ভারতে বিদেশি লগ্নি মে মাসে কমে গেল এক গত বছরের তুলনায় এক ধাক্কায় প্রায় ৭২%।
আরও বেশি বিদেশি লগ্নির দরজা খোলা নিয়ে রাজনৈতিক চাপান-উতোরের মধ্যেই বুধবার প্রকাশিত পরিসংখ্যানে জানা গিয়েছে, গত বছরের ৪৬৬ কোটি ডলার থেকে তা কমে দাঁড়িয়েছে ১৩২ কোটি ডলার। এপ্রিলেও তা ৩১২ কোটি ডলার থেকে কমে ছুঁয়েছিল ১৮৫ কোটি ডলার। এপ্রিল-মে দু’মাসের হিসাব ধরলেও বিদেশি লগ্নি ৫৯% কমে দাঁড়িয়েছে ৩১০ কোটি ডলার। শিল্পনীতি ও উন্নয়ন সংক্রান্ত দফতর সূত্রে এ খবর জানা গিয়েছে। প্রত্যক্ষ বিদেশি লগ্নির এই টানা পতনের জন্য কয়েকটি কারণকে চিহ্নিত করেছেন বিশেষজ্ঞরা। সেগুলি হল:
• বিশ্ব জুড়ে মন্দার মেঘ ঘনিয়ে আসায় হাতে লগ্নিযোগ্য তহবিল কমা
• ভারতে আর্থিক সংস্কার কর্মসূচি দ্রুত রূপায়ণ নিয়ে টালবাহানা
• আন্তর্জাতিক লগ্নিকারীদের আস্থায় কিছুটা চিড় ধরা
• ভারতে আর্থিক বৃদ্ধি কমে যাওয়া
এই পরিস্থিতিতে বহু পণ্যের খুচরো ব্যবসায় এবং দেশি বিমান সংস্থায় বিদেশি বিমান সংস্থার লগ্নির অনুমতি দেওয়ার মতো সিদ্ধান্ত নিলে তা বিদেশি লগ্নিকারীদের উৎসাহ জোগাবে বলে মনে করছে শিল্প মহল। ফিকি-র সেক্রেটারি জেনারেল রাজীব কুমার এই মন্তব্যই করেছেন। শিল্পমহলের মতে এ ধরনের সংস্কারের খোলা হাওয়া ভারতীয় অর্থনীতিকে ফের বৃদ্ধির সড়কে ফেরাতে পারবে। প্রসঙ্গত, প্রত্যক্ষ বিদেশি লগ্নি কমছে এমন এক সময়ে, যখন বৃদ্ধির হার ২০১১-’১২ সালে গত ন’বছরে সবচেয়ে নীচে নেমে দাঁড়িয়েছে ৬.৫%। জানুয়ারি-মার্চ ত্রৈমাসিকে তা ৫.৩%। সম্প্রতি আন্তর্জাতিক মূল্যায়ন সংস্থা স্ট্যান্ডার্ড অ্যান্ড পুওর্স এবং ফিচ, ভারতের রেটিং স্থিতিশীল থেকে কমিয়ে নেতিবাচক করার হুমকি দেওয়ার প্রভাবও পড়েছে বিদেশি লগ্নিতে। বিদেশিদের কাছে ভারতের ভাবমূর্তি এতে কিছুটা হলেও ধাক্কা খেয়েছে বলে মনে করছে শিল্পমহল। তবে বিদেশি লগ্নি কমার প্রবণতা বজায় থাকলে বৈদেশিক বাণিজ্যে লেনদেনে ঘাটতির উপর চাপ বাড়বে বলে আশঙ্কা। উপরন্তু বিশ্ব বাজারে তেল বা অন্যান্য পণ্য আমদানির খরচ বাড়লে ঘাটতি বাড়বে। এর সঙ্গে টাকার দাম পড়তে থাকলে পরিস্থিতি আরও ঘোরালো হবে বলে তাদের আশঙ্কা। এই পরিস্থিতিতে বাড়তি বিদেশি লগ্নি অর্থনীতির চালিকাশক্তি হয়ে উঠতে পারে বলে সওয়াল করেছে শিল্পমহল। |