নিজস্ব সংবাদদাতা • শামুকতলা |
ভেসে গিয়েছে সেচ বাঁধ। বিঘার পর বিঘা চাষের জমি তলিয়ে যাচ্ছে নদী গর্ভে। নিশ্চিহ্ন হতে বসেছে চা বাগান ও বসতি এলাকা। তিনটি পাহাড়ি নদীর তাণ্ডবে ডুয়ার্সের কুমারগ্রাম ব্লকে বিস্তীর্ণ এলাকার কয়েক হাজার বাসিন্দার দিশেহারা অবস্থা হয়েছে। পরিস্থিতির কথা অস্বীকার করেননি সেচ দফতরের আলিপুরদুয়ারের এগজিকিউটিভ ইঞ্জিনিয়ার নির্মল বর্মন। তিনি বলেন, “কুমারগ্রাম ব্লকের কিছু এলাকায় ভাঙনের সমস্যা দেখা দিয়েছে। ওই বিপর্যয় ঠেকাতে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। কিছু এলাকায় কাজ চলছে।” স্থানীয় গ্রাম পঞ্চায়েত সূত্রে জানা গিয়েছে, দু’পাড় ভেঙে সংকোশ, রায়ডাক-১ এবং রায়ডাক-২ গিলতে বসেছে আস্ত গ্রাম। ভাঙন ভয়াবহ আকার নিয়েছে উত্তর হলদিবাড়ি মৌজার জলদাপাড়া গ্রামে। গত দু’দিনে এখানে সংকোশ নদীর গর্ভে তলিয়েছে আম কাঁঠাল সুপারি বাগান সহ ২২ বিঘা চাষের জমি। |
ভাঙন কুমারগ্রামে। ছবি: রাজু সাহা। |
এলাকার ২৫টি পরিবার ভিটেমাটি রক্ষার চিন্তায় দিশেহারা হয়েছেন। ইতিমধ্যে প্রশাসনের তরফে ৮টি পরিবার অন্যত্র সরিয়ে নেওয়ার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। এদিকে সংকোশ নদীর জলে ভেসে গিয়েছে কাঁঠালগুড়ি, জাড়াগুড়ি রিটার্নপাড়া ও ফাগুডোবা এলাকার প্রায় পাঁচশো মিটার সেচবাঁধ। রায়ডাক-২ নদী ভাঙনে আতঙ্কে দিন কাটছে ব্লকের পাগলাহাটের বোলগুড়ি ও নিউল্যান্ডস চা বাগানের নেপালি পাড়ার বাসিন্দাদের। ওই দুটি এলাকায় সেচ দফতরের প্রায় তিনশো মিটার বাঁধে ভাঙন দেখা দিয়েছে। ছোট দলদলি ও কাঞ্ছি বাজার এলাকায় প্রায় সাড়ে তিনশো মিটার সেচ বাঁধ নদীর জলে তলিয়েছে। সেচ দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, পাহাড়ে টানা বৃষ্টিপাতের ফলে মঙ্গলবার রাতে ঘোকসা নদীর জলস্তর বেড়ে যাওয়ায় প্রায় ১০০ মিটার নদীবাঁধ ক্ষতিগ্রস্থ হয়। ওই ঘটনায় তুরতুরি খণ্ড গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকার দশালিয়া লাইন ও ময়নাবাড়ি এলাকার বাসিন্দাদের মধ্যে আতঙ্কের সৃষ্টি হয়েছে। স্থানীয় বাসিন্দা ক্ষেমপ্রসাদ শর্মা বলেন, “বৃষ্টি চলতে থাকলে নদীর জল এলায় ঢুকবে।” তুরতুরি নদী ভাঙনে ক্ষতিগ্রস্ত গাড়ুখুটা এলাকার সেচবাঁধ। বাঁধ দ্রুত মেরামতের দাবি উঠেছে। শামুকতলা পঞ্চায়েতের উপপ্রধান সুকুমার ঘোষ বলেন, “সেচবাঁধের সাহায্যে নদীর জল আটকে প্রায় একশো একর জমিতে সেচের জল দেওয়া হত। বাঁধ ভেঙে যাওয়ায় চাষি সমস্যার পড়বে।” |