অতীতে বহু নির্বাচনী বৈতরণী যিনি অক্লেশে পার করেছেন, সেই সিএবি প্রেসিডেন্ট জগমোহন ডালমিয়ার আরও একটি ‘মাস্টারস্ট্রোক’-এ এ বার সিএবি-তে অঘটন না ঘটলে কোনও পদেই নির্বাচন হচ্ছে না। মাস্টারস্ট্রোক বলতে শেষ মুহূর্তে গুরুত্বপূর্ণ হয়ে ওঠা কোষাধ্যক্ষ পদে মনোনীত করা হল বিদায়ী সচিব বিশ্বরূপ দে-কে। সচিব পদ থেকে কোষাধ্যক্ষ পদে মনোনীত হওয়ার ঘটনা অতীতে সিএবিতে ঘটেনি। বিশ্বরূপকে সেই পদে এনে ডালমিয়া এক দিকে তৈরি করলেন নতুন নজির। অন্য দিকে, কোষাধ্যক্ষ পদের যুযুধান দুই পক্ষ প্রবীর চক্রবর্তী ও জিৎ বন্দ্যোপাধ্যায়কে নির্বাচনী লড়াই থেকে সরিয়ে রাখা গেল। একই সঙ্গে মনে করা হচ্ছে, সিএবি প্রশাসনে সরকারি হস্তক্ষেপের আর সম্ভাবনা রইল না। বলা হচ্ছে, বকলমে রাজ্য সরকার যে সিএবি-তে কর্তৃত্ব জারি করতে চাইছিল, তা আটকে দেওয়া গেল। বিশ্বরূপের নাম ঘোষিত হওয়ার সিএবি-র অনেকেরই ধারণা, এর পর আর নির্বাচনের তেমন সম্ভাবনা নেই। কারণ নির্বাচন হলে কোষাধ্যক্ষ পদে বিদায়ী সচিবেরই জেতার সম্ভাবনা বেশি। কিন্তু বিশ্বরূপ নিজে কি খুশি এ ভাবে সচিব থেকে কোষাধ্যক্ষ হওয়ায়? তাঁর উত্তর, “কী আর করব? পদের দিক থেকে এটা আমার অবনতিই হল। কিন্তু সিএবি-র স্বার্থ আমাকে তো দেখতেই হবে।”
আজ শুক্রবার, মনোনয়নপত্র জমা দেওয়ার শেষ দিন। শাসকগোষ্ঠী শুক্রবারই প্যানেল জমা দিচ্ছে। এ দিন দুই সচিব, কোষাধ্যক্ষের নাম জানিয়ে দেওয়া হল। বৃহস্পতিবার সকাল থেকেই ময়দানের একটি প্রভাবশালী মহল থেকে প্রবীর চক্রবর্তীকে কোষাধ্যক্ষ করার জন্য নানা চাপ আসছিল সিএবি প্রেসিডেন্টের উপর। হুমকি আসছিল পুরোদমে নির্বাচনের। কিন্তু তাতে প্রভাবিত না হয়ে বিকেলে নিজের অফিসে প্রবীরের সঙ্গে বৈঠকে বসেন ডালমিয়া। তাঁকে বলা হয়, নির্বাচন মোটেই অভিপ্রেত নয়। প্রবীর বা নরেশ ওঝা দাঁড়ালে যা হতে পারে। শেষ পর্যন্ত বুঝিয়ে-সুঝিয়ে অনেকটাই রাজি করানো হয় প্রবীরকে। এবং কোষাধ্যক্ষ পদে প্রার্থী হিসেবে ঠিক করা হয় বিশ্বরূপ দে-র নাম। যা তাঁর মাস্টারস্ট্রোক বলে মেনে নিতে আপত্তি নেই সিএবি প্রেসিডেন্টের। “মাস্টারস্ট্রোক বলতে পারেন। আবার চাইলে অন্য কিছুও বলতে পারেন,” বলছেন ডালমিয়া। পাশাপাশি তিনি জানাচ্ছেন, প্রেসিডেন্ট পদ থেকে কোষাধ্যক্ষ হওয়া নতুন নয়। ভারতীয় বোর্ডে এমন নজির রয়েছে। এ বার সিএবি-তেও সেটা আমদানি হল। রাত পর্যন্ত যা খবর, ক্ষমতা বাড়িয়ে প্রবীরকে সহ-সচিবের পদ দেওয়া হবে। দুই যুগ্ম-সচিব হচ্ছেন সুজন মুখোপাধ্যায় ও সুবীর গঙ্গোপাধ্যায়। চার ভাইস প্রেসিডেন্ট —অলোক নন্দী, শম্ভুনাথ পোদ্দার, মলয় বসু এবং সুভাষ কুণ্ডু। একই সঙ্গে এ দিন আবার জেলাশাসকদের চিঠি নিয়ে উদ্ভুত নতুন বিতর্কের পরিপ্রেক্ষিতে আটটি জেলাশাসককে চিঠি পাঠিয়ে সিএবি জানিয়ে দিল, সংস্থার সংবিধানে দ্বিতীয় বার মনোনয়নপত্র পাঠানোর নিয়ম নেই। তাই নতুন করে কিছু করা হচ্ছে না। এখনও জবাব কিছু আসেনি। |