বাদুড়িয়ায় তিনটি গ্রামে ডাকাতি
শিশু এবং বাড়ির বয়স্কদের মাথায় আগ্নেয়াস্ত্র ঠেকিয়ে তিনটি গ্রামের তিন বাড়িতে লুঠপাট চালাল একদল দুষ্কৃতী। মঙ্গলবার রাতে উত্তর ২৪ পরগনার বাদুড়িয়া থানার উমাপতিপুর, হুগলি ও খাসপুরে ওই ঘটনা ঘটে।
রাতে বাদুড়িয়া থানার ওসি সামশের আলি বাহিনী নিয়ে উমাপতিপুরে জ্ঞানেন্দ্রনাথ হাওলাদারের বাড়িতে যান। ততক্ষণে অবশ্য বাকি দুই গ্রামে লুঠপাট চালিয়ে পালিয়ে গিয়েছে দুষ্কৃতীরা। খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে যান বসিরহাটের এসডিপিও আনন্দ সরকার। পুলিশ জানিয়েছে, তিনটি গ্রামে ডাকাতিতে একটি দলই যুক্ত। তাদের শনাক্ত করার কাজ চলছে। শীঘ্রই অপরাধীদের গ্রেফতার করা যাবে বলে আশা করছে পুলিশ।
পুলিশের কাছে অভিযোগে তিনটি পরিবার জানিয়েছে, তাঁদের বাড়ির বয়স্ক সদস্য এমনকী শিশুদের মাথায় আগ্নেয়াস্ত্র ধরে, তাঁদের মারধর করে ডাকাতি হয়েছে।
ডাকাতির পরে। বাঁদিকে আব্দুল রজ্জাক ও ডানদিকে জ্ঞানেন্দ্রবাবুর বাড়ি। ছবি: নির্মল বসু।
প্রাথমিক তদন্তের পর পুলিশ জানিয়েছে, দুষ্কৃতীরা প্রায় ১৭ ভরি সোনা, প্রায় ৩৫ ভরি রূপোর গয়না এবং নগদ প্রায় ৩৩ হাজার টাকা, ৫টি মোবাইল এবং অন্য জিনিস লুঠ করেছে।
স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, মসলন্দপুর থেকে বাদুড়িয়া হয়ে স্বরূপনগরের তেঁতুলিয়া যাওয়ার রাস্তায় ওই তিনটি গ্রাম। সম্প্রতি ওই রাস্তায় চুরি-ছিনতাই বেড়েছে। স্থানীয় চণ্ডীপুর পঞ্চায়েতের উপপ্রধান সঞ্জীব মণ্ডল বলেন, “একটি চক্র এলাকায় ব্যাপক চুরি-ছিনতাই চালাচ্ছে। লরির টায়ার পর্যন্ত চুরি যাচ্ছে। পুলিশকে বার বার জানিয়েও কাজ হচ্ছে না।”
পুলিশ জানায়, মঙ্গলবার রাত সাড়ে ৯টা নাগাদ উমাপতিপুরে বাড়িতে বসে টিভি দেখছিলেন জ্ঞানেন্দ্রনাথ হাওলাদার। পাশে বসেছিলেন প্রতিবেশী বিরাজ হালদার। জ্ঞানেন্দ্রবাবু জানান, সজল নামে এক জনের খোঁজ করে বাড়ির পিছনের দরজায় ধাক্কা দেয় কয়েকজন যুবক। সজলদের বাড়ি নয় বলতে যেতেই জ্ঞানেন্দ্রবাবুর মাথায় আগ্নেয়াস্ত্র ধরে ঘরে ঢুকে পড়ে পাঁচ জন। চিৎকার করলে গুলি করার হুমকি দিয়ে জ্ঞানেন্দ্র এবং বিরাজবাবুকে বেঁধে রাখে। বেঁধে রাখা হয় জ্ঞানেন্দ্রবাবুর স্ত্রী মিনতিদেবীকেও। পাশের ঘরে পড়ছিল জ্ঞানেন্দ্রবাবুর নাতনি রূপা। তার ভাই রহিতকে বেঁধে একাদশ শ্রেণির ওই ছাত্রীকে চড় মেরে, আগ্নেয়াস্ত্র দেখিয়ে আলমারির চাবি চায় দুষ্কৃতীরা। চাবি দিলে নগদ কয়েক হাজার টাকা, সোনা-রূপোর গয়না, মোবাইল লুঠ করে। ওই সময়ে বাড়ি ফেরেন জ্ঞানেন্দ্রবাবুর ছেলে। ঘরে ঢুকতেই তাঁকেও বেঁধে রাখে। পুলিশে খবর দিলে প্রাণে মারার হুমকি দিয়ে পালায় দুষ্কৃতীরা। এর পরে পুলিশে খবর দেন বাড়ির লোকেরা।
ততক্ষণে দুষ্কৃতী দলটি উমাপতিপুর থেকে প্রায় তিন কিলোমিটার দূরে হুগলি গ্রামে আব্দুল রজ্জাক মণ্ডলের বাড়িতে লুঠপাট শুরু করেছে। রজ্জাকের মাথায় আগ্নেয়াস্ত্র ঠেকিয়ে, তাঁর স্ত্রী সালেহার গলায় ভোজালি ধরে লুঠপাট চালায়। এরপর সেখান থেকে পাঁচ কিলোমিটার দূরে খাসপুর গ্রামে সনৎ সরকারের বাড়িতে ঢোকে দুষ্কৃতীরা। সনৎবাবুর নাতির মাথায় রিভলভার ঠেকিয়ে আলমারির চাবি চায়। সনৎবাবুর পুত্রবধূ সারথীদেবী বলেন, “ওরা বলতেই চাবি দিয়ে ছেলেকে নিয়ে ঘরের এক কোণে দাঁড়িয়েছিলাম। লুঠপাটের পর ওরা শাশুড়ির ঘরে ঢোকে। বাধা দিলে তাঁকে ধাক্কা মেরে ফেলে দিয়ে গয়না, টাকার জন্য মারধর এবং গালিগালাজ করে।”



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.