|
|
|
|
|
|
পূর্ব কলকাতা |
বিধাননগর |
মরণফাঁদ |
কাজল গুপ্ত |
আর কেউ ‘মাহি’ হোক, চায় না বিধাননগর পুরসভা!
পুর-অঞ্চলে তাই কুয়োর সমীক্ষা শুরু করল পুরসভা। ইতিমধ্যেই কয়েকটি কুয়ো বোজানো হয়েছে।
সম্প্রতি বিধাননগরের নগরায়ন ভবনে পুর ও নগরোন্নয়নমন্ত্রী ফিরহাদ হাকিমের ঘরে মন্ত্রীর সঙ্গে আলোচনা করছিলেন বিধাননগরের চেয়ারপার্সন কৃষ্ণা চক্রবর্তী। ছিলেন অন্য পুর-প্রতিনিধিরাও। তখন নগরায়ন ভবন এবং সিজিও কমপ্লেক্সের মাঝের ঝুপড়িতে দু’টি খোলা কুয়ো থেকে জল তুলতে দেখা যায় বেশ কয়েক জনকে। পাশেই খেলা করছিল ছোটরা। এর পরেই নড়চড়ে বসে প্রশাসন।
|
|
পুরসভার চেয়ারপার্সন কৃষ্ণা চক্রবর্তী জানান, ঘটনাটি লক্ষ করে দ্রুত ব্যবস্থা নেয় পুরসভা। ইতিমধ্যেই দু’টি কুয়ো বুজিয়ে দেওয়া হয়েছে। শুরু হয়েছে লাগাতার অভিযান। পুরকর্মীরা জানান, কুয়ো দু’টি ৩০-৪০ ফুট গভীর ছিল। এত দিন নজরে আসেনি। ঝুপড়িবাসীরা এই দু’টি কুয়োর জলই ব্যবহার করতেন। ঝুপড়িবাসীদের একাংশের অভিযোগ, নির্মাণ কাজ চলার সময়ে জলের প্রয়োজনে অস্থায়ী কুয়ো তৈরি হয়। কিন্তু কাজ হলেও তা বোজানো হয় না। এগুলি তেমনই কুয়ো ছিল। সম্প্রতি হরিয়ানার একটি গ্রামে ৭০ ফুট গভীর এমনই কুয়োয় পড়ে পাঁচ বছরের বালিকা মাহির মৃত্যু হয়।
শুধু একটি জায়গাতেই নয়, বাসিন্দাদের অভিযোগ, বিধাননগরে এমন অনেক কুয়োই আছে। তাই অফিসপাড়া, কেষ্টপুর ও ইস্টার্ন ড্রেনেজ চ্যানেলের পাড়-সহ বিভিন্ন ব্লকে ইতিমধ্যেই পুরসভা সমীক্ষা শুরু করেছে। পাশাপাশি দত্তাবাদ, সুকান্তনগর, নাওভাঙা, গরুমারা, ত্রিনাথ পল্লি, কুলিপাড়া, বারোকপাট, সর্দারপাড়া, পোলেনাইট, মহিষবাথান, নাওভাঙা-সহ পুরসভার সংযুক্ত এলাকাতেও কুয়োর সন্ধান চলছে।
|
|
স্থানীয় সূত্রে খবর, সংযুক্ত এলাকায় গভীর-অগভীর নলকূপ ছাড়াও অনেকেই কুয়ো ব্যবহার করেন। কিন্তু অধিকাংশ কুয়োর মুখ খোলা। গত কয়েক বছরে এলাকায় বাড়ি নির্মাণ বেড়ে চলেছে। স্থানীয় বাসিন্দা দুলাল সর্দারের কথায়: ‘‘জলের প্রয়োজনে কুয়ো খোঁড়া হয়েছিল। কিন্তু সব বন্ধ হয়নি।’’ যদিও পুরকর্তৃপক্ষ ইতিমধ্যেই বেআইনি কুয়ো বন্ধ করার আবেদন করেছেন। অন্যথায় প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে কর্তৃপক্ষ জানিয়েছেন।
বাসিন্দাদের সংগঠন বিধাননগর (সল্টলেক) ওয়েলফেয়ার অ্যাসোসিয়েশনের সম্পাদক কুমারশঙ্কর সাধু বলেন, ‘‘আমি নিজেই কুয়োয় পড়ে গিয়েছিলাম। ভয়ঙ্কর অভিজ্ঞতা হয়েছিল। পুরসভা অত্যন্ত প্রয়োজনীয় কাজ করছে।
কিন্তু ব্লক কমিটিকে সঙ্গে নিয়ে কাজ করলে আরও ভাল হত।’’ তাঁর অভিযোগ, অনেকেই বাড়ি তৈরির সময় কুয়ো তৈরি করেছিলেন। কিন্তু পরে সেগুলি বন্ধ করেননি। তাই সচেতনতা বাড়ানোর জন্য পুরসভার প্রচার চালানোও জরুরি। |
|
পুরসভার চেয়ারপার্সন কৃষ্ণাদেবী বলেন, ‘‘আমরা অব্যবহৃত কুয়ো বন্ধ করার অভিযান শুরু করেছি। সারা সল্টলেক জুড়েই এই কাজ করা হবে। আমাদের আবেদন, কেউ বেআইনি কুয়ো রাখবেন না। নইলে পুরসভা ব্যবস্থা নিতে বাধ্য হবে।’’
|
ছবি: শৌভিক দে |
|
|
|
|
|