দক্ষিণ কলকাতা
মহেশতলা
আশঙ্কার সেতু
প্রায় পঁচিশ মিটার দীর্ঘ সেতু। চওড়ায় প্রায় ছ’ফুট। ব্রিজের নীচের স্তম্ভগুলি ভেঙে গিয়ে হাল খারাপ হয়ে গিয়েছে সেতুর। বাসিন্দাদের আশঙ্কা, রুগ্ণ সেতু ভেঙে বড়সড় দুর্ঘটনাও ঘটতে পারে। মহেশতলা ছ’নম্বর ওয়ার্ডের ঘোষপাড়া-কানখুলি সেতুর বেহাল দশা নিয়ে তাই আতঙ্কিত এলাকার বিধায়ক, কাউন্সিলর থেকে শুরু করে বাসিন্দারাও।
মহেশতলা পুর এলাকার ছ’নম্বর ওয়ার্ডে ঘোষপাড়া-কানখুলি সেতুটি মণিখালি খালের উপরে অবস্থিত। সেতুটির একপাশে মহেশতলা পুরসভার ছ’নম্বর ওয়ার্ড এবং অন্য দিকে রয়েছে মহেশতলার আট নম্বর ওয়ার্ড। সেতুটি দিয়ে প্রতিনিয়ত বহু মানুষ এবং যান চলাচল করে। কিন্তু বর্তমানে সেতুটির স্তম্ভগুলিতে ফাটল ধরেছে। একটি স্তম্ভে এমন ফাটল ধরেছে যে তার মধ্য দিয়ে জল বইছে। ব্রিজের গায়ের রেলিংগুলিও বিভিন্ন জায়গায় ভেঙে গিয়েছে।
এলাকার দুই কাউন্সিলর এবং বাসিন্দাদের কাছ থেকে জানা গেল, সেতুটি সারানোর দায়িত্ব সেচ দফতরের। কিন্তু বেহাল এই দশা নিয়ে বার বার অভিযোগ জানিয়েও কোনও লাভ হয়নি। ছ’নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর শেখ সিরাজুল ইসলাম জানালেন, সেতুটি আগে পাচুর পঞ্চায়েতের আওতায় ছিল। পঞ্চায়েতের অধীনে থাকাকালীনই শেষ বারের মতো সেতুটি ভাল করে সারানো হয়। এর পরে ছোটখাটো সারাই হলেও স্তম্ভগুলি মেরামতির কোনও কাজ হয়নি। পরে এলাকাটি মহেশতলা পুরসভার আওতায় আসে।
বর্তমানে এই সেতুটির উপর দিয়ে হাজার হাজার যানবাহন যাতায়াত করে। সেই সঙ্গে লোকজনের যাতায়াতও বেড়েছে। সেতুটির উপর দিয়ে মহেশতলার ৮ নম্বর ওয়ার্ড, আমরিতলা বাজার, আক্রা স্টেশন, ডাকঘর, বিষ্ণুপুর হয়ে ডায়মন্ড হারবার যাওয়া যায়। এলাকার বাসিন্দা পিনাকী ঘোষের কাছ থেকে জানা গেল, গত কয়েক বছর এলাকার মানুষের জীবিকায় বদল এসেছে। বেড়েছে কাপড়ের ব্যবসা। ফলে মহেশতলা থেকে বজবজ কিংবা ডায়মন্ড হারবার যাওয়ার জন্য এলাকার মানুষের কাছে এই সেতুর গুরুত্ব বেড়েছে। কিন্তু ব্যবহার বাড়লেও সেতুর রক্ষণাবেক্ষণের দিকে সেচ দফতর নজর দেয়নি বলে অভিযোগ উঠেছে।
সেতুটি নিয়ে একই বক্তব্য মহেশতলা পুরসভার চেয়ারম্যান তৃণমূলের দুলাল দাসের। তিনি বলেন, “ওই সেতুটির ব্যবহার আগের তুলনায় অনেক বেড়েছে। কিন্তু বর্তমানে এর হাল এতটাই খারাপ হয়ে গিয়েছে যে খুব তাড়াতাড়ি সারানো দরকার। সেতুটি যে হেতু সেচ দফতরের, তাই সারানোর দায়িত্বও ওদের। কমপক্ষে এক কোটি টাকা খরচ পড়বে এটি সারাতে।”
সেতুটি দু’টি বিধানসভা এলাকার মধ্যেও পড়েছে। মহেশতলা বিধানসভা এলাকার কস্তুরী দাস বলেন, “আমি অনেক বার সেতুটি সারানোর জন্য বলেছি। সেচ দফতরকেও চিঠি দিয়ে আবেদন করেছি যাতে খুব শীঘ্রই সেতুটি সারানো হয়।” সেচ দফতরের রাষ্ট্রমন্ত্রী শ্যামল মণ্ডল বলেন, “আমাকে স্থানীয় বিধায়ক কস্তুরী দাস সেতুটি সারাইয়ের ব্যাপারে চিঠি দিয়েছেন। চেষ্টা করছি যাতে খুব শীঘ্রই ওটি সারানোর কোনও ব্যবস্থা করা যায়।”

ছবি: পিন্টু মণ্ডল




অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.