তীর্থযাত্রীদের জন্য রাস্তায় আলোর ব্যবস্থা তারকেশ্বরে
প্রতি বছরই শ্রাবণ মাসে তারকেশ্বরে জল ঢালতে যাওয়ার পথে পুণ্যার্থীরা নানা অবাঞ্ছিত ঘটনার মধ্যে পড়েন। কখনও হয় দুর্ঘটনা, আবার অনেক সময় দীর্ঘ হাঁটা পথে মহিলাদের নানা সমস্যায় পড়তে হয়। তাই এ বার অতিমাত্রায় সর্তক পুলিশ-প্রশাসন।
বৈদ্যবাটি নিমাইতীর্থ গঙ্গার ঘাট থেকে জল নিয়ে মন্দিরের উদ্দেশে রওনা দেন পুণ্যার্থীরা। এ বার ঘাটে থাকছে ক্লোজড্ সার্কিট ক্যামেরার নজরদারি। পুর-এলাকায় রাতে স্থায়ী পথবাতি। পঞ্চায়েত এলাকার রাস্তায় অস্থায়ী আলো। যেখানে বিদ্যুৎ নেই, সেখানেও আলো জ্বলবে। জেনারেটরের সাহায্যে। ৪ কিলোমিটার অন্তর থাকবে পুলিশি
ছবি: প্রকাশ পাল।
সহায়তা কেন্দ্র। থাকবে পুলিশ-স্বেচ্ছাসেবকদের টহল। নিরাপত্তা জোরদার তারকেশ্বর মন্দিরেও।
তারকেশ্বরে শ্রাবণী মেলা শুরু হতেই নিরাপত্তার খাতিরে কোমর বেঁধেছে পুলিশ-প্রশাসন। সঙ্গে সংশ্লিষ্ট পুরসভা, পঞ্চায়েত এবং পঞ্চায়েত সমিতি। এই মেলা উপলক্ষে গোটা শ্রাবণ মাস জুড়ে লক্ষ লক্ষ মানুষ তারকেশ্বরে শিবের মাথায় জল ঢালতে যান। দূর দূরান্ত থেকে মানুষ আসেন পুণ্য সঞ্চয়ের জন্য। অনেকে মানত করেন। ভিন্ রাজ্য থেকেও পুণ্যার্থীরা আসেন। এত মানুষের নিরাপত্তা নিয়ে থাকে নানা প্রশ্ন। এ বার নিরাপত্তা ব্যবস্থায় কোনও ফাঁক রাখতে চাইছে না পুলিশ। জলযাত্রীদের স্বাচ্ছন্দ্যের জন্য পুলিশ-প্রশাসনের পাশাপাশি সাহায্যের হাত বাড়িয়েছে বিভিন্ন স্বেচ্ছাসেবী সংস্থাও।
চৈতন্যদেবের স্মৃতি বিজরিত নিমাইতীর্থ ঘাট থেকে বহু মানুষ জল তুলে বাঁক কাঁধে তারকেশ্বরে যান। ওই ঘাট ছাড়াও বৈদ্যবাটি পুর এলাকার আরও অন্তত ৯টি ঘাট থেকে পুণ্যার্থীরা জল তোলেন। সব ঘাটেই জোরদার আলোর বন্দোবস্ত করেছে পুরসভা। জেলা প্রশাসন সূত্রের খবর, শ্রাবণী মেলার সময় টানা একমাস অন্তত ২০ লক্ষ মানুষ ওই সমস্ত ঘাটগুলি থেকে জল নেন। নিমাইতীর্থ ঘাটে একাধিক ক্লোজড্ সার্কিট ক্যামেরা বসানো হয়েছে। তৈরি করা হয়েছে অস্থায়ী বাঁশের সেতু। পুরসভার পক্ষ থেকে মোট ১০০ মহিলা গ্রিন পুলিশ এবং ১০০ সিভিল পুলিশের ব্যবস্থা করা হয়েছে। কেউ অসুস্থ হয়ে পড়লে, শুশ্রূষার জন্য মেডিক্যাল ক্যাম্পেরও ব্যবস্থা করা হয়েছে। গঙ্গায় মোতায়েন থাকবে ডুবুরি। থাকছে স্পিডবোটও।
শেওড়াফুলি থেকে তারকেশ্বরের দূরত্ব ৩২ কিলোমিটার। বৈদ্যবাটি-তারকেশ্বর রোড ধরে দীর্ঘ এই পথ এত দিন অন্ধকারেই পাড়ি দিতে হত জলযাত্রীদের। পুলিশ সূত্রের খবর, এত দিন প্রবল ভিড় এবং অন্ধকারের ফলে নানা দুর্ঘটনা লেগেই থাকত। অন্ধকারের সুযোগে নানা অবাঞ্ছিত কাজকর্মও হত। সুযোগ নিত দুষ্কৃতীরা। এ বার ওই পথ জুড়ে আলো বসেছে। বৈদ্যবাটির পুরপ্রধান অজয়প্রতাপ সিংহ জানান, পুরসভার উদ্যোগে নিমাইতীর্থ ঘাট থেকে দিল্লিরোড-সংলগ্ন চাঁপসড়া পদ্মাবতী কলোনি পর্যন্ত স্থায়ী আলো বসানো হয়েছে। ওই অংশের পর থেকে সংশ্লিষ্ট পঞ্চায়েতগুলির উদ্যোগে অস্থায়ী আলো বসানো হয়েছে।
হরিপালের বিধায়ক বেচারাম মান্না জানান, শনি এবং রবিবার পঞ্চায়েত এলাকার পথবাতিগুলি জ্বলবে। রাস্তার যে অংশে বিদ্যুৎ নেই, সেই সমস্ত জায়গায় জেনারেটরের সাহায্যে আলো জ্বালানো হবে বলে উদ্যোক্তারা জানিয়েছেন। তারকেশ্বর মন্দির চত্বরে রাজ্য পর্যটন দফতরের তরফে ৬টি ক্লোজড্ সার্কিট ক্যামেরা বসানো হয়েছে। দুধপুকুরেও নামানো হবে ডুবুরি।
পুলিশ সুপার তন্ময় রায়চৌধুরী, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (শিল্পাঞ্চল) অমিতাভ বর্মা-সহ জেলা পুলিশের কর্তারা ইতিমধ্যেই গোটা ব্যবস্থা সরেজমিনে তদারকি করেছেন। বৈদ্যবাটি এবং তারকেশ্বর পুরসভার কর্তাব্যক্তিদের সঙ্গে একাধিক বৈঠক হয়েছে পুলিশের। পুলিশ সুপার জানান, মেলা চলাকালীন শনি ও রবিবার বৈদ্যবাটি-তারকেশ্বর রোডে রাস্তায় যান চলাচল বন্ধ থাকবে। অবাঞ্ছিত ঘটনা এড়াতে বাইকে টহল দেবেন পুলিশকর্মীরা। পুলিশের সহায়তা কেন্দ্রগুলিতে জলসত্রের ব্যবস্থা থাকবে।



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.