অলিম্পিকে তাঁর পদক জেতার সম্ভাবনা নিয়ে অবশেষে মুখ খুললেন লিয়েন্ডার পেজ। এবং আমেরিকায় চলতি ওয়ার্ল্ড টিম টেনিসের সফলতম ডাবলস এবং মিক্সড ডাবলস প্লেয়ার আক্রমণাত্মক ভঙ্গিতেই বলছেন, “আমি জানি অলিম্পিক পদক জিততে কী করতে হয়। কতটা কঠিন পরিশ্রম দরকার হয়। আমি অনেক দিন আগেই অলিম্পিক পদক জিতেছি। সে জন্য খুব কম কথায় বলছি, সমালোচকদের বিশ্লেষণ, যাবতীয় নেতিবাচক ব্যাপার আর রাজনীতি কোনও কিছু নিয়েই আমার মাথাব্যথা নেই। আমার র্যাকেটই সর্বদা কথা বলে এসেছে। লন্ডনেও বলবে।” তবে স্বীকার করেছেন, ভূপতি-বোপান্না তাঁর সঙ্গে খেলতে অস্বীকার করায় তিনি ‘ব্যথা’ পেয়েছিলেন। কিন্তু ‘এটাই জীবন’ এহেন দর্শনের মাধ্যমে নিজের মনকে শান্ত করেন।
ওয়াশিংটন ক্যাসেলসের হয়ে শুক্র আর শনিবারের ম্যাচ দুটো খেলে লন্ডন রওনা হবেন ছ’বারের অলিম্পিয়ান লিয়েন্ডার। যাঁর বাবা ভেস পেজ ১৯৭২ অলিম্পিকে ব্রোঞ্জজয়ী ভারতীয় হকি দলের অন্যতম সদস্য। এবং তার পরের বছরই লিয়েন্ডারের জন্ম বলে ভারতীয় টেনিসের সফলতম ডাবলস প্লেয়ার নিজেকে বলে থাকেন ‘অলিম্পিক বেবি’। ’৯৬ অলিম্পিক সিঙ্গলসে ব্রোঞ্জজয়ী লিয়েন্ডার ডব্লিউটিটি-র শেষ ম্যাচে জন ম্যাকেনরোর টিমের মুখোমুখি হওয়ার আগে নিউজ চ্যানেলে বলেছেন, “সিঙ্গলসে অলিম্পিক পদকের পাশাপাশি লন্ডন থেকে যদি ডাবলস বা মিক্সড ডাবলসে পদক জিততে পারি তা হলে সেটা আমার টেনিস জীবনে অবিস্মরণীয় হয়ে থাকবে।” |
আমেরিকায় ৭টা ম্যাচে ডাবলস (ববি রেনল্ডসকে নিয়ে) ও মিক্সড ডাবলস (রোদিওনোভা বোনেদের নিয়ে) মিলিয়ে ১৪টা ম্যাচই জিতেছেন তিনি। শুধু বোস্টন লবস্টার্সের বিরুদ্ধে সেরেনা উইলিয়ামসকে নিয়ে খেলেন। এবং সেই ম্যাচ দেখতে এসে আমেরিকার ফার্স্ট লেডি, ওবামা-পত্নী মিশেল লিয়েন্ডারকে পাশে নিয়ে ছবি তোলেন। ফর্মে থাকা লিয়েন্ডার অলিম্পিকে বিষ্ণু বর্ধনের মতো বিশ্বর্যাঙ্কিংয়ে ৩০৭ নম্বর একজন জুনিয়রকে নিয়ে খেলতেও ঘাবড়াচ্ছেন না। “বিষ্ণুকে উইম্বলডনের শেষ দিন চারেক লন্ডনে এনে প্র্যাক্টিস করিয়েছি। তারপর আমেরিকায় সঙ্গে করে এনে ক্যালিফোর্নিয়ায় গত দশ দিন আমার ব্যক্তিগত কোচ রিক লিচের কাছে রেখে ট্রেনিং করাচ্ছি।” এ-ও জানেন, ওখানেই সোমদেব দেববর্মন শারীরিক শক্তিবৃদ্ধির জন্য মার্কিন কুস্তিগীর ম্যাথু নেলসনের সঙ্গে প্রস্তুতি নিচ্ছেন। “বিষ্ণু বা সোমদেব, যে পার্টনারই নির্বাচকেরা দিন, আমি তার সঙ্গেই খেলতে মুখিয়ে আছি,” বলেছেন লিয়েন্ডার। সানিয়া মির্জাকে নিয়ে মিক্সড ডাবলস খেলার জন্যও ‘ছটফট’ করছেন তিনি।
লিয়েন্ডারের কথায়, “দোহা এশিয়াডে সানিয়ার সঙ্গে খেলে দারুণ আনন্দ পেয়েছি। দারুণ প্রতিভা।” দু’জনেই ডান কোর্টের প্লেয়ার হওয়ায় বোঝাপড়ায় সমস্যা হবে জয়দীপ মুখোপাধ্যায়ের মতো কোনও কোনও সমালোচকের এই ব্যাখ্যাকে উড়িয়ে দিয়ে লিয়েন্ডার বলেছেন, “যেহেতু অলিম্পিক টেনিস উইম্বলডনে হবে তাই ওখানকার উদাহরণ দিচ্ছি। উইম্বলডনেই আমি তিনবার মিক্সড ডাবলস চ্যাম্পিয়ন। তিনজন আলাদা পার্টনারের সঙ্গে বাঁ কোর্টে খেলে। লিজা (রেমন্ড), মার্টিনা (নাভ্রাতিলোভা), কারা (ব্ল্যাক)। আমার কাছে ডিউস বা অ্যাডভান্টেজ কোর্ট কোনও ব্যাপার নয়। আসল হল, আমার পার্টনারকে আমি সঠিক সাহায্য করছি কি না। দিনের শেষে গ্রেট টেনিস খেলাটাই আসল। ওটাই পদক জেতায়।” |