|
|
|
|
|
|
দক্ষিণ কলকাতা: গড়িয়া, সোনারপুর |
নামেই সড়ক |
খন্দ-যন্ত্রণা |
দেবাশিস দাস |
অটোর গায়ে লেখা, গড়িয়া স্টেশন থেকে গঙ্গাজোয়ারা পর্যন্ত যাবে। কিন্তু নতুন দিয়ারা পেরিয়ে রাস্তা এমনই ভাঙাচোরা যে আর এগনোর উপায় নেই। নতুন দিয়ারা থেকে গঙ্গাজোয়ারা পর্যন্ত প্রায় চার কিলোমিটার পথ অগত্যা হেঁটেই যেতেই হয়। রাস্তার এমনই হাল যে হাঁটাও রীতিমতো কষ্টকর। অথচ এই গঙ্গাজোয়ারা মেন রোড ধরেই প্রতি দিন স্থানীয় পাঁচপোতা, তেঁতুলবেড়িয়া, নয়াবাদ, কাঠিপোতা, খেয়াদহ, গঙ্গাজোয়ারার কয়েক হাজার বাসিন্দা গড়িয়া স্টেশনে যাতায়াত করেন। অভিযোগ, দীর্ঘ দিন ধরে রাস্তাটি এই অবস্থায় পড়ে থাকলেও সারানোর কোনও ব্যবস্থা হয়নি।
স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, রাস্তা সারাইয়ের দাবিতে সম্প্রতি এলাকার অটোচালক এবং বাসিন্দারা পথ অবরোধ করেছিলেন। তার পরেই প্রশাসনিক স্তরে শুরু হয় রাস্তা সারাইয়ের তোড়জোড়। কিন্তু এই উদ্যোগ নিয়ে এখনও আশ্বস্ত হতে পারছেন না এলাকাবাসী। স্থানীয় বাসিন্দা রমাপদ ঘড়ুই যেমন বললেন, “এ সব অনেক বার শুনেছি। বেশ কয়েক বার মাপজোকও হতে দেখেছি। কিন্তু কাজের কাজ কিছুই হয়নি।” |
|
গড়িয়া স্টেশন সংলগ্ন এলাকা থেকে কাঠিপোতা পর্যন্ত অংশ রাজপুর-সোনারপুর পুরসভা এলাকার মধ্যে পড়ে। কাঠিপোতা থেকে গঙ্গাজোয়ারা পর্যন্ত এলাকা পঞ্চায়েতের আওতায় পড়ছে বলে দক্ষিণ ২৪ পরগনা জেলা পূর্ত দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে। জেলা পরিষদের পূর্ত কর্মাধ্যক্ষ আবু তাহের সর্দার বলেন, “এই রাস্তাটি সম্ভবত জেলা পরিষদের নয়। খোঁজ নিয়ে দেখব। প্রয়োজনে দ্রুত সারাইয়ের ব্যবস্থা করব।”
এলাকায় ঘুরে দেখা গেল, গড়িয়া স্টেশন থেকে নতুন দিয়ারা পর্যন্ত রাস্তার অনেকাংশেই আস্তরণ উঠে গিয়েছে। জায়গায় জায়গায় খানাখন্দে ভরা। গাড়িঘোড়া এই পথটুকুু পেরোতে নৌকোর মতো দুলতে থাকে। নতুন দিয়ারা অটোস্টা্যন্ড থেকে গঙ্গাজোয়ারা পর্যন্ত রাস্তায় কোনও এক সময়ে পিচ করা হয়েছিল। এখন তার চিহ্নমাত্র নেই। পুরো রাস্তাটাই কার্যত মাটির হয়ে গিয়েছে। বড় বড় গর্ত আর বর্ষার জল দাঁড়িয়ে চলাচলের অযোগ্য।
রাস্তার এই হালের জন্য সোনারপুর (উত্তর) বিধানসভার বিধায়ক এবং সোনারপুর-রাজপুর পুরসভার উপ-পুরপ্রধান তৃণমূলের ফিরদৌসি বেগম দায়ী করছেন বাম আমলকেই। তাঁর বক্তব্য, “চৌত্রিশ বছর ধরে এই রাস্তায় কোনও উন্নয়ন হয়নি। ওই রাস্তা উন্নয়নের কাজ শীঘ্রই শুরু হবে। ব্যাকওয়ার্ড রিজিওনাল গ্রান্ট ফান্ড থেকে এক কোটি আশি লক্ষ টাকা অনুমোদন করা হয়েছে। কাজের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে রাজ্য পূর্ত দফতরের জাতীয় সড়ক বিভাগকে।” |
|
তবে পুরসভার প্রাক্তন উপ-পুরপ্রধান সিপিআইয়ের তড়িৎ চক্রবর্তীর পাল্টা দাবি: “চৌত্রিশ বছর আগে ওই রাস্তা ছিল খেতের আল। ওই জায়গায় পিচ ফেলে আমরাই রাস্তা বানিয়েছিলাম। তার পরেই ওই এলাকায় জনবসতি বাড়ে।”
রাজ্য পূর্ত দফতরের জাতীয় সড়ক বিভাগের এগজিকিউটিভ ইঞ্জিনিয়ার বিনয় মজুমদার বলেন, “গঙ্গাজোয়ারা মেন রোড সারাইয়ের কাজ শীঘ্রই শুরু হবে। আপাতত চলার যোগ্য করা হবে। বর্ষা শেষ হলে পিচের কাজ হবে।”
|
ছবি: পিন্টু মণ্ডল |
|
|
|
|
|