অটো-কাণ্ড
জামিন মহিলা-নিগ্রহে অভিযুক্ত চালকের
ক মহিলাকে মারধর এবং শ্লীলতাহানির ঘটনার কুড়ি ঘণ্টা পরেও অভিযুক্ত অটোচালককে ধরতে পারল না পুলিশ। উল্টে তাদের নাকের ডগা দিয়েই শুক্রবার আদালতে আত্মসমর্পণ করলেন সেই অটোচালক বিকাশ শাহ।
এই ঘটনায় শহরে মহিলাদের নিরাপত্তা নিয়ে প্রশ্ন ওঠার পাশাপাশি পুলিশের কর্তব্যে অবহেলার অভিযোগও উঠেছে। যদিও কলকাতা পুলিশের ডিসি (সাউথ) দেবেন্দ্রপ্রকাশ সিংহ বলেন, “ঘটনার পরেই অভিযুক্তের খোঁজে তল্লাশি চলেছে। কিন্তু খোঁজ মেলেনি। আটক করা হয় অটোটি।” কিন্তু, এ দিন সকালে অভিযুক্তের আলিপুর আদালতে যাওয়ার কথা পুলিশ জানতে পারল না কেন, সে প্রশ্নের অবশ্য উত্তর মেলেনি।
কী ঘটেছিল বৃহস্পতিবার?
পুলিশ জানায়, হরিদেবপুরের পশ্চিম পুঁটিয়ারির বাসিন্দা এক দম্পতি সন্ধ্যা সওয়া ছ’টা নাগাদ শরৎ বসু রোড দিয়ে যাচ্ছিলেন। ওই সময়ে একটি অটো তাঁদের গাড়িতে ধাক্কা মারে। এর পরেই ওই অটোচালককে আটকানোর চেষ্টা করেন দম্পতি। মহিলার অভিযোগ, ওই অটোটির চালককে আটকালে আশপাশ থেকে আরও কয়েক জন অটোচালক এসে তাঁদের লোহার শিকল দিয়ে মারধর শুরু করে। অভিযোগকারিণী তাঁর লিখিত অভিযোগে পুলিশকে জানিয়েছেন, গোলমালের সময়ে অভিযুক্ত অটোচালক পালানোর চেষ্টা করলে তিনিও অটোয় চেপে বসেন। সেই সময়ে তাঁকে নিয়ে বিকাশ নামে ওই অটোচালক বেলতলা মোটর ভেহিক্লস অফিসের কাছে পেয়ারাবাগান বস্তিতে চলে যান। বস্তিতে পৌঁছনোর পরে তিনি কোনও রকমে অন্য একটি অটোয় চেপে ফের শরৎ বসু রোডে আসেন। ওই মহিলা শুক্রবার বলেন, “বারবার বলা সত্ত্বেও ওই চালক অটো থামাননি। খুব জোরে তিনি অটো চালাতে থাকেন। আতঙ্কে দিশাহারা হয়ে গিয়েছিলাম।”
পুলিশ সূত্রের খবর, এর পরেই ঘটনাস্থলে যান ভবানীপুর থানার অফিসারেরা। সেখান থেকে মহিলা এবং তাঁর স্বামীকে প্রথমে এসএসকেএম হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে ডাক্তারি পরীক্ষার পরে ফের থানায় নিয়ে গিয়ে তাঁদের অভিযোগ লিপিবদ্ধ করা হয়। মহিলার পুরো বয়ানের ভিত্তিতে অটোচালকের বিরুদ্ধে শ্লীলতাহানি, মারধর, অবৈধ ভাবে আটক করার মামলা দায়ের করা হয়।
আইনজীবীরা জানান, এগুলি প্রত্যেকটিই জামিনযোগ্য ধারা। স্বাভাবিক ভাবে এ দিন আদালতে আত্মসমর্পণ করার পরে জামিন পান বিকাশ। তাঁর দাবি, তিনি কোনও গাড়িতে ধাক্কা মারেননি। উল্টে ওই দম্পতির গাড়িটিই তাঁর অটোতে ধাক্কা দেয়। এমনকী, ওই দম্পতি তাঁকে চড় মারেন বলেও তিনি পাল্টা অভিযোগ করেন। অভিযুক্তের আইনজীবী দিব্যেন্দু ভট্টাচার্য বলেন, “আমার মক্কেলের অটোর পিছনে ধাক্কার চিহ্ন রয়েছে। এ ক্ষেত্রে দোষ ওই দম্পতিরই। কারণ, কোনও গাড়িই পিছিয়ে গিয়ে ধাক্কা মারতে পারে না।”
কিন্তু প্রশ্ন উঠেছে, ভরসন্ধ্যায় এক দম্পতিকে মারধর এবং এক মহিলাকে অটোয় তুলে পালানোর পরেও কেন জামিনযোগ্য ধারায় মামলা করা হল?
পুলিশকর্তাদের ব্যাখ্যা, ভবানীপুর থানায় ওই মহিলার লিখিত বয়ানের ভিত্তিতেই মামলাগুলি সাজানো হয়েছে। প্রশ্ন উঠেছে, কেনই বা ওই অটোচালকের বিরুদ্ধে অপহরণের মতো গুরুতর মামলা দায়ের করল না পুলিশ। এই প্রসঙ্গে কলকাতা পুলিশের ডিসি (সাউথ) বলেন, “অপহরণ করতে গেলে কাউকে জোর করে তুলে নিয়ে যেতে হয়। কিন্তু ওই মহিলা লিখিত বয়ানে তেমন কোনও অভিযোগ করেননি। তাই অবৈধ ভাবে আটকের মামলা রুজু করা হয়েছে।”
এ বিষয়ে ডিসি (সাউথ)-র দাবি, পুরো ঘটনাটিই তাঁরা তদন্ত করে দেখছেন। বিকাশ যে অটোটি চালাচ্ছিলেন, তার আইনি কাগজপত্র রয়েছে কি না, তা-ও খতিয়ে দেখা হচ্ছে। পুলিশ সূত্রের খবর, আটক অটোটিতে কোনও কাগজ মেলেনি। তাই সেটিকে থানায় নিয়ে আসা হয়েছে। বৈধ কাগজপত্র দেখানোর পরেই তা ছাড়া হবে।
 
 
 


First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.