কাজিরাঙায় বন্যা
বাস্তুতন্ত্রের ভারসাম্য রক্ষিত হয়েছে, মত বিশেষজ্ঞদের
দিও সাত বছর পরে এত প্রাণহানি হয়েছে কাজিরাঙায়, তবু অভিশাপ নয়, বন্যাকে আশীর্বাদ হিসেবেই দেখছেন কাজিরাঙা কর্তৃপক্ষ।
এ বছরের বন্যায় কাজিরাঙা জাতীয় উদ্যানের মোট ৬১১টি প্রাণী মারা গিয়েছে। কিন্তু উদ্যানের অধিকর্তা সঞ্জীব বরা ও পূর্ব বোকাখাত ডিভিশনের ডিএফও দিব্যধর গগৈ দু’জনেই মনে করছেন, এরপরেও পর্যাপ্ত প্রাণী রয়েছে কাজিরাঙায়। আশঙ্কার কোনও কারণ নেই। বরং বন্যার ফলে উদ্যানের বাস্তুতন্ত্রে ভারসাম্য বজায় রয়েছে। তৈরি হচ্ছে নতুন খাদ্য। সবচেয়ে বড় কথা, বিষাক্ত মাইমোসার বংশ ধ্বংস করতে বন্যা কার্যকরী ভূমিকা নিয়েছে। বন্যার ফলে উদ্যানের বিল ও জলাশয়গুলির জমা জল সাফ হয়ে সেগুলি নতুনভাবে ভরে উঠেছে। নষ্ট হয়েছে আগাছা।
ডিএফও দিব্যধর গগৈয়ের মতে, মাইমোসার অত্যাচারে হাতিদের পছন্দের ঘাস ‘টোরা’ ও বুনো মোষের পছন্দের খাদ্য ‘ইকোরা’-র পরিমাণ ক্রমশই কমে যাচ্ছিল। মাইমোসাকে পুড়িয়ে বা হাতে ছিঁড়ে শেষ করা সম্ভব নয়। বন্যায় মাইমোসার বংশ অনেকটাই ধ্বংস হয়েছে। এর ফলে আখেরে উদ্যানের প্রাণীদের মঙ্গলই হবে। বনকর্তাদের মতে, বানভাসি হওয়ার পরে উদ্যানের জমা পলি বড় গাছের দ্রুত বৃদ্ধির পক্ষে অত্যন্ত কার্যকর। গগৈ জানান, উদ্যানের ২৮ শতাংশ এলাকা পাহাড়ি। সেখানে গাছের সংখ্যাও যথেষ্ট। বন্যার আগাম আঁচ পেয়ে প্রাণীদের অধিকাংশই সেখানে আশ্রয় নিয়েছিল। বাকিরা গিয়েছে কার্বি আংলং-এ। উদ্যানের ১৫২টি চোরাশিকার আটকাবার শিবিরই উঁচু পাটাতনে বানানো। সবগুলিতেই নৌকা ছিল। বন্যার জল সর্বোচ্চ পর্যায়ে থাকার সময়, মাত্র ৩ দিনের জন্য ১৬টি শিবির অস্থায়ী ভাবে খালি করা হয়।
কাজিরাঙা কর্তৃপক্ষের হিসেব অনুযায়ী, এ বারের বন্যায় ১০টি প্রজাতির মোট ৬১১টি প্রাণীর মৃত্যু হয়েছে। গগৈয়ের মতে, এতে চিন্তার কিছু নেই। বন্যায় ৫১৭টি হগ ডিয়ার মরলেও, এখনও এই প্রজাতির ৩৫ হাজারেরও বেশি হরিণ কাজিরাঙায় রয়েছে। ৩টি শাবক ও ১৩টি বৃদ্ধ গন্ডার বন্যায় মরেছে। তবে উদ্যানে এখনও ২২৭৪টি গন্ডার আছে। ১১৬৫টি হাতির মধ্যে মাত্র ২টি হাতির মৃতদেহ মিলেছে। বিপন্ন প্রজাতির ১১৬৯টি বারাশিঙার মধ্যে ১০টি এবারের বন্যায় মারা গিয়েছে। এ ছাড়া রয়েছে ৫টি সজারু ও ২টি হগ ব্যাজার। বনকর্মী, গ্রামবাসী ও পশুপ্রেমী সংগঠনগুলি প্রায় আড়াইশো প্রাণীকে উদ্ধার করেছে। দু’টি হাতি ও দু’টি গন্ডার শিশুর চিকিৎসা চলছে। উল্লেখ্য, ১৯৮৮ সালে কাজিরাঙায় সবচেয়ে প্রাণঘাতী বন্যা হয়েছিল। সে বার প্রাণী-মৃত্যুর সংখ্যা ছিল ১২০৩ টি। ১৯৯৮ সালে ৩৯টি গন্ডার-সহ ৬৫২টি প্রাণী মারা যায়।


First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.