বখরা নিয়ে দুষ্কৃতীদের অস্ত্র দিচ্ছে মাওবাদীরা |
আদর্শের বালাই আর নেই। পেশাদার অপরাধীদের সঙ্গে আঁতাঁত গড়ে মাওবাদীরা এখন দেদার আগ্নেয়াস্ত্র সরবরাহ করছে দুষ্কৃতীদের। বিনিময়ে নিচ্ছে লুঠের বখরা। মাওবাদীদের সম্পর্কে হালে এমনটাই অভিমত বিহার পুলিশের।
রাজ্য পুলিশের কর্তাদের দাবি, রাজনৈতিক ‘আদর্শ’ সামনে রেখে এত দিন মানুষ খুনের রাজনীতি করে এসেছে মাওবাদীরা। কিন্তু সম্প্রতি একটি ডাকাতির ঘটনায় তদন্তের সূত্রে রাজ্যে পেশাদার অপরাধীদের সঙ্গে মাওবাদী সংগঠনের যোগসাজসের বিষয়টি ফাঁস হয়ে গিয়েছে। পুলিশের বক্তব্য, আদর্শ জলাঞ্জলি দিয়ে মাওবাদীরাও এখন সাধারণ অপরাধীদের বৃত্তে ঢুকে পড়ছে।
বিহার পুলিশের হালে এই অভিজ্ঞতা হয়েছে নেপাল সীমান্ত ঘেঁষা সীতামঢ়ী জেলায় ডাকাতির তদন্তে নেমে। নেপাল থেকে এসে দুষ্কৃতীরা স্থানীয় অপরাধীদের সঙ্গে হাত মিলিয়ে এখানে পরের পর অপরাধ ঘটিয়ে যাচ্ছে। গত তিন মাসে এই জেলার বিভিন্ন অংশে ১৫টি ডাকাতি হয়েছে। এই সব ঘটনায় লুঠ হয়েছে অন্তত ২৫ লক্ষ টাকা। এমনই এক ডাকাতির ঘটনায় সীতামঢ়ীর পুপারিতে পুলিশের হাতে ধরা পড়ে চন্দেশ্বর সিংহ ওরফে ছোটেলাল নামে এক দুষ্কৃতী। সে দু’টি ডাকাতির ঘটনায় অভিযুক্ত। পুলিশের দাবি, জেরায় চন্দেশ্বর কবুল করেছে, মার্চ মাসে পুপারিতে এক জীবনবিমা কর্মীর বাড়িতে সে নিজেই দলবল নিয়ে ডাকাতি করেছে। তার দলের সাত জন সীতামঢ়ী এবং পাশ্ববর্তী জেলা শিউহরের বাসিন্দা। ডাকাতির জন্য তাদের অস্ত্র জুগিয়েছে মাওবাদীরাই। বিনিময়ে লুঠ করা মালের একটা বড়ে অংশ তাদের হাতে তুলে দিতে হয়। প্রতিটি ক্ষেত্রেই এমন আঁতাঁতের সূত্রে মোটা অঙ্কের বখরা আদায় করে মাওবাদী জঙ্গিরা। চন্দেশ্বর জানিয়েছে, ১৪০০ টাকায় মাওবাদীদের কাছ থেকে সে একটি দেশি পিস্তল কেনে। অস্ত্রটি যার থেকে কিনেছে তার নাম মিঠু শাহ। সে শিউহরের এক মাওবাদী সংগঠনের সদস্য। পুলিশ মিঠুকে খুঁজছে। রাজ্যের এক পুলিশকর্তার মন্তব্য, “যা দেখা যাচ্ছে, তাতে তো মাওবাদীদের সঙ্গে অপরাধ জগতের লোকেদের আর ফারাক রইল না। এমন সব অপরাধে নেপথ্যে থেকে মাওবাদীরা যদি মদত দেয়, তা হলে তো পরিস্থিতি আরও ঘোরালো হয়ে উঠবে!”
সম্প্রতি সুসান্দ থানার নওয়াদি গ্রামে এবং ভাজপাট্টি থানার কাঞ্চনপুরে ডাকাতির ঘটনায় নেপালের অপরাধীরাই যে জড়িত তা-ও পুলিশকে বলেছে চন্দেশ্বর। নেপাল থেকে বিহারে অনুপ্রবেশ যে একটা বড় সমস্যা তা মুখ্যমন্ত্রী নীতীশ কুমার নেপালের প্রধানমন্ত্রীকে অনেক আগেই জানিয়েছেন। এই অনুপ্রবেশ এখন রাজ্যের পুলিশ কর্তাদেরও মাথাব্যথার কারণ। চন্দেশ্বরের দেওয়া তথ্য সেই দুশ্চিন্তা আরও বাড়াল। |