ঘরে ফিরলেন পাকিস্তানের জেল থেকে মুক্তি পাওয়া ইন্দাসের সুবোধ রুইদাস।
বুধবার সকালে অমৃতসর মেলে পরিজনদের সঙ্গে বর্ধমানে পৌঁছন সুবোধবাবু। তাঁর কথায়, “গুপ্তচর ভেবে পাকিস্তানে জেলে আটকে রাখা হয়েছিল আমায়। প্রচুর জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়েছে। কিন্তু কোনও অত্যাচার করা হয়নি।”
ছাড়া অবশ্য তিনি পেয়েছেন পাঁচ বছর আগেই। বর্ধমানের পুলিশ সুপার সৈয়দ মহম্মদ হোসেন মির্জা জানান, টানা বারো বছর পাকিস্তানের রাওয়ালপিন্ডি ও লাহোরের জেলে বন্দি ছিলেন সুবোধবাবু। ২০০৭ সালে ১৪ অগস্ট স্বাধীনতা দিবসে তাঁকে মুক্তি দিয়ে ওয়াঘা সীমান্ত পার করে এ পাশে পাঠিয়ে দেওয়া হয়। মানসিক রোগে ভোগায় পঞ্জাবের অমৃতসরে সরকারি মানসিক হাসপাতালে পাঁচ বছর ছিলেন তিনি। শেষে প্রশাসন মারফত খবর পেয়ে বর্ধমান পুলিশ তাঁর বাড়ি খুঁজে বের করে। |
সুবোধবাবুকে অমৃতসর থেকে আনতে গিয়েছিলেন তাঁর স্ত্রী প্রতিমা, ভাইপো রামু ও প্রতিবেশী পাপান মিত্র। সকালে বর্ধমান স্টেশনে নেমে তাঁরা পুলিশ সুপারের অফিসে যান। সেখানে ফুলের তোড়া ও মিষ্টি দিয়ে তাঁদের স্বাগত জানানো হয়। সকলের অনুরোধে স্বামীকে মিষ্টিমুখ করান প্রতিমাদেবী। তবে সুবোধবাবু বিশেষ কথা বলতে পারেননি। অসংলগ্নতাও ছিল। প্রতিমাদেবী বলেন, “১৭ বছর আগে জৈষ্ঠে এক দিন কাজের চেষ্টায় বাড়ি থেকে বেরিয়ে উনি নিখোঁজ হয়ে যান। তার আগের দিনই ছেলে ও দুই মেয়ে নিয়ে আমি খণ্ডঘোষের কৈয়র গ্রামে বাপের বাড়ি গিয়েছিলাম। পরের দিন ফিরে দেখি, স্বামী নেই।’’
প্রতিমাদেবীর মনে পড়ে, “এর পরে কখনও খেতমজুরি, কখনও ধান সেদ্ধ করে ছেলেমেয়েদের মানুষ করেছি। জীবনের কোনও সাধ-আহ্লাদ পূরণ হয়নি। তবু উনি ফিরে এসেছেন, সেটাই সান্তনা।” পাপানবাবু বলেন, “সুবোধবাবু এখনও মানসিক ভাবে সুস্থ নন। আমরা চাই, পুলিশ বা রাজ্য সরকার ওঁকে মানসিক হাসপাতালে ভর্তি করিয়ে চিকিৎসা করাক।’’ পুলিশ সুপার আশ্বাস দেন, “যতটা উদ্যোগী হওয়া দরকার, আমরা তা হব।” শেষে পুলিশের গাড়িতেই তাঁরা ইন্দাসে আকুই গ্রামের দিকে রওনা দেন। |