ব্যাগে মদের বোতল থাকার অভিযোগে নবম শ্রেণির এক ছাত্রীকে সাময়িক ভাবে স্কুলে যেতে নিষেধ করেছেন মালদহের একটি গার্লস স্কুল কর্তৃপক্ষ। মালদহ শহরের দূর্গাবাড়ি মোড়ের কাছে শহরের একটি নামী গার্লস স্কুলে ঘটনাটি ঘটেছে। স্কুল কর্তৃপক্ষের দাবি, বুধবার ক্লাস চলাকালীন অন্য ছাত্রীদের কাছ থেকে খবর পেয়ে তল্লাশি হয়। তখনই নবম শ্রেণির ছাত্রীর ব্যাগ থেকে একটি মদের ছোট বোতল ও ৩৩০০ টাকা পাওয়া যায় বলে শিক্ষিকাদের অভিযোগ। ওই ছাত্রীটিকে বাড়িতে পাঠিয়ে দেওয়া হয়। পর দিন ওই ছাত্রীর অভিভাবকদের ডেকে পাঠিয়ে বিষয়টি জানিয়ে আপাতত তাকে স্কুলে পাঠাতে নিষেধ করেন স্কুল কর্তৃপক্ষ। শুক্রবার বিষয়টি জানতে পেরে স্কুল কর্তৃপক্ষের কাছে রিপোর্ট তলব করেছেন জেলা স্কুল পরিদর্শক (মাধ্যমিক) পার্থসারথী ঝা। তিনি বলেন, “ঘটনাটি শোনার পরই স্কুলের প্রধান শিক্ষিকাকে ডেকে পাঠিয়েছিলাম। তাঁকে জানিয়েছি, একজন ছাত্রী ভুল করতেই পারে। তার সহ্গে কথা বলে কোন পরিস্থিতে এমন হয়েছে সেটা বোঝা উচিত ছিল। তা না-করে ওই ছাত্রীকে স্কুলে আসতে মানা করে স্কুল কর্তৃপক্ষ ঠিক কাজ করেনি।” ডিআই জানান, শিক্ষা দফতরের তরফেও ওই ছাত্রীর পরিবারের লোকজনের সঙ্গে কথা বলবেন।এই ব্যাপারে স্কুলের প্রধান শিক্ষিকা ইতি মুখোপাধ্যায় বলেন, “ছাত্রীর স্কুলব্যাগ থেকে মদের বোতল ও প্রচুর টাকা পাওয়া গিয়েছে জেনে ওই ছাত্রীর অভিভাবককে ডাকা হয়েছিল। প্রাথমিক ভাবে ওই ছাত্রীকে স্কুলে আসতে বারণ করা হয়েছিল। ভাবছি ওই ছাত্রীকে ফের স্কুলে আসতে বলব।” ওই ছাত্রীর বাড়ি কুতুবপুর এলাকায়। কিন্তু, ঘর তালাবন্ধ থাকায় কারওদেখা মেলেনি। প্রতিবেশীরা জানালেন, স্কুলের ওই ঘটনার পর মেয়েকে নিয়ে মা এক আত্মীয়ের বাড়ি চলে গিয়েছেন। ওই ছাত্রীর বাবা পেশায় চা বিক্রেতা। তিনি বললেন, “আমার মেয়ে একাজ করতে পারে না। কোনও চক্রান্ত হয়েছে। আমি মেয়েকে ১০ টাকাও হাতে দিইনা। মেয়ে মদ কিনবে কি করে? স্কুল থেকে ডেকে পাঠিয়েছিল। আমি যেতে পারিনি। ওর মা গিয়েছিল। স্কুলের প্রধান শিক্ষিকা আমার স্ত্রীকে বলে দিয়েছেন, আপনার মেয়েকে আমরা স্কুলে রাখব না। অন্য স্কুলে নিয়ে যান। মেয়ের লেখাপড়া বন্ধ হয়ে যাবে?” এই ঘটনার কথা শুনে মালদহের মনোরোগ বিশেষজ্ঞ পার্থ দাশগুপ্ত বলেন, “একজন স্কুলের শিক্ষিকা ছাত্রীর অভিভাবকের দায়িত্বও পালন করে থাকেন। যদি ঘটনা সত্যি হয়, তা হলেও বলতে পারি, বয়ঃসন্ধিকালে একটি মেয়ে এই ধরনের ভুল করতেই পারে। সে জন্য তাঁকে অপরাধী সাব্যস্ত করা ঠিক নয়। ওই ছাত্রীকে স্কুলে রেখেই প্রেক্ষাপট জেনে সেই মতো ব্যবস্থা নেওয়া উচিত।” |