অন্য কাজে চাষের জমি না-দিতে সওয়াল মন্ত্রীর |
নিজস্ব সংবাদদাতা • কলকাতা |
প্রতিকূল প্রকৃতির বিরুদ্ধে লড়াইয়ের ‘দাওয়াই’ দিতে গিয়ে রাজ্যের জমি-নীতি নিয়ে বিতর্ক উস্কে দিলেন কৃষিমন্ত্রী রবীন্দ্রনাথ ভট্টাচার্য। তাঁর দাবি, অন্য কাজে কৃষিজমির যথেচ্ছ ব্যবহার বন্ধ করলে প্রকৃতি বিরূপ হলেও খাদ্যশস্য উৎপাদনে স্থিতাবস্থা বজায় রাখা যাবে।
উত্তরবঙ্গে বন্যা ও দক্ষিণবঙ্গে ঘাটতি বৃষ্টিতে এ বার রাজ্যে চাষে সমস্যা দেখা গিয়েছে। খাদ্যশস্য উৎপাদন নিয়ে কৃষিমন্ত্রীও চিন্তিত। বৃহস্পতিবার তিনি বলেন, প্রকৃতির খামখেয়ালিপনা প্রতিরোধের উপায় তাঁর জানা নেই। কিন্তু ফলন যাতে খুব মার না-খায়, তার দাওয়াই তাঁর জানা আছে। সেটা কী?
মন্ত্রীর বক্তব্য, বিভিন্ন কাজে যত্রতত্র কৃষিজমি নেওয়া যাবে না। তাঁর ব্যাখ্যা: ইতিমধ্যে রাজ্যে বহু কৃষিজমির চরিত্র বদল হয়ে গিয়েছে। ফলে কৃষিজমির পরিমাণ কমেছে। তাই প্রকৃতি প্রতিকূল হলেই খাদ্য-সঙ্কটের আশঙ্কা। চাষের জমি বেশি থাকলে তা হতো না বলে কৃষিমন্ত্রীর দাবি।
আর এ প্রসঙ্গেই কৃষি বনাম শিল্পের পুরনো বিতর্ক মাথা চাড়া দিচ্ছে বলে মনে করছে প্রশাসনিক মহলের একাংশ। নতুন সরকারের নীতি হল, শিল্পের জন্য রাজ্য জমি অধিগ্রহণ করবে না। লগ্নিকারীকে তা সরাসরি কিনতে হবে মালিকদের থেকে। এবং সে ক্ষেত্রেও শিল্পোদ্যোগীদের নজর যাতে চাষের জমিতে না-পড়ে, কৃষিমন্ত্রী পরোক্ষে সেই সওয়ালই করেছেন বলে মনে করা হচ্ছে। রবীন্দ্রনাথবাবু এ-ও বলেন, “মানুষকে আগে খাদ্যের নিরাপত্তা দিতে হবে। শিল্পও দরকার। তবে দক্ষিণবঙ্গের উর্বর জমিতে নয়। শিল্পস্থাপনের জন্য পুরুলিয়া-বাঁকুড়া-পশ্চিম মেদিনীপুর-বীরভূম-মুর্শিদাবাদের অনাবাদী জমি বাছাই করা উচিত।” সিঙ্গুর-আন্দোলনের প্রসঙ্গ তুলে তাঁর মন্তব্য, ‘রাজ্যের কৃষকেরা জমি রক্ষায় সচেতন। রাজ্যও চাইছে উবর্র্র জমি বাঁচিয়ে কৃষি উৎপাদন ধরে রাখতে ও বাড়াতে।”
কৃষিমন্ত্রী বলেন, এ বছর ধান উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা ১ কোটি ৬২ লক্ষ টন। তাঁর আশা, দক্ষিণবঙ্গে দেরিতে হলেও বর্ষা নামবে। আমন চাষ পুরোমাত্রায় হবে। ভয় উত্তরবঙ্গ নিয়ে। বস্তুত বুধবার রাতভর বৃষ্টিতে উত্তরবঙ্গে কোচবিহার-জলপাইগুড়িতে নতুন করে বন্যা পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে। বুধবার থেকে দক্ষিণবঙ্গেও অবশ্য ভাল বৃষ্টি চলছে। যদিও আবহবিদদের অনুমান, এই দফার বৃষ্টিতে দক্ষিণবঙ্গের ঘাটতি আদৌ মিটবে না। |