যেন নৌকায় বসে আছে ওঁরা। শরীর দুলছে। লাফিয়ে উঠতে আতঙ্কে চিৎকার করছেন কেউ। কোচবিহার জেলা জুড়ে বেহাল রাস্তায় চলা বাসে নিত্যযাত্রীদের দশা। ঝক্কি সামাল দিতে গিয়ে ভুক্তভোগীরা অসুস্থ হচ্ছেন। যন্ত্রাংশ ভেঙে বিকল হচ্ছে বাস। ওই ঘটনায় ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে বিভিন্ন মহলে। জেলার বাসিন্দা তথা রাজ্যের বনমন্ত্রী হিতেন বর্মন বলেন, “জাতীয় সড়কের অবস্থা নিয়ে মুখ্যমন্ত্রী নিজে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন। সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য চাপ দেওয়া হচ্ছে।”
স্থানীয় বাসিন্দাদের অভিযোগ, কোচবিহারের গুরুত্বপূর্ণ অন্তত ২০টি রুটে যাতায়াতের রাস্তা বেহাল হয়ে পড়েছে। কোচবিহার-দিনহাটা, কোচবিহার-তুফানগঞ্জ, তুফানগঞ্জ-বক্সিরহাট, পুন্ডিবাড়ি-কোচবিহার, দিনহাটা-কুর্শাহাট, দিনহাটা-চৌধুরীহাট, মাথাভাঙা-শীতলখুচি, তুফানগঞ্জ-বালাভূত, সিতাই-শীতলখুচি, হাজরাহাট-মাথাভাঙা রুটের রাস্তা ভেঙে চুরমার হয়েছে। রাজ্য ও জাতীয় সড়কের বেহাল দশার জন্য দুর্ঘটনাও বেড়েছে। পরিস্থিতির কথা সড়ক কর্তৃপক্ষকে কয়েকবার জানানো হয়েছে। কিন্তু লাভ হয়নি। |
কোচবিহার জেলা মিনিবাস অ্যাসোসিয়েশনের সহকারী সম্পাদক সন্তোষ সাহা বলেন, “জেলা জুড়ে বেশিরভাগ রাস্তার অবস্থা খারাপ। কয়েকটি রুটে বাস চলাচলের পরিস্থিতি নেই। ওই পরিস্থিতিতে বাস চলাতে গিয়ে ক্ষতি হচ্ছে। তেলের খরচ বেড়েছে।” উত্তরবঙ্গ রাষ্ট্রীয় পরিবহণ নিগম কর্তৃপক্ষ বেহাল রাস্তার সমস্যায় জেরবার। নিগমের কয়েকজন আধিকারিক জানান, বাসের যন্ত্রাংশ ভাঙছে। টায়ার নষ্ট হচ্ছে।”
নিত্যযাত্রীদের অভিযোগ, ৩১ নম্বর জাতীয় সড়ক ধরে কোচবিহার থেকে তুফানগঞ্জ, বক্সিরহাট যাতায়াত করতে হয়। পুণ্ডিবাড়ি যাতায়াতেও ওই জাতীয় সড়ক ভরসা। বর্ষায় রাস্তার পিচ পাথর উঠে গিয়েছে। তল্লিগুড়ি, মারুগঞ্জ, রাজারহাট, লাঙলগ্রাম লাগোয়া এলাকায় সড়কে বিপজ্জনক গর্ত তৈরি হয়েছে। বৃষ্টির জল জমে ডোবার চেহারা নিচ্ছে। অন্যদিকে পূর্ত দফতরের কোচবিহার-চকচকা চেকপোস্ট রাস্তা ভেঙে চুরমার হয়েছে। দিনহাটা যাতায়াতের রাস্তার অবস্থাও উদ্বেগজনক। ধলুয়াবাড়ি, হরিণ চওড়ার কাছে রাস্তা খানাখন্দে ভরেছে। প্রাণ হাতে নিয়ে যাত্রীদের যাতায়াত করতে হচ্ছে। সমস্যার কথা অস্বীকার করেননি পূর্ত দফতরের কোচবিহারের এগজিকিউটিভ ইঞ্জিনিয়ার আশিস সাহা। তিনি বলেন, “কোচবিহার থেকে চকচকা চেকপোষ্ট ও দিনহাটাগামী রাস্তা সংস্কারের প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে। বৃষ্টি কমলে কাজ শুরু হবে। অন্য রাস্তাগুলিও মেরামত হবে।” |