নিজস্ব সংবাদদাতা • কলকাতা |
নির্বাচন এড়াতে যেটা তাঁর ‘মাস্টারস্ট্রোক’ ভাবা হয়েছিল, সিএবি প্রেসিডেন্ট জগমোহন ডালমিয়ার সেই সিদ্ধান্ত নিয়ে চব্বিশ ঘণ্টার মধ্যে অসন্তোষ দেখা দিল তাঁর নিজস্ব মহলেই। বিদায়ী সচিব বিশ্বরূপ দে-কে প্রার্থী করে কোষাধ্যক্ষ পদে নির্বাচন হয়তো আটকানো গিয়েছে, কিন্তু একই সঙ্গে শাসকগোষ্ঠীর মধ্যেই প্রশ্ন উঠে পড়েছে সিদ্ধান্তটা কতটা যুক্তিসঙ্গত এবং সিএবি-র পক্ষে কতটা ইতিবাচক।
শুক্রবার দুপুর থেকে একের পর এক নাটক ঘটতে থাকে সিএবি-তে। প্রথমত, প্রেসিডেন্ট পদে জগমোহন ডালমিয়ার বিরুদ্ধে মনোনয়নপত্র জমা দিয়ে সিএবির মরা নির্বাচনে সামান্য বৈচিত্র যোগ করলেন প্রাক্তন সচিব সমর পাল। দ্বিতীয়ত, শাসকগোষ্ঠীরই প্রভাবশালী কিছু মহল থেকে বিষোদ্গার চলতে থাকে কোষাধ্যক্ষ নির্বাচন নিয়ে ডালমিয়ার সিদ্ধান্তের প্রতিবাদে। ভারতীয় বোর্ড ও সিএবি-র প্রাক্তন সচিব গৌতম দাশগুপ্ত খোলাখুলি বলে দেন, যা চলছে তা অভিপ্রেত নয়। “কোষাধ্যক্ষ বাছা নিয়ে যা হল, তা অর্থহীন। সিএবি-তে কী আর প্রার্থী ছিল না কোষাধ্যক্ষ পদে? দলের সঙ্গে আমি আছি ঠিকই। কিন্তু ভুল কিছু ঘটলে মাথা নীচু করে আমি মেনে নেব না,” বলছিলেন গৌতম। সিএবি-র ট্রাস্টি বোর্ডের সদস্য শরদিন্দু পালের গলাতেও কটাক্ষ। বলছেন, “মানুষের পদোন্নতি হয় শুনেছি। কিন্তু উন্নতির বদলে অবনতি হচ্ছে, প্রথম শুনলাম।” উচ্চপদস্থ কর্তারা অভিযোগ তুলছেন, কেন বৃহস্পতিবারের বৈঠকে তাঁদের ডাকা হয়নি? কী ভাবে কোষাধ্যক্ষ বেছে ফেলা হল মাত্র চার জনকে বৈঠকে ডেকে?
আর এই ঘটনার কেন্দ্রে দাঁড়িয়ে যে দুই চরিত্র, সেই প্রবীর চক্রবর্তী ও বিশ্বরূপ দে-ও ক্ষুব্ধ। বৃহস্পতিবারের বৈঠকের পর কোষাধ্যক্ষ হওয়ার ইচ্ছে ছাড়তে হয়েছে প্রবীরকে। অতিরিক্ত ক্ষমতা দিয়ে তাঁকে সহ-সচিব করার প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত তাঁর পদের কতটা গুরুত্ব থাকে, সেই বুঝে তিনি সিদ্ধান্ত নেবেন। বরং প্রবীর বলছেন, “গত কাল দেড় ঘণ্টার বৈঠকে বুঝেছি, সিএবি-র কোনও কোনও মহলে কী রকম নোংরা রাজনীতি চলছে।” আর যাঁকে কোষাধ্যক্ষ করা হয়েছে, সেই বিদায়ী সচিব বিশ্বরূপ দে এ দিনও জানিয়েছেন, নতুন পদে তিনি অখুশি।
সব মিলিয়ে সিএবি প্রেসিডেন্টের উপর আচমকা চাপ তৈরি হয়েছে বলেই মনে করছে স্থানীয় ক্রিকেটমহল। ডালমিয়া নিজেও মেনে নিলেন, সমস্ত কর্তাকে ডাকা সম্ভব হয়নি সময়ের অভাবে। “কেউ যদি আমার সিদ্ধান্তের প্রতিবাদে এই কথা বলে থাকেন, তা হলে সেটা তাঁর ব্যক্তিগত ব্যাপার,” বলে দিলেন সিএবি প্রেসিডেন্ট। কিন্তু একই সঙ্গে যেন কিছুটা পাল্টা জবাব দিয়ে রাখলেন যখন বললেন, “সবাই জানে, কেন প্যানেল দিতে এত দেরি হল। আমি মানছি সবাইকে বৈঠকে ডাকতে পারিনি। কিন্তু এত কিছু হলে আমাকেও ভেতরের কিছু কথা বলতে হয়, যা আমি বলতে চাই না।” |