কলেজে প্রথম বর্ষে ছাত্র ভর্তি সমস্যা পুরুলিয়া জেলায় তীব্র হয়ে উঠেছে। দশ শতাংশ আসন বৃদ্ধির সরকারি নির্দেশের পরে ভর্তি নিয়ে সমস্যা কাটেনি বলে বিভিন্ন ছাত্র সংগঠন অভিযোগ তুলেছেন। ছাত্র ভর্তি করানোর দাবিতে ইতিমধ্যে কাশীপুরের মাইকেল মধুসূদন মহাবিদ্যালয়ে ক্লাস বয়কট শুরু করেছে এসএফআই ও ছাত্র পরিষদ। এই পরিস্থিতিতে কাল শনিবার জেলার বিভিন্ন কলেজের অধ্যক্ষদের নিয়ে বৈঠকে বসতে চলেছেন সিদো-কানহু-বীরসা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য শমিতা মান্না।
পুরুলিয়া জেলায় এখন ১৯টি কলেজ চালু রয়েছে। গত কয়েক বছরে বেশ কয়েকটি কলেজ চালু হলেও বেশির ভাগই জঙ্গলমহল এলাকায় চালু হয়েছে। তাতে শহরাঞ্চলের কলেজগুলিতে ছাত্র ভর্তির সমস্যা বিশেষ কমেনি। যোগাযোগ ব্যবস্থা সুবিধার জন্য শহরাঞ্চলের কলেজগুলিতে আগের মতোই ভিড় রয়েছে। ছাত্র সংগঠনগুলি দাবি, এ বার কলেজে ভতির সমস্যা যে পর্যায়ে পৌঁছেছে, অতীতে এ রকম পরিস্থিতির উদ্ভব হয়নি। বস্তুত দু’টি কারণে ছাত্র ভর্তি নিয়ে সমস্যা হচ্ছে বলে বিশ্ববিদ্যালয় সূত্রের খবর। প্রথমত গত বারের তুলনায় এ বার উচ্চমাধ্যমিকে জেলায় উত্তীর্ণের হার বেশি। দ্বিতীয়ত বেশিরভাগ ছাত্রছাত্রীই শহরের কলেজগুলি ভর্তি হতে চাইছেন। ফলে ওই সব কলেজে ছাত্র-ভর্তি সমস্যা তীব্র হয়ে উঠেছে। ইতিমধ্যেই কিছু কলেজ প্রথম বর্ষে আসন সংখ্যা বৃদ্ধির জন্য তাদের কাছে আবেদন করেছেন। কাশীপুর কলেজে ক্লাস বয়কট যেমন চলছে, তেমনি রঘুনাথপুরের মহকুমাশাসককে এই সমস্যা মেটানোর জন্য স্মারকলিপি দিয়েছে ডিএসও।
ছাত্র সংগঠনগুলির দাবি, ছাত্রছাত্রীদের তাঁদের কাছাকাছি কলেজে ভর্তি হওয়ার সুযোগ দিতে হবে। তৃণমূল ছাত্র পরিষদের জেলা সভাপতি গৌতম রায় বলেন, “সংগঠনগত ভাবে আমরা ইতিমধ্যেই বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষকে জানিয়েছি ভর্তি হতে না পারা ছাত্রছাত্রীদের কাছের কলেজেই ভর্তির ব্যবস্থা করতে হবে।” ডিএসওর জেলা সভাপতি স্বদেশপ্রিয় মাহাতো বলেন, “পুরুলিয়া শহরের জে কে কলেজ, রঘুনাথপুর কলেজের মতো বড় কলেজগুলিতে মেধা তালিকা প্রকাশের পরে দেখা যাচ্ছে স্থানীয় ছাত্রেরাই ভর্তি হতে পারেননি। অপেক্ষাকৃত কম নম্বর থাকার কারনে এই সমস্যা। কিন্তু তাঁদের দূরের কলেজে পড়তে যেতে হলে অনেক সমস্যা হবে।” ছাত্র সংগঠনগুলির মতে, এই অবস্থা জেলার প্রায় অধিকাংশ কলেজেই।
বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিষ্ট্রার নচিকেতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, “শনিবার কলেজগুলির অধ্যক্ষদের নিয়ে উপাচার্য বৈঠকে বসতে চলেছেন। উচ্চমাধ্যমিকে উত্তীর্ণ হওয়ার পরে কোনও ছাত্রছাত্রী যাতে কলেজে পড়ার সুযোগ থেকে বঞ্চিত না হন, সেটা আমরা দেখছি। কিন্তু অতিরিক্ত ছাত্র ভর্তি করানোর ক্ষেত্রে কলেজগুলির পরিকাঠামো ও শিক্ষক-সংখ্যার অপ্রতুলতার সমস্যাও রয়েছে।”.এই দু’য়ের মধ্যে সামঞ্জস্য বজায় রেখে সমাধান সূত্র বের করার চেষ্টা করা হচ্ছে বলে তিনি জানান। |