উড়োজাহাজে নয়, এ বার বেলুনে চড়েই মাটির ৫০০ ফুট উপর থেকে কলকাতার বিস্তীর্ণ এলাকার দৃশ্যাবলী দেখা যাবে রবীন্দ্র সরোবর থেকে। এর জন্য খরচ পড়বে মাথাপিছু সর্বাধিক ১০০ টাকা। রাজ্যের পুর ও নগরোন্নয়নমন্ত্রী ফিরহাদ হাকিম চান, এই ‘এয়ারো বেলুন’ পরিষেবা চালু হয়ে যাক আসন্ন পুজোর মরসুমে।
প্রায় ১০০ ফুট উঁচু ও ৫৫-৬০ ফুট ব্যাসার্ধের একটি বেলুনে হিলিয়াম গ্যাস ভরে যান্ত্রিক পদ্ধতিতে তোলা হবে আকাশে। বেলুনের বেশ কয়েক ফুট নীচে থাকবে একটি বৃহৎ মাপের গোলাকৃতি প্ল্যাটফর্ম, যা বেলুনের সঙ্গে যুক্ত থাকবে অনেকগুলি তারের মাধ্যমে। ওই প্ল্যাটফর্মেই যাত্রীরা দাঁড়াবেন। প্ল্যাটফর্মটি এমন হবে, যাতে ২০-৩০ জন অনায়াসে দাঁড়াতে বা ঘোরাফেরা করতে পারেন। যাত্রী-নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে পাটাতনটি সম্পূর্ণ ঘেরা থাকবে স্বচ্ছ পর্দার মতো কিছু দিয়ে। গ্যাস ভরা বেলুনটিকে যান্ত্রিক পদ্ধতিতে উড়িয়ে দেওয়া হবে এমন উচ্চতায় যাতে বেলুনের নীচে থাকা যাত্রিবাহী পাটাতনটি ৫০০ ফুট উঁচুতে অবস্থান করবে। বেলুনটি একটি তার দিয়ে সর্বক্ষণ বাঁধা থাকবে মাটিতে থাকা একটি স্থায়ী বেদীর সঙ্গে। যাতে কোনও ভাবেই তা নির্দ্দিষ্ট এলাকার বাইরে উড়ে চলে যেতে না পারে। বেলুনটি নির্দিষ্ট উচ্চতায় থামলে আরোহীরা ইচ্ছেমতো ঘোরাফেরা করে দেখতে পারবেন শহরের যাবতীয় সৌন্দর্য। ঘুরে দেখা শেষ হলেই আবার বেলুনটি ধীরে ধীরে নেমে আসবে। দিনের আলো ছাড়া রাতের অন্ধকারেও ওই বেলুনটি ওড়ানো যাবে। |
শহরের সৌন্দর্যায়ন ও রবীন্দ্র সরোবরকে জনগণের কাছে আরও আকর্ষণীয় করে তুলতে বেলুনে করে এক সঙ্গে ২০-৩০ জনকে প্রায় ১১ তলা বাড়ির সমান উচ্চতায় নিয়ে যাওয়ার এই পরিকল্পনা তৈরি করে ফেলেছেন পুরমন্ত্রী। কিন্তু, পুজোর মরসুমে পরিকল্পনাটি বাস্তবায়িত করা যাবে কি না, তা এখনও অনিশ্চিত। কারণ, প্রয়োজনীয় দরপত্র ডাকা হয়নি এখনও। তবে, কেএমডিএ-র চিফ এগ্জিকিউটিভ অফিসার বিবেক ভরদ্বাজ জানান, শীঘ্রই দরপত্র ডাকা হবে। তিনি আরও জানান, এয়ারো বেলুনটি পুজোর মরসুমেই চালু করার চেষ্টা হচ্ছে। বেসরকারি সংস্থার সঙ্গে যৌথ উদ্যোগে এই পরিষেবা চালু করা হবে। এর জন্য খরচ পড়বে সাত থেকে আট কোটি টাকা। যা দেবে বেসরকারি সংস্থা। সরকার দেবে জমি। এ জন্য রবীন্দ্র সরোবর এলাকায় এক একর জায়গা চিহ্নিত করার কাজ শুরু হয়েছে। ওই বেলুন ওড়ানোর পরিকাঠামো গড়তে এমন জায়গা প্রয়োজন, যার ৫০ মিটার ব্যাসার্ধের মধ্যে কোনও রকম বাধা থাকবে না। এমনকী, গাছও নয়।
কেএমডিএ-র এক কর্তার আশা, শুধু দর্শকদের মধ্যেই এয়ারো বেলুন সীমাবদ্ধ থাকবে না। ভবিষ্যতে হয়তো কর্পোরেট সংস্থাগুলিও তাদের পার্টি বা বিশেষ বৈঠকের জন্য ওই বেলুনবিহারের সুযোগ নেবে। এটি চালু হলে দেশ-বিদেশের পর্যটকদেরও কলকাতা সম্পর্কে আকর্ষণ বাড়বে। তিনি জানান, সারা দেশের মধ্যে গুজরাতের আমদাবাদের কাঙ্কারিয়া লেকে এই বেলুনবিহারের ব্যবস্থা আছে। তা-ও চালু হয়েছে বছরখানেক আগে। কাশ্মীরের ডাল লেকেও বেলুনবিহার চালু করার পরিকল্পনা আছে। পুজোর মরসুমে চালু করা গেলে কলকাতা সম্ভবত দেশের দ্বিতীয় শহর হবে, যেখানে বেলুনবিহারের ব্যবস্থা চালু হয়ে যাবে চলতি বছরেই। |