গ্রামে বিদ্যুৎ পৌঁছলেও দাম
মিলছে না, সঙ্কটে সংস্থা
সাফল্যই এখন মাথাব্যথার কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে! গ্রামীণ বিদ্যুদয়ন প্রকল্পের কাজে নেমে এমনই উলটপুরানের মুখে রাজ্য বিদ্যুৎ বণ্টন সংস্থা।
সরকারি নির্দেশ মেনে গ্রামাঞ্চলে লক্ষ-লক্ষ পরিবারের কাছে বিদ্যুৎ পৌঁছে দেওয়া হচ্ছে। কিন্তু সংস্থা সূত্রের খবর, তাদের একটা বিরাট সংখ্যক বিদ্যুতের বিলই মেটাচ্ছে না। ফলে লোকসান বাড়ছে বণ্টন সংস্থার। আর আগামী দিনে গ্রামীণ বিদ্যুদয়ন প্রকল্প রাজ্যে যত ছড়িয়ে পড়বে, এই খাতে লোকসানের বহরও ধাপে-ধাপে বাড়বে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।
বিদ্যুৎ বণ্টন সংস্থার কর্তাদের একাংশের অভিযোগ, এমনিতেই গ্রামাঞ্চলে বিদ্যুৎ চুরি ঠেকানো যায় না। প্রচুর মানুষ বিদ্যুৎ ব্যবহার করেন হুকিং করে। এখন সরকারি ভাবে যে সমস্ত বিপিএল পরিবার বিদ্যুতের গ্রাহক হয়েছেন, তাদের অনেকেই বিদ্যুতের বিল মেটাচ্ছে না বা মেটাতে পারছে না। মাসে ২৫-৫০ টাকা বিদ্যুতের বিল হলেও তা অনাদায়ী হয়ে পড়ে থাকছে। এর ফলে প্রতি মাসে গড়ে ৫-৬ কোটি টাকা লোকসান হচ্ছে বণ্টন সংস্থার। বছর শেষে সেই অঙ্কটাই গিয়ে দাঁড়াবে কম-বেশি ৬০ কোটি টাকার কাছাকাছি। অর্থাৎ, গ্রাহক সংখ্যা বাড়লে বাৎসরিক ক্ষতির পরিমাণও বাড়বে।
ক্ষমতায় এসেই মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় নির্দেশ দিয়েছিলেন, গ্রামাঞ্চলে বিদ্যুৎ সংযোগ দেওয়ার কাজ দ্রুত শেষ করতে হবে। আর সেই কাজে কোনও অজুহাত শোনা হবে না। এর পরেই গত এক বছর ধরে গ্রামীণ বিদ্যুদয়ন প্রকল্পের কাজে জোর দেওয়া হয়। বিদ্যুৎ দফতর সূত্রে খবর, গত আর্থিক বছরে (২০১১-’১২) গ্রামাঞ্চলে ১৮ লক্ষেরও বেশি পরিবারকে বিদ্যুৎ সংযোগ দেওয়া হয়েছে। যার মধ্যে বিপিএল পরিবার ১০ লক্ষ, এপিএল পরিবার ৮ লক্ষ। চলতি আর্থিক বছরেও (২০১২-’১৩) বিপিএল-এপিএল মিলিয়ে সম-সংখ্যক পরিবারকে বিদ্যুৎ দেওয়া হবে বলে ঠিক হয়েছে। এর মধ্যে এপ্রিল থেকে জুলাই মাস পর্যন্ত ইতিমধ্যেই তিন লক্ষ পরিবার বিদ্যুৎ পেয়ে গিয়েছেন। গ্রামীণ বিদ্যুদয়নে অন্য রাজ্যগুলির তুলনায় পশ্চিমবঙ্গের এই কাজ যে একটা বড় সাফল্য, সন্দেহ নেই। কিন্তু এই সাফল্যই লোকসানের বহর বাড়িয়ে সরকারের মাথাব্যথার কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে।
কেন্দ্রীয় বিদ্যুৎ নিয়ন্ত্রণ কমিশনের হিসেব অনুযায়ী,গ্রামাঞ্চলে বিদ্যুৎ সংযোগ দিয়ে রাজ্যগুলির ন্যূনতম ১৭ শতাংশ লোকসান হতে পারে। বিদ্যুৎ চুরি-সহ অন্যান্য কারণে বণ্টন সংস্থা এলাকায় সেই ক্ষতির অঙ্ক গিয়ে দাঁড়াচ্ছে গড়ে ২৮ থেকে ৩০ শতাংশে। কোনও কোনও জেলায় ব্যাপক হারে হুকিং হওয়ায় ক্ষতির বহর ৫০ শতাংশও ছাপিয়ে যায়।
বিদ্যুৎ কর্তাদের একাংশের বক্তব্য, গ্রামে বিদ্যুৎ পৌঁছে দেওয়ার ক্ষেত্রে মুখ্যমন্ত্রীর নীতি অবশ্যই জনমুখী। কিন্তু সরকারি বিদ্যুৎ যে পয়সা খরচ করে কিনতে হয়, এই সচেতনতাই বহু মানুষের নেই। ফলে বিদ্যুৎ বিল না দেওয়ার প্রবণতা বেড়েই চলেছে। বিল আদায় বাড়াতে যে সব জেলায় বিল আদায় বেশ কম, সেখানে আধিকারিকদের বিশেষ দল পাঠানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে বণ্টন কোম্পানি। কিন্তু তাতে যে সমস্যা মিটবে, এমন ভরসা রাখতে পারছেন না বিদ্যুৎ কর্তারা।



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.