মাঝরাতে মোটরবাইকে চড়ে এসে ইসিএলের এক নিরাপত্তাকর্মীর হাতে মাওবাদীদের সশস্ত্র বাহিনী ‘পিএলজিএ’র নামাঙ্কিত কিছু পোস্টার দিয়ে গেল এক যুবক। শনিবার রাতে বর্ধমানের অন্ডালে সিএল জামবাদ কোলিয়ারিতে এমনই ঘটেছে বলে অভিযোগ। রবিবার সকালে এলাকার কয়েকটি দেওয়ালেও একই রকম কিছু পোস্টার মেলে।
গত শুক্রবার পাণ্ডবেশ্বরের হরিপুর বাজারে তৃণমূল কর্মীদের হুমকি দিয়ে সাদা কাগজের উপরে হিন্দি ভাষায় লাল কালিতে লেখা এমনই কিছু পোস্টার মিলেছিল। এ দিনের পোস্টারগুলিরও একই বয়ান বলে পুলিশ সূত্রে জানা যায়।
খনির নিরাপত্তারক্ষী কৌশল ভুঁইয়া অন্ডাল থানায় অভিযোগ করেন, রাত সাড়ে ১২টা নাগাদ কোলিয়ারি চত্বরে মোটরবাইক নিয়ে হাজির হয় এক যুবক। তিনি টর্চ নিয়ে এগিয়ে গেলে আগন্তুক হিন্দিতে জানতে চায়, “এলাকায় কে কে তৃণমূল করে?” কৌশলবাবুর কথায়, “আমি জানাই, এলাকায় অনেকেই তৃণমূল করেন। তখন সে রিভলবার দেখায়। তার পরে সঙ্গে আনা কয়েকটি পোস্টার আমার হাতে গুঁজে দিয়ে বলে, ‘এলাকায় বিলি করিস’। এর পরে মোটরবাইক ফেলে রেখেই চলে যায়।” পুলিশ গিয়ে পোস্টারগুলি বাজেয়াপ্ত করে। সকালে কোলিয়ারি লাগোয়া বহুলায় দু’টি বাড়ি ও একটি মন্দিরে একই রকম পোস্টার মেলে।
আগামী ২৮ জুলাই মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের বর্ধমানে যাওয়ার কথা। ঘটনাচক্রে, সে দিনই মাওবাদীদের ‘শহিদ সপ্তাহ’ শুরু। তার আগে পরপর এমন পোস্টার মেলায় আতঙ্কিত এলাকাবাসী। রাজ্যের আইনমন্ত্রী তথা আসানসোলের (উত্তর) তৃণমূল বিধায়ক মলয় ঘটকের দাবি, “পুলিশি তদন্ত শেষ না হলে কিছু বোঝা যাবে না। তবে পঞ্চায়েত ভোটের আগে আমাদের কর্মীদের মনোবল ভাঙতে সিপিএম এমন করলে আশ্চর্যের কিছু নেই।” আসানসোলের সিপিএম সাংসদ বংশগোপাল চৌধুরীর বক্তব্য, “যে কোনও ব্যাপারে সিপিএমের দিকে আঙুল তোলা ওদের অভ্যাস। এটা দুষ্কৃতীদের কাজ বলে মনে হচ্ছে। পুলিশি তদন্তেই সত্য প্রকাশ হবে।”
দুর্গাপুরের এডিসিপি কাজি সামসুদ্দিন আহমেদ বলেন, “অনুমানের ভিত্তিতে মন্তব্য করা ঠিক নয়। সম্ভাব্য সব দিক খতিয়ে দেখা হচ্ছে।” মোটরবাইকটি কার, ওই যুবক সেটি ফেলেই বা গেল কেন, তা তদন্ত করে দেখা হচ্ছে বলে জানায় পুলিশ। |