এড্স সচেতনতা প্রসারে কবিগানের উদ্যোগ স্যাকোর |
নিজস্ব সংবাদদাতা • কাটোয়া |
“এ লড়াই বাঁচার লড়াই, জিতবই জিতব/ রাতের গভীর বৃন্ত থেকে সূর্য আনবই আনব”- এডস সচেতনতা বাড়াতে এই গানই বর্ধমানের গ্রামে গ্রামে গেয়ে চলেছেন কবিগান শিল্পী সনৎ ভট্টাচার্য। এক দিকে যখন এডস নিয়ে সচেতনতা বৃদ্ধির জন্য বর্ধমানের বিভিন্ন স্টেশনে রেড রিবন এক্সপ্রেস দাঁড়াচ্ছে, অন্য দিকে তখন বর্ধমানের গ্রামীণ এলাকায় একই উদ্দেশ্যে লোকশিল্পীরা পথে ঘাটে গান গেয়ে বেড়াচ্ছেন। রাস্তার ধারে দাঁড়িয়ে সেই গান শুনছেন পথচলতি মানুষ।
রাজ্য এড্স প্রতিরোধ নিয়ন্ত্রণ সংস্থা (স্যাকো) সূত্রে জানা গিয়েছে, এর আগেও নাটক বা ম্যাজিকের মাধ্যমে গ্রাম বাংলার মানুষকে সচেতন করার কর্মসূচি নেওয়া হয়েছিল। এ বারই প্রথম লোকশিল্পীদের মাধ্যমে এডস সচেতনতা বাড়ানোর কাজ করা হচ্ছে। স্যাকোর বর্ধমানের নোডাল অফিসার তথা জেলার উপ-স্বাস্থ্যআধিকারিক (২) শর্মিষ্ঠা মুখোপাধ্যায় বলেন, “লোকশিল্পীদের মাধ্যমে এডস সচেতনতা বাড়ানোর প্রয়াস এই প্রথম। আশা করি, আমাদের লক্ষ্য পূরণ হবে।” |
কাটোয়ার পুরসভা মোড়ে ছবিটি তুলেছেন অসিত বন্দ্যোপাধ্যায়। |
কাটোয়া, কালনা, বর্ধমানের ২১টি জায়গায় এক সপ্তাহ ধরে কবিগান করছেন সনৎবাবু। সঙ্গে রয়েছেন আরও চার জন। তাঁদের কেউ ঢোল বাজাচ্ছেন, কেউ আবার সনৎবাবুর সঙ্গে গলা মেলাচ্ছেন। বর্ধমান স্টেশন থেকে কাটোয়া বাসস্ট্যান্ড বা কাটোয়া কালনার আকন্দপুর, যেখানেই গান ধরছেন সনৎবাবু, লোক জমছে সেখানেই। স্যাকো সূত্রে জানা গিয়েছে, এই শিল্পীরা নিজেরাই গান লিখছেন, নিজেরাই সুর বসাচ্ছেন তাতে। গাইছেন, “সচেতন হলে পরে, এ রোগ আর হবে নারে/ ভবিষ্যতে জনমতকে এক করে এড্স মুক্ত ভারত গড়বই গড়ব”।
শিল্পীরা জানান, জনবহুল জায়গা তো বটেই, পাশাপাশি ১০০ দিন প্রকল্পের কাজের জায়গায় বা কর্মসূত্রে ভিন প্রদেশে থাকেন এমন লোকজনের মহল্লায় বিশেষ গুরুত্ব দিয়ে প্রচার চালাচ্ছেন তাঁরা।
স্যাকো সূত্রে জানা গিয়েছে, বর্তমানে টিভি, ইন্টারনেটের দুনিয়ায় এডস সচেতনতার জন্য বুলাদির প্রচার রয়েছে। কিন্তু গ্রাম বাংলায় কবিগানের জনপ্রিয়তা এখনও রয়েছে। তাই কবিগানের মধ্যে দিয়েই প্রচার চালানো হচ্ছে সেখানে। সনৎবাবুও বলেন, ‘‘আমরা প্রতিদিন প্রায় আড়াই হাজার লোকের সামনে গান গাইছি। অনেকেই এইচআইভি নিয়ে প্রশ্ন করছেন। তার উত্তরও আমরা দিচ্ছি।” তিনি জানান, এইচআইভি রোগীদের প্রতি ঘৃণা নয়, সহমর্মিতার হাত বাড়িয়ে দেওয়ার অনুরোধ করা হচ্ছে মানুষকে। |