|
|
|
|
|
|
দক্ষিণ কলকাতা |
বেহাল পাম্প |
অপেক্ষায় জলপান |
দেবাশিস দাস |
এগারো লক্ষ টাকা ব্যয়ে বিগ ডায়া টিউবওয়েল বসিয়েও অমিল পরিস্রুত পানীয় জল। প্রিন্স আনোয়ার শাহ রোডের লর্ডস বেকারির মোড় এবং গল্ফ গার্ডেন্স সংলগ্ন রাজেন্দ্রপ্রসাদ কলোনিতে মাস কয়েক আগে একটি বিগ ডায়া টিউবওয়েল বসায় কলকাতা পুরসভা। বাসিন্দাদের অভিযোগ, এই পাম্পে (বিগ ডায়া টিউবওয়েল) জল তোলার সময় প্রথমে তীব্র দুর্গন্ধ ছড়ায় গোটা এলাকায়। পরে পুরকর্মীরা টিউবওয়েল ‘ওয়াশ’ করে আবার চালানোর চেষ্টা করলে লালচে জল উঠতে শুরু করে।
এই ঘটনায় ক্ষুব্ধ এলাকাবাসী বিগ ডায়া টিউবওয়েলটি বন্ধ করে দেওয়ার কথা বলেন। স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, সেই থেকেই বন্ধ হয়ে পড়ে রয়েছে ওই পাম্পটি। নামপ্রকাশে অনিচ্ছুক, কলকাতা পুরসভার এক পাম্পচালক বলেন, “এই টিউবওয়েল দিয়ে ভাল জল ওঠার সম্ভাবনা খুূবই কম। কারণ, এই ধরনের টিউবওয়েলের জন্য যতটা গভীর গর্ত করার প্রয়োজন ছিল, সম্ভবত তা করা হয়নি। আমরা এই টিউবওয়েল চালালে বাসিন্দারা আমাদের উপরে চড়াও হবেন।” স্থানীয় বাসিন্দা সুনীল করেরও বক্তব্য, “এলাকায় আগে যখন এই রকম টিউবওয়েল বসানোর কাজ হত, তখন অনেকটা গভীর করে গর্ত খুঁড়তে দেখেছি। এ ক্ষেত্রে কিন্তু তা হতে দেখিনি।’’ |
|
বাসিন্দাদের অভিযোগ মেনে নিয়েছেন স্থানীয় ৯৪ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর আরএসপি-র সেতাবুদ্দিন খন্দেকার। তিনি বলেন, “এলাকাবাসীর অভিযোগ মিথ্যা নয়। কারণ, এই ধরনের পাম্পের জল ন্যূনতম দু’দিন তুলে ফেলে দেওয়ার পরে জল সরবরাহ করতে হয়। এ ক্ষেত্রে তা হয়নি বলেই প্রথমে দুর্গন্ধ ছড়িয়েছিল।” তবে দ্বিতীয় দফায় লালচে জল আসার বিষয়ে কলকাতা পুরসভার জল সরবরাহ বিভাগের ডিজি বিভাস মাইতি বলেন, “ভূগর্ভস্থ জলের লালচে হওয়ার বিষয়টি নির্ভর করে কোন এলাকায় আয়রনের পরিমাণ কী রকম, তার উপরে। এ বিষয়ে কারও
হাত নেই।”
১০ নম্বর বরো সূত্রে খবর, আগে গার্ডেনরিচের পাইপলাইনের সঙ্গে এই এলাকার সরাসরি সংযোগ ছিল। কিন্তু গড়ফা পাম্পিং স্টেশনের পাইপলাইন প্রিন্স আনোয়ার শাহ রোড দিয়ে নিয়ে যাওয়ার কাজের সময়ে সেই সংযোগ বিচ্ছিন্ন করে দেওয়া হয় বলে অভিযোগ। ওই বরোর জল বিভাগের এগ্জিকিউটিভ ইঞ্জিনিয়ার তরুণকান্তি ঘোষ বলেন, “আমি সবে এই বরোর দায়িত্ব পেয়েছি। সমস্যা সম্পর্কে খোঁজখবর নেব।” বরো চেয়ারম্যান তৃণমূলের তপন দাশগুপ্ত বলেন, “রাজেন্দ্রপ্রসাদ কলোনিতে বিগ ডায়া টিউবওয়েল নিয়ে সমস্যার কথা শুনেছি। সবিস্তার খোঁজ নিয়ে অবশ্যই ব্যবস্থা নেব।” |
|
স্থানীয় সূত্রে খবর, এলাকার প্রায় আড়াই হাজার বাসিন্দা পরিস্রুত পানীয় জল সরবরাহের জন্য এই বিগ ডায়া টিউবওয়েলটির উপরেই নির্ভরশীল। তা হলে কেন এত দিন পর্যন্ত সমস্যার সমাধান না করে বন্ধ অবস্থায় ফেলে রাখা হয়েছে পাম্পটিকে? কাউন্সিলর সেতাবুদ্দিন খন্দেকারের বক্তব্য, “পাম্প চালানোর কর্মীর সংখ্যা কম। আগে জলের চাহিদা ছিল, তাই চালানো হয়েছিল। কিন্তু এখন সেই চাহিদা নেই, তাই বন্ধ করে রাখা হয়েছে।”
যদিও স্থানীয় বাসিন্দারা জানিয়েছেন, গার্ডেনরিচ জলপ্রকল্পের সংযোগ বিচ্ছিন্ন হওয়ার পরে স্থানীয় প্রিন্স গোলাম মহম্মদ শাহের কবরখানা সংলগ্ন ওভারহেড জলাধার থেকে এলাকায় পানীয় জল সরবরাহ করা হত। তবে সেই জলে চাহিদা মিটত না। তাই একটি পরিস্রুত পানীয় জলের ব্যবস্থা করার জন্য দীর্ঘ দিন ধরেই দাবি তুলে এসেছেন তাঁরা।
|
ছবি: শুভাশিস ভট্টাচার্য |
|
|
|
|
|