গুড়াপের হোমের আবাসিকেরা যে ঠিকমতো খেতে পেতেন না, সেই তথ্য ফের সামনে এল।
শুক্রবার ডায়মন্ড হারবার হাসপাতালে ভর্তি করানো হয় ওই হোমের চার জনকে। যাঁদের দিন কয়েক আগে গুড়াপের হোম থেকে সরিয়ে আনা হয় দক্ষিণ ২৪ পরগনার মগরাহাট-১ ব্লকের উস্তির একটি হোমে। রবিবার হাসপাতালের এক চিকিৎসক বলেন, “ওই চার জন রক্তাল্পতা এবং অপুষ্টিজনিত রোগে আক্রান্ত। তাঁদের রক্ত-সহ সব রকম পরীক্ষা করানো হবে। রিপোর্ট পাওয়ার পরেই এ বিষয়ে বিস্তারিত জানা যাবে।”
এর আগে, যাদবপুর এবং বারুইপুরের দু’টি হোমে আশ্রয় পাওয়া গুড়াপের হোমের কয়েক জন আবাসিককে জিজ্ঞাসাবাদের পরে সিআইডি কর্তারা জানিয়েছিলেন, ওই সব আবাসিককে ঠিকমতো খেতে দেওয়া হত না। সকালে ভাতের পরিবর্তে ভাতের ফেন এবং দুপুর-রাতে পাতলা ডাল ও আলুসেদ্ধ দেওয়া হত। রাতে মাঝেমধ্যেই খাবার চাইলে মারধর করা হত আবাসিকদের।
আবাসিক গুড়িয়ার মৃত্যুর পরে গুড়াপের হোমের সব আবাসিককে রাজ্যের বিভিন্ন হোমে সরিয়ে নিয়ে যাওয়া হয়। তাঁদের মধ্যে ১৩ জনের ঠাঁই হয়েছে উস্তির বেসরকারি হোমে। অসুস্থ হয়ে পড়ায় শুক্রবার ১৩ জনকেই ডায়মন্ড হারবার হাসপাতালে পাঠানো হয়। তাঁদের মধ্যে চার জনকে ভর্তি নেওয়া হয়। হাসপাতাল সূত্রে খবর, চার জনই মানসিক ভারসাম্যহীন। বাকি ৯ জনের শারীরিক অবস্থা তুলনামূলক ভাল। তাই তাঁদের প্রতি সপ্তাহে একবার করে চিকিৎসার জন্য হাসপাতালে আনতে বলা হয়েছে হোম কর্তৃপক্ষকে।
চার জনের মধ্যে অণিমা ঘোষ নামে চিকিৎসাধীন এক আবাসিকের মা, পাণ্ডুয়ার হরিদাসপুর এলাকার বাসিন্দা লক্ষ্মী ঘোষ বলেন, “মেয়ে মানসিক প্রতিবন্ধী। ৬ মাস আগে ওকে গুড়াপের হোমে রেখে যাই। ওখানে দু’বেলা লাউঘণ্ট এবং এক মুঠো করে ভাত দিত বলে জানতে পারি। তাতে কারও পেট ভরে? এ জন্যই মেয়ে অসুস্থ হয়ে পড়েছে।”
বিডিও শৌভিক ভট্টাচার্য বলেন, “জেলা সমাজকল্যাণ দফতরের নির্দেশে ওই ১৩ জনকে উস্তির হোমে আনা হয়েছে। হোমে যাতে সকলে ভালমতো খেতে পান, তার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। অসুস্থদের চিকিৎসা করানো হচ্ছে।” |