শাসন করায় স্কুলের এক শিক্ষককে লোক লাগিয়ে মারধরের অভিযোগ উঠল একাদশ শ্রেণির এক ছাত্রের বিরুদ্ধে।
মঙ্গলবারের এই ঘটনায় অরুণকুমার চৌধুরী নামে গাইঘাটার চাঁদপাড়ার বাণী বিদ্যাবীথির কমার্সের ওই শিক্ষক গাইঘাটা থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি করেছেন। তবে ছাত্রটির বিরুদ্ধে কোনও আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হোক, তা তিনি চান না বলেও ডায়েরিতে লিখেছেন অরুণবাবু। ছাত্রটির দাবি, শিক্ষককে মারধরের ঘটনায় সে জড়িত নয়। ঘটনার জেরে বুধবার স্কুলের পঠনপাঠন বন্ধ ছিল। ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক নিখিলকুমার দাস বলেন, “ছাত্রটির বাবাকে বলা হয়েছে, তিনি যেন ছেলেকে যত দ্রুত সম্ভব হামলাকারীদের শনাক্ত করে দিতে বলেন। যত দিন তা না হচ্ছে, তত দিন ছাত্রটিকে স্কুলে পাঠাতে বারণ করা হয়েছে।”
স্কুল সূত্রের খবর, মঙ্গলবার টিফিনে স্কুলের তিন তলায় ছাত্রীদের ‘কমন-রুম’-এ যাচ্ছিল ওই ছাত্র। অরুণবাবু তাকে বারণ করেন। পরে ছাত্রটি অরুণবাবুকে আঙুল উঁচিয়ে শাসায় বলে অভিযোগ। অন্য শিক্ষকেরা ছাত্রটিকে ‘স্টাফ-রুমে’ নিয়ে যান। তখন ছাত্রটি ক্ষমা চায়।
বিকেলে স্কুল ছুটির পরে যাদবপুরে বাড়ি ফেরার জন্য অরুণবাবু চাঁদপাড়া স্টেশন থেকে ট্রেন ধরতে যাচ্ছিলেন। সেই সময়ে মুখে রুমাল-বাঁধা তিন যুবক পিছন থেকে এসে তাঁর মুখে কয়েকটি ঘুষি চালিয়ে ট্রেনের উল্টো দিকের দরজা দিয়ে লাফিয়ে পালায় বলে অভিযোগ। ট্রেনে উঠে স্কুলের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক এবং সহ-শিক্ষকদের ঘটনার কথা জানান অরুণবাবু। পরের স্টেশন ঠাকুরনগরে নেমে গাইঘাটা থানায় গিয়ে ডায়েরি করেন। পুলিশের কাছে তিনি দাবি করেন, ঘটনার সময়ে তিনি ছাত্রটিকে প্ল্যাটফর্মের একটি চায়ের দোকানে বসে থাকতে দেখেছিলেন। পরে গাইঘাটা থানা ডায়েরিটি বনগাঁ জিআরপি থানায় পাঠায়।
অরুণবাবু বলেন, “আমি পঞ্চম শ্রেণি থেকে ওকে পড়াচ্ছি। ও যে এমন করবে, ভাবতে পারছি না। মানসিক ভাবে খুবই ভেঙে পড়েছি।” তাঁর দাবি, “আমাকে মারধরের ঘটনায় ওরই মদত ছিল।”
এ দিন ওই ছাত্রের বাবাকে ডেকে নিয়ে আলোচনায় বসেন স্কুল কর্তৃপক্ষ। আসেন স্কুলের সরকার নিযুক্ত প্রশাসক সুভাষ মণ্ডল। অভিযুক্তের বাবা বলেন, “ছেলে এমন ঘটনায় যুক্ত থাকলে তা খুবই দুঃখজনক। তা হলে ওর সাজা হোক। কিন্তু আমি চাই না, ওর ভবিষ্যৎ ক্ষতিগ্রস্ত হোক। আমরা ওকে শাসন করব।” সুভাষবাবু বলেন, “বড় কোনও সাজা আমরা চাই না। তবে ছেলেটাকে শাসন করা দরকার।” |