দক্ষিণ বিধাননগর থানা এলাকায় একটি চুরির ঘটনার তদন্তে নেমে মঙ্গলবার রাতে দুই দুষ্কৃতীকে গ্রেফতার করে পুলিশ। আর এই সূত্র ধরেই প্রায় ১০ মাস পরে, বেলঘরিয়া এক্সপ্রেসওয়েতে গাড়ির ভিতরে জোড়া খুনের রহস্য উদ্ঘাটনে আশার আলো দেখছেন তদন্তকারীরা। পুলিশের দাবি, সৈকত দাস ওরফে বুম্বা এবং অরূপ দত্ত ওরফে বান্টি নামে ধৃত দুই যুবক ওই জোড়া খুনে যুক্ত থাকার কথা কবুল করেছে।
|
সুপ্তেন্দু দত্ত |
|
সুশান্ত ঘোষাল |
গত বছর ৯ সেপ্টেম্বর ভোরে বেলঘরিয়া এক্সপ্রেসওয়ের উত্তর বাদরা বাসস্ট্যান্ডের কাছে গাড়ি থেকে চুঁচুড়ার বাসিন্দা, একটি বেসরকারি ম্যানেজমেন্ট ও তথ্যপ্রযুক্তি কলেজের কর্তা সুপ্তেন্দু দত্ত (৪৭) এবং গাড়িটির চালক সুশান্ত ঘোষালের (২৭) গুলিবিদ্ধ দেহ পুলিশ উদ্ধার করে। সুপ্তেন্দুবাবুর দেহ মেলে চালকের আসনের পাশে। সুশান্তর দেহ ছিল পিছনের আসনে। সুপ্তেন্দুবাবুর বুকে ও সুশান্তর কপালে গুলির চিহ্ন ছিল। সেই সময় কয়েক জনকে পুলিশ আটক করে জেরা করলেও কেউ গ্রেফতার হয়নি। পরে তদন্তভার নেয় সিআইডি।
তবে, নিছক গাড়ি ছিনতাইয়ের জন্য যে খুন, তা মানতে চাননি নিহত সুপ্তেন্দুবাবুর স্ত্রী মৌসুমি দত্ত। বুধবার তিনি বলেন, “দুষ্কৃতীদের যদি গাড়ি ছিনতাইয়ের উদ্দেশ্যই থাকত, তা হলে কলেজ সংক্রান্ত ১০-১২টি গুরুত্বপূর্ণ ফাইল, আমার স্বামীর ব্রিফকেস, মোবাইল কোথায় গেল?” বিধাননগর পুলিশ কমিশনারেট সূত্রে জানা গিয়েছে, ধৃত সৈকতের বাড়ি এয়ারপোর্ট থানার শরৎ কলোনির রাজবাড়িতে। অন্য ধৃত অরূপ দমদমের গ্রিনপার্ক এলাকার বাসিন্দা।
পুলিশের দাবি, জেরায় ধৃতেরা জানিয়েছে, গাড়ি ছিনতাইয়ের মতলবে ৮ সেপ্টেম্বর রাতে তারা বেলঘরিয়া এক্সপ্রেসওয়েতে ঘুরছিল। তখন সুপ্তেন্দুবাবুর গাড়ি উত্তর বাদরা বাসস্ট্যান্ডে দাঁড়ায়। সুপ্তেন্দুবাবু কোনও কারণে গাড়ি
থেকে নামেন।
অন্ধকারের সুযোগে রিভলভার দেখিয়ে সুপ্তেন্দুবাবুদের ভয় দেখিয়ে গাড়ি ছিনতাইয়ের চেষ্টা করে তারা। দু’পক্ষের ধস্তাধস্তির সময় আচমকা গুলি বেরিয়ে গিয়ে দু’জনের গায়ে লাগে। সৈকত ও অরূপ পালায়। ধৃতদের বুধবার বিধাননগর আদালতে তোলা হলে বিচারক তাদের ৪ দিন পুলিশি হেফাজতে রাখার নির্দেশ দেন। ধৃতদের বিরুদ্ধে আপাতত চুরির মামলাই রুজু হয়েছে। |