পাহাড় ডুয়ার্সে ফের ভারী বর্ষা, হাঁটু-জল
বুধবার বিকাল থেকে পাহাড় ও সমতলে টানা ভারী বর্ষণের জেরে ডুয়ার্সের বিস্তীর্ণ এলাকা জলবন্দি হয়েছে। নদীর জল ঢুকে প্লাবিত হয়েছে পুরসভা এলাকাও। বিভিন্ন গ্রামে হাঁটু সমান জল দাঁড়িয়েছে। ফুঁসে উঠেছে ছোটবড় বিভিন্ন নদী। চাষের মাঠ নদীর চেহারা নিয়েছে। কয়েক ফুট জলে তলিয়েছে ধান খেত। জলের স্রোত বইছে রাস্তার উপর দিয়ে। প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, বৃহস্পতিবার সকাল থেকে ডুয়ার্সের ধূপগুড়ি, ফালাকাটা ও ময়নাগুড়ি ব্লকে কয়েক হাজার পরিবার জলবন্দি হয়ে দিশেহারা হয়ে পড়েন। এ দিন দুপুর থেকে তাঁদের নিরাপদ এলাকায় সরানোর কাজ শুরু হয়। ময়নাগুড়ির রামসাই গ্রাম পঞ্চায়েতের কাশিয়াবাড়ি গ্রাম জলঢাকা নদীর জলে প্লাবিত হয়েছে। এখানে জলবন্দি হয় অন্তত তিনশো পরিবার। ডায়না নদীর জল ঢুকেছে ডোববাড়ি গ্রামে। অন্তত একশো পরিবারকে ত্রাণ শিবিরে সরানো হয়। বারোহাতি ও ইচলামারি নদীর জলে ভেসেছে চড়াইমহল ও সখেরটারি গ্রাম। আমগুড়ি গ্রাম পঞ্চায়েতের বেতগারা কলোনি এলাকা প্লাবিত হয়েছে। খাগরাবাড়ি-১ গ্রাম পঞ্চায়েত সূত্রে জানা গিয়েছে, টিবি হাসপাতাল থেকে কদমতলা পর্যন্ত এলাকার অন্তত একশো পরিবার জলবন্দি হয়। ধরলা নদীর জলে প্লাবিত হয়েছে দক্ষিণ মৌয়ামারি এলাকার কিছু অংশ। ময়নাগুড়ি শহরের বিভিন্ন পাড়ায় হাঁটু সমান জল দাঁড়িয়েছে। হাসপাতাল সংলগ্ন এলাকায় জরদা নদীর জল ঢুকেছে। ময়নাগুড়ির যুগ্ম বিডিও রাজীব দত্ত চৌধুরী বলেন, “একটানা বৃষ্টির ফলে ব্লকের বিভিন্ন এলাকা প্লাবিত হয়েছে। কিছু এলাকায় নদীর জল ঢুকেছে। গ্রাম পঞ্চায়েতগুলিকে সতর্ক করা হয়েছে। প্রয়োজনে ত্রাণ শিবির খোলার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।” একই পরিস্থিতি ফালাকাটা ও ধূপগুড়ি ব্লকের। এ দিন সকালে বিরকিটি ও মুজনাই নদীর জলে প্লাবিত হয়েছে ফালাকাটার গুয়াবরনগর, জটেশ্বর সহ কয়েকটি গ্রাম পঞ্চায়েতের বিভিন্ন এলাকা। গুয়াবরনগর গ্রাম পঞ্চায়েতের অন্তত দুশো বাড়ি জলবন্দি হয়েছে। জটেশ্বর গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকায় হাঁটু সমান জল দাঁড়িয়েছে। কয়েকটি নদী পাড় ভাঙনে আতঙ্কিত বাসিন্দারা দিশেহারা হয়ে পড়েন। বৃষ্টির জলে প্লাবিত হয়েছে বিন্নাগুড়ির নেতাজিপাড়া এলাকায়। বিপর্যস্ত হয় ধূপগুড়ি ব্লকের স্বভাবিক জনজীবন। সকাল থেকে জলে ভাসতে শুরু করে শহরের বিস্তীর্ণ এলাকা। পুরসভার ৩, ৪, ১০, ১১ এবং ৫ নম্বর ওয়ার্ড জলবন্দি হয়। বাড়িতে হাঁটু সমান জল দাঁড়ায়। কুমলাই নদীর জল ঢুকে প্লাবিত হয় পুরসভার ১৪ নম্বর ওয়ার্ড। পুরসভা সূত্রে জানা গিয়েছে, অন্তত ১ হাজার পরিবার জল বন্দি হয়েছে। এলাকায় শুকনো খাবার ও পলিথিন বিলির কাজ শুরু হয়েছে। পুরসভার ভাইস চেয়ারম্যান অরূপ দে বলেন, “বিগত পুর কর্তৃপক্ষ পরিকল্পনা ছাড়া নিকাশি তৈরি করায় শহর বেহাল। শহরে ত্রাণ শিবির খোলার পরিকল্পনা হয়েছে।” এ দিকে পাহাড়ি বিরকিটি নদীর জলের তোড়ে ২০ মিটার কালভার্ট ভেঙে বিচ্ছিন্ন ফালাকাটা থানা এলাকার তাসাটি চা বাগানের চারটি শ্রমিক বস্তি। অন্তত দু’হাজার শ্রমিক জলবন্দি। বাগান ম্যানেজার জেপি শর্মা বলেন, “সেতু ভেঙে বাগানে ক্ষতি হয়েছে।” তিস্তা নদীর জলস্তর বেড়ে চলায় গজলডোবা ব্যারেজ থেকে বৃহস্পতিবার দুপুর পর্যন্ত ১ লক্ষ ৪২ হাজার কিউসেক জল ছাড়া হয়েছে। গত পাঁচ বছরে যা রের্কড।
লাল সঙ্কেত

তিস্তা (অসংরক্ষিত এলাকা), মুজনাই, ফুলহার
সর্তকতা

দোমহনি, ময়নাগুড়ি, মালবাজারের ক্রান্তি এলাকা, জলপাইগুড়ি সদর, কোচবিহারের মেখলিগঞ্জ মহকুমা, মাদারিহাট, ফালাকাটা, জটেশ্বর, মালদহের রতুয়া ১/২, হরিশ্চন্দ্রপুর ১/২ ব্লক।
হলুদ সঙ্কেত

জলঢাকা, তোর্সা, তিস্তা সংরক্ষিত এলাকা, মানসাই, ফুলহার
সতর্কতা

ধূপগুড়ির গধেয়ারকুঠি, মাথাভাঙা, ডুয়ার্সের জয়গাঁ, হাসিমারা, কোচবিহার সদর, মেখলিগঞ্জের নিজতরফ, কুচলিবাড়ি, মাথাভাঙা, মালদহের রতুয়া ১/২, হরিশ্চন্দ্রপুর ১/২ ব্লক।
২৪ ঘণ্টায় বৃষ্টিপাত

গজলডোবা ২৬৬, হাসিমারা ১৮৪, কুমারগ্রাম ১৮০, সেবক ১৭৯, আলিপুরদুয়ার ১৭৬, শিলিগুড়ি ১৭১, দার্জিলিং ১৫২, বারোবিসা ১৪৩, বাগরাকোট ১৩২, দোমহনি ১৩২, মূর্তি ১২৫, সুখিয়াপখরি ১০০, গ্যাংটক ১০০, সিমলাবাজার ৮০, মঙ্গন ৭০, ডাংথান ৬৫, কোচবিহার ১৫.০৬, তুফানগঞ্জ ২৬.০৬, মালদহ ১১.৭৯ মিমি।



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.