বকেয়া টাকা, অনুদান ফেরত পাচ্ছেন কপিল |
ভারতীয় বোর্ডের সঙ্গে মিটমাট হয়ে যাওয়ার সরকারি ঘোষণার পরেই কপিল দেব ফাঁস করলেন যে, তিনি ‘ডিকশনারি’ নিয়ে বসেছিলেন ‘অ্যামনেস্টি’ শব্দের মানে জানার জন্য। “হয়তো আমি অতটা বুদ্ধিমান নই। তাই বুঝতে পারিনি অ্যামনেস্টি শব্দটা আমার ক্ষেত্রে সঠিক কি না,” দিল্লিতে একটি অনুষ্ঠানে এসে মঙ্গলবার বলেন কপিল।
‘ক্ষমা’ শব্দটা নিয়ে যে তাঁর আপত্তি আছে সেটা বুঝিয়ে দিতে ছাড়েননি ভারতের প্রথম বিশ্বকাপজয়ী অধিনায়ক। বোর্ডকে পাঠানো চিঠি এবং তার পরিপ্রেক্ষিতে বোর্ডে তাঁর পুনর্বাসন নিয়ে কেউ বলুক ‘কপিলকে ক্ষমা করে দেওয়া হল’ তিনি চান না। বোর্ডকে পাঠানো চিঠিতে কোথাও ক্ষমা চাওয়ার প্রশ্নও তোলেননি কপিল। শুধু জানিয়েছেন, বিদ্রোহী লিগ আইসিএলের সঙ্গে তাঁর এখন আর কোনও সম্পর্ক নেই। লিখেছেন, তিনি সব সময় ভারতীয় বোর্ডকে সমর্থন করে এসেছেন। ভবিষ্যতেও করে যাবেন।
বোর্ডকে পাঠানো চিঠির প্রভাবও দ্রুত হতে শুরু করে দিয়েছে। বোর্ড প্রেসিডেন্ট শ্রীনিবাসনের সঙ্গে এ নিয়ে আগে থেকেই কথা হয়েছিল কপিলের। এখন সরকারি ঘোষণার পর বোর্ডে আটকে থাকা টাকা তিনি খুব শীঘ্রই পেয়ে যাবেন বলে খবর। বোর্ডের একটি সূত্র জানাচ্ছে, সবার প্রথমে একশোর ওপর টেস্ট খেলার জন্য তাঁর প্রাপ্য দেড় কোটি টাকা পেয়ে যাবেন কপিল। মাসিক ৩৫,০০০ টাকার গ্র্যাচুইটিও তিনি পেতে শুরু করবেন। গত পাঁচ বছর ধরে ‘বিদ্রোহী’ হওয়ায় বোর্ড সমস্ত অনুদান বন্ধ করে দিয়েছিল। এই পাঁচ বছরে আটকে থাকা গ্র্যাচুইটিও কপিলকে দিয়ে দেবে বোর্ড।
কপিলের অবশ্য আইসিএল-কে ‘বিদ্রোহী লিগ’ বলায় আপত্তি রয়েছে। “অনেকে অনেক কিছু বলতে পারে। কিন্তু আমি আইসিএলের সঙ্গে যুক্ত হওয়ার অভিজ্ঞতা থেকে অনেক কিছু শিখেছি। এখন আমি অনেক বেশি আত্মবিশ্বাসী হয়েছি কোনও কিছু করার ব্যাপারে।” দেশের সর্বকালের সেরা অলরাউন্ডার মেনে নেন, বোর্ডের সঙ্গে তাঁর ভুল বোঝাবুঝি হয়েছিল। একই সঙ্গে বলেন, “আমি মনে করি, দু’জন ব্যক্তি টেবিলে বসে কথা বললে সমস্ত ভুল বোঝাবুঝিই মিটে যায়।” কয়েক দিন আগে শ্রীনিবাসনের সঙ্গে বৈঠকের দিকেই ইঙ্গিত কপিলের। দু’জনের শীর্ষ বৈঠকের পরেই সম্পর্কের বরফ গলতে শুরু করে। তিনি কি এ বার বোর্ডের কাছ থেকে কোনও দায়িত্ব আশা করছেন? কপিল বলেন, “সেটা আমি বলতে পারব না। সেটা তো বোর্ডই ঠিক করবে।”
দিল্লির অনুষ্ঠানে বিষেণ সিংহ বেদী ছিলেন। তিনি মন্তব্য করেন, “কপিল নিশ্চয়ই গত পাঁচ বছর ধরে খুব টেনশনে ছিল। ও নিশ্চয়ই বুঝেছে যে, বোর্ড হচ্ছে সর্বোচ্চ সংস্থা। বোর্ডকে সব সময় সম্মান জানানো উচিত।” উপস্থিত জনতাকে হাসিয়ে কপিল সঙ্গে সঙ্গে প্রতিবাদ করে ওঠেন, “পাঁজি, আমি পাঁচ বছর ধরে মোটেও টেনশনে ছিলাম না।”
অনুষ্ঠানে ছিলেন দিলীপ বেঙ্গসরকর এবং মদন লালও। বেঙ্গসরকর বলেন, “কপিল বিশ্বের সর্বকালের সেরা অলরাউন্ডারদের এক জন। ওর মতো ফাস্ট বোলারের পরামর্শ কাজে লাগানো উচিত বোর্ডের।” মদন লালও দু’পক্ষের সমঝোতাকে স্বাগত জানিয়ে বলেন, ভারতীয় ক্রিকেটকে কপিলের এখনও অনেক কিছু দেওয়ার আছে। |