সভার প্রস্তুতি দেখতে বৃষ্টি মাথায় দলনেত্রী মমতা
শুক্রবার ভরসন্ধ্যায় ধর্মতলার মোড়ে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। হাতে চায়ের ভাঁড়। মুখে উদ্বেগ রাত পোহালেই শহিদ সমাবেশ। বৃষ্টি আসছে না কেন!
মমতাকে আশ্বস্ত করে অঝোরে বৃষ্টি নামল একটু পরেই। সেই বৃষ্টি উপেক্ষা করেই তাঁকে দেখতে, তাঁর সঙ্গে এক বার কথা বলতে, তাঁর ছবি তুলতে দূর-দূরান্ত থেকে আসা মানুষের ভিড় ধর্মতলায় (যান চলাচলে যাতে ব্যাঘাত না-ঘটে, সে দিকে নজর রেখেই মমতা বসেছিলেন রাস্তা ছেড়ে মঞ্চের একপাশে)। কর্মী-সমর্থক, আমজনতার ভিড়ের মধ্যেই ভিজতে ভিজতে মমতা তদারকি করলেন শেষ মুহূর্তের প্রস্তুতির। মমতা পৌঁছনোর সময় মাইক-পরীক্ষা চলছিল। দলের এক কর্মীকে ডেকে মমতা বলেও দিলেন, মাইকের শব্দের মাত্রা কতটা রাখতে হবে। সঙ্গী মন্ত্রী অরূপ বিশ্বাস, মদন মিত্র, ফিরহাদ হাকিমদের ডেকে জেনে নিলেন, ভিড় নিয়ন্ত্রণের জন্য দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মীরা কে কোথায় থাকছেন। গোটা ব্যাপার দেখে এ দিনই বিহ্বল তৃণমূলের রাজ্যসভার সাংসদ কে ডি সিংহ। যিনি এই প্রথম শহিদ সমাবেশ দেখবেন।
সভাস্থলে... ধর্মতলায় ২১শে জুলাইয়ের নির্মীয়মাণ মঞ্চে। ছবি: প্রদীপ আদক
এ দিন সন্ধ্যার মধ্যে সমাবেশ-প্রস্তুতি অনেকটাই সেরে ফেলেছিলেন তৃণমূল নেতৃত্ব। তাঁরা জানেন, এ বারের ভিড় অন্যান্য বারকে ছাপিয়ে যাবে। তবে মুখ্যমন্ত্রী নিশ্চিন্ত, “শনিবার হওয়ায় বেশির ভাগ অফিস ছুটি। ফলে সাধারণ মানুষকে ততটা ভোগান্তি পোহাতে হবে না! কাজের দিনে তো এই চত্বরেই কয়েক লক্ষ লোক আসেন।”
ঘণ্টাখানেক সভামঞ্চের তদারকি করে বাড়ি ফিরেই ফেসবুকে ২১ জুলাই নিয়ে নিজের বক্তব্য ‘আপলোড’ করেন মমতা। দীর্ঘ ‘পোস্ট’-এ ১৯৯৩ সালের ঘটনার স্মৃতি রোমন্থন করে লিখেছেন, ‘প্রতি বছর এই দিনটা এক অসহনীয় যন্ত্রণা নিয়ে আসে। এই দিনটা স্মরণীয় এবং যন্ত্রণার। প্রতি বছর এই দিনটায় আমরা বিভিন্ন গণ-আন্দোলনের শহিদদের সেলাম করি। মা-মাটি-মানুষের উদ্দেশে নিজেদের নিবেদিত করি’। ওই দিনের ঘটনার কিছু ছবিও মমতা ফেসবুকে দিয়েছেন।
কোন পথে মিছিল
তৃণমূল ক্ষমতায় আসার পর শহিদ সমাবেশ কলেবরে বেড়েছে। যেমন বেড়েছে জনজীবন অচল হওয়ার আশঙ্কা। সমাবেশের ফলে যানজট ‘যথাসম্ভব’ এড়াতে এক সপ্তাহ ধরে মুকুল রায়, সুব্রত বক্সীরা পুলিশের সঙ্গে বৈঠক করে মিছিলের পথ নির্দিষ্ট করেছেন। পার্থ চট্টোপাধ্যায় জানিয়েছেন, হাওড়া, শিয়ালদহ, শ্যামবাজার পাঁচ মাথার মোড় এবং হাজরা থেকে চারটি মিছিল আসবে ধর্মতলার মোড়ে। বেলা ১২টার মধ্যেই সব মিছিলকে সভাস্থলে পৌঁছতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। মমতার সভায় আসার কথা ১টা নাগাদ। দূরদূরান্ত থেকে আসা মানুষ যাতে মঞ্চে মমতাকে দেখতে পায়, সে জন্য ধর্মতলা চত্বর, পার্ক স্ট্রিট, বিবাদী বাগ, চিত্তরঞ্জন অ্যাভিনিউ-সহ বিভিন্ন জায়গায় জায়ান্ট স্ক্রিনের ব্যবস্থা করা হয়েছে। থাকবে ভ্রাম্যমান জায়ান্ট স্ক্রিনও।
সমাবেশ মঞ্চে শরিক কংগ্রেস নেতাদের কারও না আসারই সম্ভাবনা। এ দিন সন্ধ্যা পর্যন্ত কংগ্রেসকে আমন্ত্রণ জানানো হয়নি। মুকুল বলেন, “গত বার ব্রিগেডের সমাবেশেও কংগ্রেসকে আমন্ত্রণ জানাইনি। এই সমাবেশ দল ও সহযোগীদের মধ্যেই সীমাবদ্ধ রাখতে চাই।” সমাবেশে মোর্চাকে আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে। উত্তরবঙ্গ উন্নয়নমন্ত্রী গৌতম দেব জানান, মোর্চার দুই বিধায়ক হরকাবাহাদুর ছেত্রী এবং তিলক দেওয়ানের আসার কথা। থাকার কথা উত্তরপ্রদেশ, অরুণাচল, মণিপুর, অসমের তৃণমূল বিধায়ক ও রাজ্য সভাপতিদের। ঝাড়খণ্ড, মেঘালয়, ত্রিপুরার দলীয় নেতৃত্বদেরও। রাজ্যের তৃণমূল বিধায়ক ও সাংসদরা তো থাকবেনই। তৃণমূলের সাংসদ সংখ্যা এখন মোট ২৭। বিধায়ক ১৮৫। এত লোক মঞ্চে উঠলে তা ভেঙে পড়ার আশঙ্কা রয়েছে। তা নিয়েও চিন্তিত দলীয় নেতৃত্ব।
 
 
 


First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.