ছেলেধরা সন্দেহে অজ্ঞাত পরিচয় এক যুবককে পিটিয়ে মারল উত্তেজিত জনতা। আর এই ঘটনার কিছুক্ষণ পর ফের আরেক যুবককে ছেলেধরা সন্দেহে ধরার জন্য তাড়া করেন উত্তেজিত গ্রামবাসীরা। ওই যুবক তাড়া খেয়ে স্থানীয় ব্লক অফিসে আশ্রয় নেন। তাঁকে ধরার গ্রামবাসীরা চড়াও হন ওই দফতরে। দফতরের কর্মীদের হাত থেকে যুবককে ছিনিয়ে নেওয়ার চেষ্টা করা হয় বলে অভিযোগ। পুলিশ এসে বাধা দেয়। এর পরেই উত্তেজিতা বাসিন্দারা বিডিও এবং পাশের পঞ্চায়েত সমিতির দফতরে হামলা চালান। ইঁট, পাথর ছোঁড়া শুরু হয়। শেষে লাঠিচার্জ করে লাভ না হওয়ায় পুলিশকে স্মোক গ্রেনেড ছুড়তে হয়। ঘটনায় পুলিশ একটি সুয়ো মোটো মামলা রুজু করে ১২ জনকে গ্রেফতার করেছে। বুধবার দুপুর থেকে বিকালে পরপর মালদহের হবিববপুর থানার হবিবপুর ব্লক ও পঞ্চায়েত অফিসে ঘটনাগুলি ঘটেছে। বিডিও অভিজিৎ ঘোষ পুলিশ শূন্যে গুলি চালিয়েছে বললেও জেলা পুলিশ কর্তারা তা মানতে চাননি। জেলা পুলিশ সুপার জয়ন্ত পাল বলেন,“ছেলেধরা সন্দেহে এক জনকে পিটিয়ে মারা হয়েছে। আরেকজনকে মারার চেষ্টা হয়। ওই যুবক ব্লক অফিসে ঢুকে পড়ে। গ্রামবাসীরা পুলিশের হাত থেকে ওই যুবককে ছিনিয়ে চেষ্টা করে। পুলিশের উপর হামলা হয়। শূন্যে গুলি নয়, ৩টি স্মোক গ্রেনেড ফাটিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে হয়।” তবে ওই যুবকের পরিচয় মেলেনি। উদ্ধার হয়নি হতের পরিচয়ও। পুলিশ সূত্রের খবর, হবিবপুর এলাকা থেকে সম্প্রতি কোনও শিশু নিখোঁজের ঘটনা ঘটেনি। কিন্তু কিছুদিন ধরেই এলাকায় ছেলেধরার গুজব রয়েছে। হবিবপুরের সিপিএম বিধায়ক খগেন মুর্মু বলেন, “কেউ বা কারা পরিকল্পনা করে ছেলেধরার গুজব হবিবপুরে রটিয়েছে। পুলিশের উচিত দ্রুত তাদের চিহ্নিত করা না হলে এ দিনের মত ঘটনা ফের ঘটতে পারে।” বাসিন্দারা জানান, এদিন দুপুর আড়াইটা নাগাদ পাবর্তীডাঙা গ্রামে ছেলেধরা সন্দেহে গনপিটুনি দিয়ে ওই যুবককে পিটিয়ে মারে। এই নিয়ে এলাকায় উত্তেজনা তৈরি হয়। পুলিশও আসে। বিডিও অফিসের কয়েক জন কর্মী জানিয়েছেন, ওই ঘটনার পর বিকালে দফতরের পাশেই এক যুবককে ফের একদল বাসিন্দা ছেলেধরা সন্দেহে তাড়া করেন। তিনি বিডিও অফিসে আশ্রয় নেন। তাঁকে একই চত্বরে থাকা পঞ্চায়েত সমিতির একটি ঘরে তালাবন্ধ করে রাখা হয়। গ্রামবাসীরা ওই যুবককে তাঁদের হাতে তুলে দেওয়ার দাবি জানান। বিডিও বলেন, “ওই যুবককে ছিনিয়ে নেওয়ার চেষ্টা হয়। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যাওয়ায় পুলিশ প্রথমে লাঠিচার্জ করে। পরেও গ্রামবাসীরা এলাকা থেকে না সরায় পুলিশ শূন্যে গুলি চালায়। এই ব্লকে শিশু চুরির কোনও ঘটনা ঘটেনি। অথচ চারদিকে গুজব রটছে।” |