আদ্রায় ফের খুন রেলের ঠিকাদার
ব্যবসায়িক বিরোধ কারণ, ধারণা পুলিশের
পুলিশ ফাঁড়ির অদূরে দিনের আলোয় রেলের ঠিকাদারকে গুলি করে খুন করল দুষ্কৃতীরা। ঘটনাস্থল আরও এক বার রেলশহর আদ্রা।
বুধবার সকালে দুই দুষ্কৃতী পরপর গুলি করে খুন করে আদ্রার বাসিন্দা, রেলের বড় মাপের ঠিকাদার শ্যামসুন্দর ধর্মশিখাকে (৬১)। পরে আদ্রায় এসে পুরুলিয়ার পুলিশ সুপার সি সুধাকর জানান, রেলের ঠিকাদারি সংক্রান্ত বিরোধের জেরেই খুনের ঘটনা। চার মাস আগেই আদ্রার ডিআরএমের কার্যালয়ের সামনে প্রকাশ্য দিবালোকে খুন হন রেলেরই ঠিকাদারি কাজে গড়ে ওঠা সিন্ডিকেটের এক সদস্য। সেই খুনের কিনারা এখনও হয়নি। তারই মধ্যে ফের ঠিকাদার খুনে এই রেলশহরের আইনশৃঙ্খলা নিয়েই প্রশ্ন উঠছে।
বস্তুত, আদ্রায় রেলের ঠিকাদারিকে কেন্দ্র করে খুনের ঘটনা বরাবরই পুলিশের মাথাব্যাথার কারণ। নিহত শ্যামসুন্দরবাবু নিজেও রেলের দুই ঠিকাদারকে খুনের ঘটনায় অভিযুক্ত ছিলেন। আট বছর আগে খুন হয়েছিলেন রেলের দুই ঠিকাদার, আদ্রারই বাসিন্দা আশিস রায় ও আসলাম খান। ওই ঘটনায় সিআইডি শ্যামসুন্দরবাবুকে গ্রেফতারও করেছি। আদালতে তাঁর বিরুদ্ধে চার্জশিটও দিয়েছিল সিআইডি। তবে এ বারের খুনের সঙ্গে ওই ঘটনার কোনও যোগ নেই বলেই প্রাথমিক ভাবে পুলিশ মনে করছে। নিহতের ছেলে পঙ্কজের দাবি, “রেলের ঠিকাদারি সংক্রান্ত কাজের জন্যই খুন হতে হয়েছে বাবাকে। কারা এই ঘটনার পিছনে রয়েছে, পুলিশ সব জানে। আমরা চাই, দ্রুত অপরাধীদের পুলিশ ধরুক।”
তদন্তে পুলিশ। বুধবার তোলা —নিজস্ব চিত্র।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রের খবর, আদ্রার স্টেট ব্যাঙ্ক পাড়ার বাসিন্দা শ্যামসুন্দরবাবু এ দিন সকালে বাড়ি থেকে মোটরবাইকে ওই রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্কের পাশে নিজের কার্যালয়ে ও গুদামে যাচ্ছিলেন। পথে পুলিশ ফাঁড়ি থেকে ৫০ মিটারেরও কম দূরত্বে রাস্তায় পরপর গুলি করে দুই মোটরবাইক আরোহী দুষ্কৃতী। কাজ সেরে নির্বিঘ্নেই মোটরবাইকে পালায় আততায়ীরা। এ দিন সকালে ঘটনাস্থলে গিয়ে দেখা যায় রাস্তার পাশে পড়ে নিহত ঠিকাদারের মোটরবাইক। এলাকা ঘিরে রেখেছে পুলিশ। রাস্তার পাশে রক্তের দাগ।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, আততায়ীদের বয়স কম। একজন বারমুডা পরেছিল। আদ্রা বাজারের দিক থেকে আসা ওই দুই যুবক খুন করে পাশের গলি ধরে রঘুনাথপুরের রাস্তার দিকে পালায়। স্থানীয় গোলদারি দোকানের মালিক মনোজ সিংহ বলেন, “সকালে দোকান খুলে পাশের কল থেকে জল আনতে গিয়েছিলাম। হঠাৎ সাইকেলের চাকা ফাটার মতো আওয়াজ। এসে দেখি শ্যামসুন্দরবাবু রক্তাক্ত অবস্থায় টলতে টলতে দোকানের সামনে এসে পড়ে গেলেন। বলেছিলেন, আমাকে গুলি করে দিয়েছে।” বন্ধুর মাধ্যেমে মনোজই খবর দেন ওই ঠিকাদারের বাড়িতে। পরিবারের লোকেরা শ্যামসুন্দরবাবুকে রঘুনাথপুর মহকুমা হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসকরা মৃত ঘোষণা করেন। পুলিশ জানায়, অন্তত চারটি গুলি করা হয়েছে ওই ঠিকাদারের বুকে ও পেটে।
গত কয়েক বছরে আদ্রায় রেলের ঠিকাদারি সংক্রান্ত কাজে বিরোধের জেরে খুন হয়েছেন আদ্রা ও বোকারোর পাঁচ জন ঠিকাদার। কোনও ক্ষেত্রেই খুনের ঘটনার কিনারা করতে পারেনি পুলিশ। পুলিশ সূত্রেই জানা যাচ্ছে, বেশির ভাগ ক্ষেত্রে ভাড়াটে খুনিকে দিয়ে ‘অপারেশন’ সারায় তাদের ধরা গেলেও মূল মাথা অধরা থাকে। আদ্রায় হওয়া খুনের ঘটনাগুলির সঙ্গে বরাবরই ঘনিষ্ঠ যোগ থাকে ঝাড়খণ্ডের বোকারো ও ধানবাদের। এ ক্ষেত্রেও সেই যোগাযোগের বিষয়টি গুরুত্ব দিয়েই দেখছে পুলিশ। পুলিশ সুপার বলেন, “এর সঙ্গে সম্প্রতি হওয়া খুনের ঘটনার যোগ রয়েছে কি না বা ঝাড়খণ্ডের কতটা যোগাযোগ রয়েছে, এ সব দিকই খতিয়ে দেখা হচ্ছে।” এ দিনই পুলিশের একটি দল বোকারোয় তদন্তে গিয়েছে।



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.