হামলার নালিশ সিপিএমেরও
গোঘাটের গ্রামে ‘আক্রান্ত’ তৃণমূল,অভিযুক্ত সিপিএমের মহিলারাও
১ জুলাই দলের ‘শহিদ দিবস’-এর সমর্থনে পথসভার সময়ে শুক্রবার গোঘাটের নকুণ্ডা গ্রামে তৃণমূলের নেতা-কর্মীদের উপরে ধারাল অস্ত্র নিয়ে হামলা চালানোর অভিযোগ উঠল সিপিএমের বিরুদ্ধে। মূলত মহিলাদের ওই হামলায় তাদের ১২ জন জখম হন বলে দাবি তৃণমূলের। ৩ জনকে হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়েছে। সিপিএমের অভিযোগ, সকালে তৃণমূলের মিছিল থেকে তাদের দলীয় কর্মী-সমর্থকদের বাড়িতে ঢুকে হামলা চালানো হয়। তাদের তিন নেতা-কর্মী আহত হন। এর পরেই গ্রামবাসীরা উত্তেজিত হয়ে পড়েন বলে সিপিএমের দাবি। গ্রামটি সিপিএম প্রভাবিত। গ্রামে উত্তেজনা থাকায় পুলিশ ও র্যাফ মোতায়েন করা হয়। পুলিশ ৫ জনকে গ্রেফতার করেছে।
তৃণমূলের পক্ষ থেকে এ ব্যাপারে থানায় লিখিত ভাবে হামলার অভিযোগ জানানো হলেও এ দিন সন্ধ্যা পর্যন্ত সিপিএম কোনও লিখিত অভিযোগ দায়ের করেনি। পুলিশ জানায়, তদন্ত শুরু হয়েছে।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, এ দিন সিপিএমের কৃষকসভার ডাকে মজুরি-বৃদ্ধির দাবিতে খেতমজুররা ধর্মঘট ডেকেছিলেন হুগলি জেলা জুড়ে। একই দিনে আবার দলের ‘শহিদ দিবস’-এর সমর্থনে মিছিল ও সভার সিদ্ধান্ত নেয় তৃণমূল। এ নিয়ে গ্রামে উত্তেজনা ছিলই। সিপিএম সমর্থক বেশ কিছু গ্রামবাসীর মধ্যে মিছিলের জন্য তৃণমূলের পুলিশের অনুমতি পাওয়া নিয়ে ক্ষোভ সৃষ্টি হয়। পুলিশি ব্যবস্থা নিয়েও তাঁরা প্রশ্ন তোলেন। বিষয়টি মহকুমাশাসক অরিন্দম নিয়োগীর নজরেও আনা হয়।
বেলা ১০টা নাগাদ নকুণ্ডার হাটতলায় জড়ো হন তৃণমূল নেতা-কর্মীরা। সাড়ে ১০টা নাগাদ মিছিল শুরু হয়। গোটা গ্রাম পরিক্রমা করে ফের সাড়ে ১১টা নাগাদ হাটতলায় ফিরে তৃণমূল নেতারা পথসভা শুরু করেন। মিনিট দশেক পরেই হাটতলা সংলগ্ন দিঘিরপাড়া থেকে সিপিএম সমর্থক জনা চল্লিশ মহিলা লাঠি, কাটারি, টাঙ্গি নিয়ে বেরিয়ে এসে সেখানে চড়াও হন বলে অভিযোগ। টাঙ্গির কোপে মাথায় চোট পান ওই গ্রামেরই তৃণমূল নেতা ভোলানাথ মণ্ডল। তাঁকে উদ্ধার করতে গিয়ে স্থানীয় সুনিয়া গ্রামের তৃণমূল নেতা নারায়ণ পাঁজাও আক্রান্ত হন। তাঁর ডান হাতের কব্জিতে কোপ পড়ে। আহত হন আরও কয়েক জন তৃণমূল কর্মী-সমর্থক। পুলিশ গিয়ে পরিস্থিতি সামাল দেয়।
তৃণমূল নেতা প্রদীপ রায় বলেন, “আমি সকলের শেষে বক্তৃতা দিচ্ছিলাম। মহিলাদের পিছনে সিপিএমের নেতা-কর্মীরাও ছিলেন। মহিলারা এসে এলোপাথাড়ি কোপ মারতে থাকেন। যে যাঁর মতো পালানোর চেষ্টা করি।”
সিপিএমের অভিযোগ, ওই সভার আগে মিছিলের সময়ে তৃণমূল যথেচ্ছ হামলা করেছে। প্রথমেই তারা সিপিএমের লোকাল কমিটির সম্পাদক তরুণকান্তি ঘোষের বাড়ির গেট ভাঙার চেষ্টা করে। বাড়ির মহিলারা প্রতিবাদ করতে বের হলে কটূক্তি করা হয়। পূর্ব দাসপাড়ায় ঢুকেও মিছিল থেকে সিপিএম কর্মী-সমর্থকদের হুমকি দেওয়া হয় বলে অভিযোগ। শেষে দিঘিরপাড়ায় ঢুকে সিপিএমের সক্রিয় কর্মী চিত্তরঞ্জন বাগ এবং কুণাল সিংহকে ঘরে ঢুকে মারধর করা হয় বলে অভিযোগ। তৃণমূল অভিযোগ মানেনি।
তৃণমূলের হুগলি জেলা সভাপতি তপন দাশগুপ্ত বলেন, “সিপিএম পরিকল্পিত ভাবে হামলার মিথ্যা অভিযোগ তুলে আমরাদের কর্মীদের মেরেছে। পুলিশ নিরপেক্ষ ভাবে তদন্ত করে ব্যবস্থা নিক।” সিপিএমের গোঘাট জোনাল কমিটির সম্পাদক অরুণ পাত্র বলেন, “মিছিলের নামে আমাদের কর্মী-সমর্থকদের উপরে হামলা করল তৃণমূল। বারবার এ রকম ঘটনা ঘটছে। আর কত সংযত থাকবেন মানুষ? মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নেতৃত্বে গণতন্ত্র কেমন প্রতিষ্ঠা হয়েছে, তা মানুষ টের পাচ্ছেন।” থানায় অভিযোগ দায়ের না করা প্রসঙ্গে অরুণবাবু বলেন, “আমাদের পক্ষে যিনি অভিযোগ করতে যান, তাঁকেই গ্রেফতার করা হয়েছে, এমন নজির থাকায় মানুষ থানায় যেতে ভয় পাচ্ছেন। তবে, দলের সংশ্লিষ্ট অঞ্চল কমিটির পক্ষে অভিযোগ জানানো হবে।” মহকুমাশাসক অরিন্দম নিয়োগী জানান, সকাল থেকেই গ্রামে পুলিশ মোতায়েন ছিল। তবে, পুলিশকর্মী সংখ্যায় কম থাকার কথা তিনি মেনে নিয়েছেন।

— নিজস্ব চিত্র।



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.