বিমানবন্দর উন্নয়ন ফি (এয়ারপোর্ট ডেভেলপমেন্ট ফি, সংক্ষেপে এডিএফ) হিসেবে গত দেড় বছর ধরেই যাত্রীদের কাছ থেকে কর আদায় করছেন দিল্লি আর্ন্তজাতিক বিমানবন্দর কর্তৃপক্ষ (ডায়াল)। আজ সেই করকেই ‘অযৌক্তিক’ বলল সুপ্রিম কোর্ট। একই সঙ্গে শীর্ষ আদালতের পরামর্শ, মধ্যবিত্তদের পকেট বাঁচাতে এ বার থেকে যেন ভিআইপি যাত্রীদের কাছ থেকে বেশি পরিমাণ এডিএফ আদায় করা হয়।
বিচারপতি ডি কে জৈন এবং মদন বি লোকুরের ডিভিশন বেঞ্চ জানিয়েছে, বহু বিদেশি বিমানবন্দরেই লাউঞ্জ ব্যবহার করায় ভিআইপিদের কাছ থেকে মোটা অঙ্কের অর্থ আদায় করা হয়। বিচারপতিরা বলেন, “আমরা কি এতই দুর্বল? নিজের দেশের যাত্রীদের উপর বোঝা বাড়ানোর পরিবর্তে আমরা কি বিদেশি ভিআইপি যাত্রীদের কাছ থেকে লাউঞ্জ ব্যবহার বাবদ মোটা অঙ্কের টাকা আদায় করতে পারি না?” তাঁদের বক্তব্য, ভারতীয় ভিআইপি যাত্রীদের যদি লন্ডনে কয়েকশো পাউন্ড এডিএফ দিতে হয়, সে ক্ষেত্রে বিদেশি ভিআইপি যাত্রীদের কাছ থেকেই বা কেন বেশি পরিমাণ টাকা আদায় করা হবে না?
দিল্লি, মুম্বই, হায়দরাবাদ ও বেঙ্গালুরু দেশের এই চার প্রধান বিমানবন্দরের নিয়ন্ত্রণ বেসরকারি হাতে চলে যাওয়ার পর থেকেই সেখানকার যাত্রীদের কাছ থেকে লাগামছাড়া এডিএফ আদায়ের অভিযোগ উঠেছে বারবার। ডায়াল সূত্রে খবর, বর্তমানে দিল্লির ইন্দিরা গাঁধী আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে অর্ন্তদেশীয় উড়ানের যাত্রীদের কাছ থেকে ২০০ টাকা ও আর্ন্তজাতিক উড়ানের যাত্রীদের কাছ থেকে ১৩০০ টাকা এডিএফ আদায় করা হয়। যার ফলে বেড়ে যায় বিমানভাড়া। বিষয়টি নিয়ে সম্প্রতি কেন্দ্রীয় বিমান মন্ত্রকের অধীনস্থ বিমানবন্দর আর্থিক রেগুলেটরি কর্তৃপক্ষের (এয়ারপোর্ট ইকনমিক রেগুলেটরি অথরিটি) বিশেষ আদালতে আবেদন জানিয়েছিল একটি সমাজসেবী সংস্থা। কিন্তু সেখানে আবেদন খারিজ হয়ে যাওয়ায় সুপ্রিম কোর্টে যায় সংস্থাটি। আজ সেই মামলারই শুনানিতে ওই মন্তব্য করেছে শীর্ষ আদালত।
বিষয়টিতে ডায়ালের ভূমিকা নিয়েও এ দিন ক্ষোভ প্রকাশ করে সুপ্রিম কোর্ট। এডিএফ হিসেবে আদায় হওয়া অর্থ যাতে বিমানবন্দর উন্নয়ন খাতেই ব্যবহৃত হয়, তা নিশ্চিত
করতে ডায়ালকে ওই অর্থ এয়ারপোর্ট অথরিটি অফ ইন্ডিয়ার কাছে জমা রাখার নির্দেশ দিয়েছে সুপ্রিম কোর্ট। যদিও আজকের শুনানিতে মামলাটির কোনও নিষ্পত্তি হয়নি। বরং
সেটিকে আবার এইআরএ-র বিশেষ আদালতেই ফেরত পাঠানোর পক্ষপাতী ডিভিশন বেঞ্চ। আপাতত, সমাজসেবী সংস্থাটির আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে বিমানবন্দর কর্তৃপক্ষকে নোটিস পাঠিয়েছে শীর্ষ আদালত। তবে ডায়াল কর্তৃপক্ষের দাবি, সুপ্রিম কোর্টের নোটিসকে কোনও কড়া আইনি পদক্ষেপ হিসাবে ভাবা উচিত হবে না। এটি একটি নিয়মমাফিক আইনি নোটিস যা সমাজসেবী সংস্থাটির আবেদনের ভিত্তিতে জারি করেছে শীর্ষ আদালত। |