বনির্ভর গোষ্ঠী পরিচালনা করবে। আগামী ১ অক্টোবর দোকানগুলি চালু হবে। বিশেষ পরিচিতির জন্য দোকানগুলিতে বিশেষ রং করার কথা ভাবা হয়েছে। কিন্তু কী রং হবে সেটা এখনও ঠিক হয়নি। |
শুধু স্বনির্ভর গোষ্ঠী ও সমবায় সংস্থাকে দিয়ে পরিচালনা নয়। উপভোক্তার সংখ্যাও নির্দিষ্ট থাকবে। এখন থেকে একটি রেশন দোকানে ৫ হাজারের বেশি কার্ড রাখা যাবে না। সেই সঙ্গে পরিষেবার মান ভাল রাখতে কড়া নজরদারি চলবে। মন্ত্রী বলেন, “ধূপগুড়িতে রেশনে পচা চাল সরবরাহের অভিযোগ পেয়েছি। আরও কিছু এলাকা থেকেও ওই অভিযোগ এসেছে। এটা মেনে নেওয়া হবে না। সোমবার থেকে সেন্ট্রাল ভিজিলেন্স টিম কোচবিহার, জলপাইগুড়ি-শিলিগুড়ি র বিভিন্ন রেশন দোকানে তল্লাশি করবে।” এ দিকে বাড়তি খাদ্যশস্য মজুতের জন্য ঘর ভাড়া নিয়ে গুদাম খোলার সিদ্ধান্ত নিয়েছে খাদ্য সরবরাহ দফতর। এ জন্য দফতর থেকে বিধায়কদের ঘর দেখার জন্য অনুরোধ করা হয়েছে। মন্ত্রী বলেন, “এ বার রেকর্ড পরিমাণ ধান উৎপাদন হয়েছে। ২০ লক্ষ টন ধান কেনার লক্ষ্যমাত্রা রয়েছে। ইতিমধ্যে বেশির ভাগ ধান কেনা হয়েছে। কিন্তু গুদাম ঘরের সমস্যার জন্য তা সংরক্ষণের ক্ষেত্রে সমস্যা হচ্ছে। ওই সমস্যা সমাধানের জন্য উত্তরবঙ্গের ৬ জেলার বিধায়কদের ঘর দেখতে বলা হয়েছে।” তবে ভাড়া ঘরে গুদাম খোলা হলেও ভাড়া বাড়িতে অফিস রাখতে নারাজ খাদ্য সরবরাহ দফতর। নিজস্ব বাড়িতে অফিস সরিয়ে আনতে খাদ্য ভবন গড়ে তোলার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। মন্ত্রী জানান, জলপাইগুড়িতে ভবন তৈরির কাজ শেষ। মুখ্যমন্ত্রী সেটা উদ্বোধন করবেন। কোচবিহার, মাথাভাঙা, তুফানগঞ্জে ও দিনহাটাতেও খাদ্য ভবন গড়ে তোলার কাজ শুরু হয়েছে। এ দিনের বৈঠকে খাদ্য আধিকারিকরা ছাড়াও উপস্থিত ছিলেন উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন মন্ত্রী গৌতম দেব, গ্রন্থাগার মন্ত্রী আবদুল করিম চৌধুরী, কারামন্ত্রী শঙ্কর চক্রবর্তী প্রমুখ। |